আমাদের জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আমাদের জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আমাদের জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর ।
আমাদের জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর |
আমাদের জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর
- জাতীয় জীবনে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রভাব বর্ণনা কর।
- অথবা, জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পাকিস্তান জন্মের শুরুতেই উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করার চেষ্টা চালায়। তারা বাংলার বিষয়ে উদাসীনতা প্রদর্শন করেন। কিন্তু তারা ভুলে যান যে, বাংলা হচ্ছে পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ৫৬ ভাগ লোকের মাতৃভাষা। এ ভাষাকে বাদ দিয়ে ”কে রাষ্ট্রভাষা করা হলে তা কোনোভাবেই বাঙালিরা মেনে নেবে না। বাঙালিরা উপলব্ধি করে যে, উর্দুকে যদি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা হয় তাহলে প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সকল দিক দিয়ে তারা পিছিয়ে পড়বে। তাই তারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্যাপক গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তাছাড়াও বাঙালিরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য কোনো প্রকার অযৌক্তিক দাবি উত্থাপন করেনি। আবার উর্দু বাদ দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিও জানায়নি। তারা উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানান ।
→ রাজনৈতিক জীবনে প্রভাব : নিম্নে ভাষা আন্দোলনের রাজনৈতিক প্রভাবগুলো আলোচনা করা হলো :
১. বিরোধী ছাত্র সংগঠনের ঐক্য : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম ছাত্র সংগঠন নিলিখ পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য কলেজ সংসদ থেকে উৎখাত করার জন্য ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ,' 'পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ফেডারেশন' ও অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছাত্র সংগঠনসমূহ ‘গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট' গঠন করে। গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট ১৯৫৩ সালে ডাকসুতে জয়লাভ করে এবং ডাকসুর | সমাবর্তন অনুষ্ঠানে নব নির্বাচিত ছাত্রী প্রতিনিধি ফরিদা বারী মালিক ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি' নামক | রবীন্দ্রসঙ্গীতটি পরিবেশন করেন, যা পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে পরিণত হয়েছে।
২. বিরোধী রাজনৈতিক ঐক্য ও সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ : বিরোধী ছাত্র সংগঠনে ‘গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট'-এর সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং ছাত্রসমাজের জোর প্রচেষ্টায় ভাসানী- সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে ২১ দফার ভিত্তিতে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। ১৯৫৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট শতকরা ৯৭ ভাগ ভোট পেয়ে পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় সবকয়টি আসনে জয়লাভ করে। স্মরণীয় যে, ৫২ সালের ঘাতক মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীনকে ময়মনসিংহের নান্দাইল কেন্দ্রে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা খালেক নওয়াজ খান। মুসলিম লীগের ভরাডুবি পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীকে এ অঞ্চল সম্পর্কে নতুন করে প্রশাসনিক সাম্যের কথা চিন্তা করতে বাধ্য করে তোলে ।
৩. প্রতিবাদী ভূমিকা পালনে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি : ১৯৫৮ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জেনারেল আইয়ুব খান পাকিস্তানের সর্বময় ক্ষমতার দখলের পর পাকিস্তানের সবগুলো ভাষা লিখনের জন্য রোমান হরফ চালু, দ্রুত জাতীয় ভাষা সৃষ্টির এক ঘৃণ্য প্রচেষ্টা চালায়। ঢাকাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল হাই ও মুনীর চৌধুরীর উদ্যোগে আয়োজিত হয় এক প্রতিবাদ সভা। সে সময়ে আইয়ুব খানের প্রতাপের মুখেও প্রতিবাদী ভূমিকা পালনে তৎপর হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাত্রবৃন্দ এবং আইয়ুব খানের ষড়যন্ত্রকে বানচাল করে দেওয়া হয়। ১৯৬২ সালে সামরিক সরকার শিক্ষা সংকোচের প্রচেষ্টায় হামিদুর রহমান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের চেষ্টা করলে সংগ্রামী ছাত্র সমাজ প্রবল বিক্ষোভের সৃষ্টি করে। ঢাকায় রাজপথ রঞ্জিত হয় ওয়াজিউল্লাহ, বাবুল ও মোস্তাফিজের রক্তে। তবুও সফল হয় ছাত্র আন্দোলন এবং শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হয়ে যায়।
