হিলফুল ফুজুল এর কার্যক্রম কি ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম কি ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম কি ছিল টি।
হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম কি ছিল |
উত্তর : ভূমিকা : হিলফুল ফুজুল অর্থ শান্তিসংঘ। ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে আরব সমাজ ছিল অন্যায়, অত্যাচার, লুটতরাজ ইত্যাদি অপরাধ ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত। হয়রত মুহাম্মদ (সা.) আরব সমাজের এ অধঃপতন দেখে বিচলিত হন এবং সমাজ থেকে এই আত্মঘাতী বিপর্যয়ের মূলোৎপাটন করার জন্য 'হিলফুল ফুজুল' গঠন করেন। ফজল, ফাজেল, ফজায়েল ও মুফাজ্জল ছিলেন এ সংঘের ৪ জন বিশিষ্ট সদস্য। তাদের নাম থেকেই হিলফুল ফুজুল নামের উৎপত্তি।
→ হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম : নিম্নে হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম আলোচনা করা হলো :
১. শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা : হিলফুল ফুজুলের অন্যতম উদ্দেশ্য বা কার্যক্রম ছিল অস্থিতিশীল আরবে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা। তৎকালীন আরবে উকাজ মেলায় জুয়াখেলা, ঘোড়দৌড় ও কাব্য প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে কুরাইশ ও কায়েস গোত্রের মধ্যে যে যুদ্ধবাধে তা পাঁচ বছর দীর্ঘস্থায়ী হয়। এ যুদ্ধের ফলে আরবের জনজীবনে বিশৃঙ্খলা নেমে আসে এতে বহুমানুষ প্রাণ হারায়। তাই আরবের জনজীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে 'হিলফু ফুজুল' গঠন করা হয়।
২. অত্যাচারীকে প্রতিরোধ, দুর্বল ও অসহায়কে সাহায্য প্রদান : হরবুল-ফুজ্জার যুদ্ধের ফলে দুর্বল, অসহায় ও গরিবদের উপর সবল ও ধনীদের অত্যাচার অধিক হারে বৃদ্ধি পায়। তখন কার সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত মক্কার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ছিল না। এজন্য অত্যাচারীকে প্রতিরোধ দুর্বল এবং অসহায়দের সাহায্য করার উদ্দেশ্য হিলফুল ফুজুল গঠন করা হয়।
৩. জালিমদের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা : হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম ছিল মজলুম জনগণকে জালিমদের হাত থেকে রক্ষা করা। প্রাক-ইসলামি যুগে আরবরা গোত্রপতিকে খুবই শ্রদ্ধা করতো। গোত্রপতির দেওয়া যেকোনো অন্যায় আদেশকেও তারা মাথা পেতে নিতো সাধারণ জনগণের এরূপ শ্রদ্ধা-ভক্তির ফলে গোত্রপতি ও নেতৃস্থানীয় লোকজন তাদের উপর নানান প্রকার জুলুম করতো। তাই এই জালিমদের হাত থেকে মজলুমদেরকে রক্ষা করার জন্য হিলফুল ফুজুল গঠন করা হয়।
৪. গোত্রসমূহের মধ্যে যুদ্ধের পরিবর্তে সম্প্রীতি স্থাপন : আরব গোত্রসমূহের মাঝে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা, মদ, জুয়া, নারী ও অন্যান্য কারণে সর্বদা বিরোধ লেগেই থাকতো। অনেক সময় অহেতুক কারণে বছরের পর বছর গোত্রসমূহের মাঝে যুদ্ধ লেগে থাকতে। তাই আরবের গোত্রসমূহের মধ্যে সকল প্রকার অন্যায় ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করে সম্প্রীতি স্থাপনের উদ্দেশ্যে এ শান্তিসংঘ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৫. বিদেশিদের রক্ষা : হিলফুল ফুজুলের আরেকটি কার্যক্রম ছিল বিদেশিদের ধন, প্রাণ ও মান-সম্ভ্রম রক্ষা। ষষ্ঠ শতকের শেষের দিকে মক্কা, তায়েফ প্রভৃতি স্থানে বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে উঠে। | কিন্তু এসব স্থানে আগত বণিকগণ নানা হয়রানির শিকার হয়। এ সময় দস্যু ও যাযাবররা বণিকদের মালামাল লুট করতো। তাই বিদেশিদের ধন, প্রাণ ও মান ইজ্জত রক্ষা করার জন্য যথাসাদ্য চেষ্টা করা ছিল এ শান্তিসংঘ গঠনের অন্যতম কর্মসূচি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হিলফুল ফুজুল ছিল হজরত মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মানবকল্যাণের প্রথম পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে তিনি সর্বপ্রথম মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করেন। হিলফুল ফুজুল এমন একটি শান্তিসংঘ যার মাধ্যমে | আমরা জীবনের প্রতিটি চলার ক্ষেত্রে আদর্শ ও অনুপ্রেরণা পাই। | ইসলাম-পূর্ব যুগে এবং ইসলাম পরবর্তী যুগে আরব সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিবদমান আরব গোত্রগুলোর বিরোধ নিরসন এবং প্রাক-ইসলামি যুগের রক্তপাত বন্ধে হিলফুল ফুজুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ হিলফুল ফুজুল এর কার্যক্রম কি ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম হিলফুল ফুজুলের কার্যক্রম কি ছিল টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।