১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা কর ।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা কর |
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা কর
- অথবা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার গুরুত্ব কি ছিল
উত্তর : ভূমিকা : পৃথিবীতে বহু দেশে যুদ্ধ হয়েছে, সে দেশ স্বাধীন হয়েছে। বিশ্বের মানচিত্রে জায়গা করার পাশাপাশি অনেক দেশ ইতিহাসেও স্থান করে নিয়েছে।
তবে পৃথিবীতে দুটি দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ হয়েছে। একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং অন্যটি বাংলাদেশে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা ছিল। এদেশের মুক্তিসংগ্রামের মাইলফলক ও প্রেরণার উৎস।
বিভিন্ন সময়ে একাধিক ব্যক্তি কর্তৃক স্বাধীনতার বাণী প্রচার হলেও তাদের বিষয়বস্তু ও নির্দেশনা ছিল একই। তাই বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব অপরিসীম।
→ স্বাধীনতা ঘোষণার গুরুত্ব : প্রত্যক্ষ যুদ্ধ শুরুর পরিপ্রেক্ষিতে শেখ মুজিব কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার গুরুত্ব অপরিসীম। নিচে স্বাধীনতা ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা করা হলো :
১. সশস্ত্র প্রতিরোধের সূচনা : স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারিত হওয়ার পরপরই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্বতঃস্ফূর্ত সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে উঠে।
প্রথম বিদ্রোহের সূচনা হয় চট্টগ্রামে। এতে অংশগ্রহণ করেছিল ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, পুলিশ, আনসার, যুব সম্প্রদায় ও হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। ২৬ ও ২৭ মার্চ সারাদিনই রাজধানী ঢাকা শহরে পাকিস্তানি সেনাবহিনীর বিরুদ্ধে বাঙালি ছাত্র ও সৈনিকদের মধ্যে প্রকাশ্যে খণ্ডযুদ্ধ চলতে থাকে।
ঢাকা- সেনাবানিবাস থেকে বাঙালি সৈনিক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তেজগাঁও ড্রাম ফ্যাক্টরির কাছ থেকে এক বিশাল বাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ট্যাংক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যায়। ১ এপ্রিল পর্যন্ত দলটি ঢাকা শহরে সক্রিয় ছিল।
২. প্রত্যক্ষ যুদ্ধের সূচনা : তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে প্রাচীনযুগে ও মধ্যযুগে যুদ্ধের সূচনা হতো। তেমনি বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণা অনুরূপ যুদ্ধ সূচনার ক্ষেত্রে তোপধ্বনির ন্যায় কাজ করেছিল।
কেননা দেশবাসী এ ঘোষণার মধ্যদিয়ে বুঝতে পারে দেশ হানাদার বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত তাই আমাদের যুদ্ধ করে দেশকে হানাদার মুক্ত করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার পরপরই দেশে প্রত্যক্ষ যুদ্ধের সূচনা হয় এবং বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠে । তাই যুদ্ধের সূচনায় এ ঘোষণার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
৩. বিশ্ববাসীয় দৃষ্টি আকর্ষণ : বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্যদিয়ে সর্বপ্রথম বিশ্ববাসী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়টি জানতে পারে। ফলে বিশ্ববাসী বাংলাদেশ নামক দেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠে।
বিবিসি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করে। এছাড়া দি টাইমস এবং দি গার্ডিয়ান নামক বিখ্যাত পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা প্রকাশিত হয়। এর ফলে সমগ্র বিশ্ববাসী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে অবহিত হয়।
এ সময় থেকে রাশিয়া ও ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন দান করে কিন্তু আমেরিকা ও চীন স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। সর্বোপরি বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে এ ঘোষণার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
৪. সর্বাত্মক যুদ্ধের সূচনা : বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দেশের মানুষের মধ্যে টনিকের মতো কাজ করে। যে কারণে দেশের সর্বত্র বাঙালিরা দলমত নির্বিশেষে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদের নিয়ে গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে পরবর্তী নয় মাস বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিল প্রত্যক্ষ সংগ্রাম যা সর্বাত্মক যুদ্ধের মাধ্যমে রচিত হয়। আর এ সর্বাত্মক যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
৫. জনমত গঠন : জনমত গঠনে স্বাধীনতা ঘোষণার গুরুত্ব অপরীসীম। এর ফলে সমগ্র বিশ্ববাসী বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা সম্পর্কে অবহিত হয়।
এ সময় থেকে রাশিয়া ও ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন দান করে কিন্তু আমেরিকা ও চীন স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে। সর্বোপরি জনমত সৃষ্টিতে এ ঘোষণার গুরুত্ব অপরিসীম
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তা বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের সূচনালগ্নে টনিকের মতো দেশের সর্বত্র সশস্ত্র যুদ্ধের প্রতিধ্বনিরূপে বেজে উঠেছিল।
যার শব্দে বিশ্ব জনতাও বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছিল। স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমেই জনগণ সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল ।
তারা পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মতো সর্বাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়।
আর এসব সম্ভব হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার মন্ত্রে উদ্দীপ্ত হওয়ার কারণেই। তাই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার গুরুত্ব আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।