৪. বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান : আইয়ুব শাসন আমলে বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। তার মধ্যে ১৯৬৪ সালের ছাত্র গণআন্দোলন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কর্তৃক তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের সমাবর্তন অনুষ্ঠান বর্জন। ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ৬-দফার সপক্ষে আন্দোলন ও সরকারি দমন নীতির প্রতিবাদ এবং ছাত্রসমাজের ঐতিহাসিক ১১ দফার আন্দোলন, ১৯৬৯ সালে ছাত্র ও গণআন্দোলনের ফলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারে চাপ সৃষ্টি এবং আইয়ুব সরকার উৎখাত আন্দোলন অন্যতম। উনসত্তরেই প্রথম উচ্চারিত হয় ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ' শ্লোগান।
৫. স্বাধীনতা আন্দোলন : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই স্বাধীনতা আন্দোলন সফলতা লাভ করে। ১৯৭০ সালে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান কর্তৃক পরিচালিত সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানে একচেটিয়াভাবে আওয়ামী লীগের ছয়দফার বিজয় ঘটে। এতে প্রমাদ গুণে পাকিস্তানি শাসকশ্রেণি এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা অর্পণে তাল বাহানা শুরু করে। আরেকবার ভাষা আন্দোলনের মতো ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য নিয়ে এদেশের জনগণ আন্দোলন আরম্ভ করে। অবশেষে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ বাঙালিদের উপর সেনাবাহিনী লেলিয়ে দিলে আরম্ভ হয় স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
→ অর্থনৈতিক জীবনে প্রভাব : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালিদের অর্থনৈতিক জীবনে অনেক প্রভাব বিস্তার করে। নিম্নে অর্থনৈতিক প্রভাবগুলো আলোচনা করা হলো :
১. আঞ্চলিক সমউন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমতার দাবি : ভাষা আন্দোলনের পরেই গড়ে উঠা যুক্তফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রাদেশিক তথা আঞ্চলিক সম-উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমতা বিধানের দাবি জোরদার হয়। ১৯৫৬ ও ১৯৬২ সালে পাকিস্তানের সংবিধান প্রণয়নের প্রাক্কালে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের আর্থিক ক্ষমতা ও দায়িত্ব সুনির্দিষ্টকরণের প্রস্তাব একুশের চেতনার ফসল। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের চাপে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কতিপয় ক্ষেত্রে সমতা আনয়নের আশ্বাস প্রদান করে ।
২. শোষণের প্রতিবাদ ও ঐতিহাসিক ৬-দফা : আইয়ুব আমলে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট হয়ে উঠে। এর প্রতিবাদে এগিয়ে আসেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. মাজহারুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক রেহমান সোবহান ও অন্যান্যরা। তাঁরা বিভিন্ন ফোরামে লেখনী ও বক্তব্য দ্বারা শোষণের স্বরূপ উদ্ঘাটনের প্রচেষ্টা চালান এবং পাকিস্তানের দু'অঞ্চলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন অর্থনীতি চালু করার দাবি তোলেন। এ দাবির পটভূমিতেই গড়ে উঠে ঐতিহাসিক ৬-দফা।
৩. সংবিধানে অন্যতম মূলনীতি হিসেবে ‘সমাজতন্ত্র' গ্রহণ : ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে সমস্ত প্রকার দুঃখ-গ্লানি, অন্যায় শোষণ ও অসাম্য থেকে মুক্ত হওয়ার প্রেরণা এনে দেয়। তারই ফলশ্রুতিতে অর্থনৈতিকভাবে শোষণমুক্ত হওয়ার জন্য বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং ত্রিশ লক্ষ শহিদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে। ১৯৭২ সালের সংবিধান সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়। সংবিধানে প্রাধান্য পায় “মানুষের উপর সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে।” উল্লেখ্য যেসব নাগরিকের জীবনের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর ব্যবস্থা করা এবং সুষম উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব বলে স্থির করা হয়।
