আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি লিখ টি।
আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি লিখ |
আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি লিখ
উত্তর : ভূমিকা : ৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে আব্দুল মালিক প্রথম মারওয়ানের মৃত্যুর পর উমাইয়া সিংহাসনে আরোহণ করেন। ২০ বছর খিলাফতে আব্দুল মালিকের অবদানের শ্রেষ্ঠত্বের তিনটি দিক পরিলক্ষিত হয়।প্রথমত, বিদ্রোহ দমন করে রাজ্যে শাস্তি শৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, দ্বিতীয়ত, হৃতরাজ্য পুনর্দখল এবং তৃতীয়ত শাসনব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস ও পুনর্গঠন দ্বারা উমাইয়া প্রভুত্বকে সুদৃঢ়করণ। ঐতিহাসিক স্পুলার বলেন, “আব্দুল মালিকের রাজত্বকাল ইসলামের ইতিহাসে অভ্যন্তরীণ সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ যুগ ছিল।
→ আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ নীতি : খলিফা আব্দুল মালিকের প্রশাসন ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো প্রশাসনিক সংস্কার আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি । নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো :
১. সরকারি অফিসে আরবি ভাষার প্রবর্তন : খলিফা আব্দুল মালিক রাষ্ট্রকে আরবীয়করণ বা জাতীয়করণের এবং সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্দেশ্যে আরবিকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দান করেন। সালিহ বিন আব্দুর রহমান নামে জনৈক পারসিক মুসলমানের পরামর্শে আব্দুল মালিক সরকারি কাজে আরবি ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দেন। ফলে আঞ্চলিক ভাষাসমূহের পরিবর্তে অফিস আদালতে দলিল পত্রাদি আরবি ভাষায় রক্ষিত হওয়ার নিয়ম চালু হয় ।
২. আরবি সাহিত্যের বিকাশ : সরকারি ভাষা হিসেবে আরবি ভাষা প্রবর্তনের ফলে প্রশাসনেও আরব মুসলমানগণের প্রাধান্য বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। ফলে আরবদের মৌলিক প্রতিভা বিকাশের পথ এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্যের উন্নতির পথ সুগম হয়েছিল। এ সংস্কার সম্পূর্ণ করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন পড়ে এবং পরবর্তী খলিফা আল ওয়ালিদের আমলে তা সম্ভব হয়।
৩. আরবি বর্ণ লিপির উন্নতি : আব্দুল মালিকের রাজত্বের পূর্বে আরবি লিপির দুটি ত্রুটি পরিলক্ষিত হতো। প্রথমত এটি ব্যঞ্জনবর্ণ ছিল এবং দ্বিতীয়ত হরকত বা নোকতাবিহীন। ফলে অনারব • মুসলমানগণ আরবি পাঠ করতে বিরাট অসুবিধার সম্মুখীন হয়। আরবি ভাষার সহজতর লিখন পদ্ধতির জন্য হাজ্জাজ বিন ইউসুফের সহযোগিতায় আরবি বর্ণমালায় হরকত ও নোকতা প্রবর্তন করেন।
৪. আরবি মুদ্রার প্রচলন : খলিফা আব্দুল মালিকের আরবীয়করণের লক্ষ্যে পরবর্তী উল্লেখযোগ্য সংস্কার হলো আরবি মুদ্রার প্রচলন এর পূর্বে প্রাদেশিক শাসনকর্তাগণ স্থানীয় প্রয়োজন মিটাবার জন্য মুদ্রা তৈরি করতেন। ৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে আব্দুল মালিক খাঁটি আরবী মুদ্রা প্রবর্তন করে তিনি দেশে আরবীয় প্রভাব প্রতিষ্ঠা করেন। মুদ্রা জাল করার জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছিল ফলে তাঁর মুদ্রা সংস্কারে পূর্ণ সফলতা অর্জন করেছিল।
৫. জাতীয় টাকশাল স্থাপন : খলিফা আব্দুল মালিক খাঁটি আরবি মুদ্রা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে দামেস্কে জাতীয় টাকশাল স্থাপন করেন। যেখান হতে আরবি অক্ষরযুক্ত নির্দিষ্ট এবং সর্বজনস্বীকৃত একক মুদ্রার-দিরহাম ফানস হয়ে দেশে প্রচলিত হয়। পরবর্তি বছর ৬৯৬ খ্রিস্টাব্দে কুফায় আরো একটি টাকশাল স্থাপন করা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খলিফা আব্দুল মালিক | প্রবর্তিত আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি মুসলিম সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করেছিল। আরব জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠায় তার অবদান অপরিসীম। তার এই আরবীয়করণ নীতি ইসলামের ইতিহাসে উজ্জ্বল অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আব্দুল মালিকের আরবীয়করণ বা জাতীয়করণ নীতি লিখ টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।