১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর

 আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর ।

১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর

১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর

  • লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্যসমূহ 
  • অথবা, লাহোর প্রস্তাবের প্রকৃতি বিশ্লেষণ কর। 
  • অথবা, লাহোর প্রস্তাবের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ । 
  • অথবা, লাহোর প্রস্তাবের মূল বৈশিষ্ট্য লিখ । 

উত্তর- ভূমিকা : ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে লাহোর প্রস্তাব একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের অধিবেশনে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির দাবি জানিয়ে শেরে বাংলা যে প্রস্তাব পেশ করেন তাই ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব । এ প্রস্তাবের ফলেই ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ এ. কে. ফজলুল হক কর্তৃক উত্থাপিত লাহোর প্রস্তাবের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা অগ্রহণযোগ্য : ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, এতে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ দৃঢ়তার সাথে ঘোষণা করে যে, ১৯৩৫ সালের আইনের যে সর্বভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা করা হয়েছে তা ভারতের উদ্ভূত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত অসঙ্গত ও অকার্যকর। তাই ভারতীয় মুসলমানগণের নিকট ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা অগ্রহণযোগ্য।

২. মুসলিম সম্মতি সংবলিত সংবিধান : ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে বলা হয় যে, প্রণিত সমস্ত সাংবিধানিক পরিকল্পনা নতুনভাবে বিবেচনা করতে হবে, নতুবা মুসলমানগণ অসন্তুষ্ট হবে। আর ভবিষ্যতে যে সংবিধান রচিত হবে তাতে অবশ্যই মুসলমানদের অনুমোদন ও সম্মতি থাকতে হবে। তা না হলে কোনো সংশোধিত পরিকল্পনা মুসলমানদের নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না।

৩. শাসনতান্ত্রিক পরিকল্পনার ব্যাপারে মুসলমানদের সম্মতি : লাহোর প্রস্তাবের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ভারতে মুসলমানদের সম্মতি ছাড়া কোনো শাসনতান্ত্রিক পরিকল্পনা কার্যকরী হবে না। এতে প্রয়োজনে সীমানার পুনর্বিন্যাস সাধন ও ভৌগোলিক দিক থেকে নিকটবর্তী সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোর সমন্বয় সাধনসহ ভারতের উত্তর, পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলে একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে।

৪. সংখ্যালঘুদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত : আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই প্রস্তাবে বলা হয়, নতুনভাবে গঠিত অঙ্গরাজ্যসমূহে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও শাসন সংক্রান্ত অধিকার রক্ষা করার জন্য ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধানে বিভিন্নরকম রক্ষাকবচ উল্লেখ থাকতে হবে এবং সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

৫. অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিতকরণ : লাহোর প্রস্তাবে বলা হয় যে, ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী পাশাপাশি সংলগ্ন বা সন্নিহিত স্থানসমূহকে বা এলাকাসমূহকে অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।

৬. মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোর সীমানা পরিবর্তন : ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোর জন্য প্রয়োজনে পূর্বের সীমানার পরিবর্তনের কথা বলা হয় ।

৭. মুসলমানদের জন্য একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন : লাহোর প্রস্তাবে ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে মুসলমানদের জন্য একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহ গঠনের কথা বলা হয়।

৮. স্বায়ত্তশাসিত ও স্বাধীন অঙ্গরাজ্য : লাহোর প্রস্তাবের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে বলা হয় যে, মুসলমানদের জন্য যে সকল স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হবে তাদের সকল প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্যগুলো হবে স্বায়ত্তশাসিত ও স্বাধীন।

৯. সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণ : লাহোর প্রস্তাবে বলা হয় যে, নতুনভাবে গঠিত রাষ্ট্রসমূহের বাইরে ভারতের অন্যান্য জায়গায় যেখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু থাকবে। সেখানে মুসলমানদের সাথে পরামর্শক্রমে তাদের ধর্মীয় সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অন্যান্য অধিকার এবং স্বার্থ সংবিধানে সংরক্ষণ করতে হবে।

১০. মৌলিক নীতি হিসেবে গ্রহণ : লাহোর প্রস্তাবের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে বলা হয় যে, লাহোর প্রস্তাবে যে সকল বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো পরবর্তীতে দেশের ভবিষ্যৎ সাংবিধানিক বা শাসনতান্ত্রিক পরিকল্পনার থেকে মৌলিক নীতি হিসেবে গৃহীত হবে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্যসমূহের আলোচনা থেকে এ কথা সুস্পষ্টতই প্রতীয়মান হয় যে, মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় লাহোর প্রস্তাব এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল । ভারতীয় মুসলমানগণ বিভিন্ন সময়ে হিন্দুদের দ্বারা প্রতারিত হয়ে এক উপলব্ধি করতে সচেষ্ট হন যে, পৃথক আবাসভূমি ছাড়া তাদের সামনে বিকল্প কোনো পথ নেই। মুসলমানদের এই চিন্তাধারার ফলশ্রুতিই হচ্ছে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব। লাহোর প্রস্তাবই মূলত স্বাধীন সার্বভৌম মুসলিম পাকিস্তান রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করেছিল ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর  টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।

Next Post Previous Post
1 Comments
  • Anonymous
    Anonymous 20 November

    🥰🥰🥰💝

Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