→ সাংস্কৃতিক জীবনে প্রভাব : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালি সাংস্কৃতিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। নিম্নে সাংস্কৃতিক জীবনে ভাষা আন্দোলনের প্রভাবগুলো আলোচনা করা হলো :
১. বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা ও সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠান : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের আরেকটি ধারা যুক্ত হয় সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে। ঘাতক নূরুল আমিনের সরকারি বাসভবন 'বর্ধমান হাউস'-কে 'বাংলা একাডেমি'-তে রূপান্তরিত করা হয়। যেখানে বাংলা সাহিত্যের ও বাংলা ভাষায় বিকাশের ধারা গড়ে উঠে। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র-শিক্ষক সমন্বয়ে একটি ঐতিহাসিক সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয়, যার উদ্বোধন করেন ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। এ সাহিত্য সম্মেলনেই আবহমান বাঙালি ঐতিহ্য ও চেতনার ভিত্তিতে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন পরিচালনার সুষ্ঠু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ চেতনায় ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সপ্তাহ' উদ্যাপন করা হয়। এতে বাংলা ভাষায় ‘হাজার বছরের কবিতা ও গান' সম্পর্কে বিশদ আলোচনা হয় এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূলভিত্তি বাঙালি সংস্কৃতির রূপরেখাকে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করা হয় ।
২. গণসঙ্গীতের চর্চা ও প্রসার : ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ফসল গণসঙ্গীত হতে থাকে হাটে-বাজারে, গ্রামে-গঞ্জে 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি”; “ওরা আমার মুখের ভাষা ক্যাইড়া নিতে চায়” এবং “বাংলা ভাষা আন্দোলন করলিরে বাঙালি, ঢাকা শহর রক্তে রাঙালি” প্রভৃতি গণসঙ্গীত আজও আপামর জনসাধারণের বুকের ধনে পরিণত হয়ে আছে।
৩. শহিদ মিনার ও সাংস্কৃতিক সম্মিলিত ক্ষেত্র সৃষ্টি : ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে একত্রিত করার মহান প্রেরণা ন 'শহিদ মিনার' এ যেন ঐক্যের প্রতীক। যেমন করে কবি আলাউদ্দিন 7 আল আজাদ গেয়ে উঠেন, “স্মৃতির মিনার ভেঙেছে তোমার? ভয় কি । বন্ধু আমরা এখানে চার কোটি পরিবার খাড়া রয়েছিতো, যে ভিত কখনো কোনো রাজন্য পারেনি ভাঙতে । ভাষা আন্দোলনের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের প্রতীক রূপে সৃষ্টি শহিদ মিনারটি আজ জাতীয় শহিদ মিনারের মর্যাদার ভূষিত। সে শহিদ মিনার আজ জাতীয় ঐক্য, মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনের প্রধান সম্মিলিত ক্ষেত্র রূপে পরিগণিত।
৪. ধর্ম নিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল সংস্কৃতি চর্চা : ভাষা আন্দোলন-উত্তর কালে প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ কর্মকাণ্ড প্রাধান্য লাভ করে। গণসংগীতের পাশাপাশি গণনাটকের প্রসার লক্ষ করা যায় এবং মুক্ত ও প্রগতিশীল সংস্কৃতি চর্চা আরম্ভ হয়। মুসলিম লীগের পতন ত্বরান্বিত হওয়ার ফলে ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল বিকাশ লাভ করে এবং অদ্যাবধি সেই ধর্ম নিরপেক্ষ সংস্কৃতি বিদ্যমান রয়েছে ।
উপসংহার পরিশেষে বলা যায় যে, শহিদদের আত্মত্যাগের মহিমায় স্বাক্ষর ভাষা আন্দোলন। এদেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। ভাষা আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে রচিত হয়েছে স্বাধিকার ও স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন। ভাষা শহিদদের রক্তভেজা সিঁড়ি বেয়ে অর্জিত হয়েছে লাল সবুজের পতাকা, সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের অভ্যুদয়। ২১ ফেব্রুয়ারির মাধ্যমে বাঙালি তার মাতৃভাষা ও বাকস্বাধীনতার জন্য সংগ্রামের সূচনা করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করে একুশের চেতনাকে সুসংহত করেছে। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। প্রতিবছর ২১ এসে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, এদেশের শতকরা ৩৭ ভাগ এখনও নিরক্ষর, শতকরা ৪৩.৮ ভাগ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে, গণতন্ত্র বারংবার বিপর্যস্ত হচ্ছে। একুশের চেতনাকে বুকে ধরে এখন সময় এসেছে দেশ গড়ার।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আমাদের জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আমাদের জাতীয় জীবনে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।