বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর | ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ কেন হয়েছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর | ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ কেন হয়েছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর | ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ কেন হয়েছিল ।
বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ কেন হয়েছিল |
বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর | ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ কেন হয়েছিল
উত্তর : ভূমিকা : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে। ঊনবিংশ শতকের | দিকে ব্রিটিশ সরকার নিবেদিত জাতীয়তাবাদকে দমনের জন্য ভেদনীতি প্রয়োগের চেষ্টা নেন। এই উদ্দেশ্যে তারা আলীগড় আন্দোলনের প্রতি সদয় মনোভাব দেখান। কিন্তু জাতীয় কংগ্রেস তার ফলে দমিত না হয়ে নিয়মতান্ত্রিক পথে আন্দোলন চালাতে থাকে। লর্ড কার্জন ভারতের বড়লাট হয়ে আসার পর জাতীয় কংগ্রেসের শান্তিপূর্ণ সমাধিদান করার সংকল্প নেন। এজন্য লর্ড কার্জন বাংলাকে বিভক্ত করার হীনচক্রান্তে লিপ্ত হয় ও ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ করে ।
→ বঙ্গভঙ্গের কারণ : ঐতিহাসিকরা বঙ্গভঙ্গের কারণ হিসেবে দুটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তারা ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তির প্রশাসনিক কারণকে বঙ্গভঙ্গের মুখ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। নিম্নে বঙ্গভঙ্গের কারণসমূহ বর্ণনা করা হলো :
১. প্রশাসনিক কারণ : রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ মনে করেন বঙ্গভঙ্গের প্রধান কারণ হলো প্রশাসনিক কারণ। লর্ড কার্জন প্রথম থেকেই তাকে প্রথম শ্রেণির প্রশাসনিক সংস্কার নামে অভিহিত করেছেন। J. R Make জোর দিয়ে বলেছেন বঙ্গভঙ্গের পিছনে প্রশাসনিক সুবিধার বিষয়টি জড়িত। কেননা বাংলা ছিল বিশাল প্রদেশ। আয়তন ছিল ১ লক্ষ ৮৯ হাজার বর্গমাইল। ফলে শাসনভার ছিল কষ্টসাধ্য। এজন্য বঙ্গভঙ্গ করা হয়।
২. কংগ্রেসের শক্তি দুর্বল : ১৮৮৫ সালে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারতীয় জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি পায়। বঙ্গভঙ্গ যখন প্রস্তাব হয় কংগ্রেস তখন থেকেই এর বিরোধিতা করেন। কার্জন বিশ্বাস করতো কলকাতায় কিছু ষড়যন্ত্রকারী তার বক্তব্য কংগ্রেসে চালাতো। কাজেই কলকাতার গুরুত্ব কমিয়ে কর্মকাণ্ডের বিকল্প কেন্দ্র উৎসাহ দিলেই দুর্বল হয়ে পড়বে।
৩. অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণ : ব্রিটিশ শাসন আমলে যত উন্নয়ন হতো সবই ভারতের রাজধানীকেন্দ্রিক। এতে রাজধানীর বাহিরের লোক বঞ্চিত হতো, এতে করে বৈষম্য হতো অনেক। এ সকল বৈষম্য দূরীকরণে বঙ্গভঙ্গ করা হয় যাতে উন্নয়ন সর্বত্র সমান হয় ।
৪. উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা : ব্রিটিশ আমলে পূর্ব বাংলার চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থা অনুন্নত ছিল। সামগ্রিকভাবে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত ছিল। তাছাড়া এ অঞ্চলের রাজস্ব নিয়ে কলকাতায় উন্নয়ন কাজ করা হতো। সুতরাং পূর্ব বাংলা অবহেলিত ছিল। এজন্য বঙ্গভঙ্গ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয় ।
৫. সরকারি চাকরিতে সমস্যা : তৎকালীন হিন্দু বর্ণের উচ্চশ্রেণিরা চাকরির ক্ষেত্রে অত্যধিক সুবিধা পেত। এক্ষেত্রে মুসলিম জনগণ বঞ্চিত হচ্ছিল। এতে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ে। এতে মুসলমানদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য বঙ্গভঙ্গ করা হয়।
৬. পাটের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্য : পূর্ব বাংলায় পাট উৎপাদন হতো বেশি কিন্তু পাটকল ছিল না। পাটকল ছিল কলকাতায় ও হুগলিতে। এজন্য চাষিরা পাটের ন্যায্য মূল্য পেত না। যার ফলে মুসলমানরা বঙ্গভঙ্গের পক্ষে ছিল। বঙ্গভঙ্গ করার পর পূর্ব বাংলার জনগণ পূর্ব বাংলার জনগণ পাটের ন্যায্যমূল্য পেত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের প্রধান কারণ ছিল প্রশাসনিক কারণ । মূলত শাসনতান্ত্রিক সুবিধা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ও হিন্দু কংগ্রেসবাদীদের প্রভাব কমানোই এর মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল। যদিও বঙ্গভঙ্গের কারণে পূর্ব বাংলার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত ও পশ্চিম বাংলা কলকাতার দ্বারা শোষিত হতো তা রোধ করা সম্ভব হয়। তবে শেষ পর্যন্ত উগ্রবাদী হিন্দুদের তীব্র আন্দোলনে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর | ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ কেন হয়েছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বঙ্গভঙ্গের কারণ ব্যাখ্যা কর | ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ কেন হয়েছিল টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।