বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলনের গুরুত্ব কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলনের গুরুত্ব কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলনের গুরুত্ব কি ।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলনের গুরুত্ব কি |
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলনের গুরুত্ব কি
- ছয়-দফা আন্দোলনের গুরুত্ব বর্ণনা কর ।
- অথবা, ছয়-দফা আন্দোলনের গুরুত্ব/তাৎপর্য বর্ণনা কর।
- অথবা, ৬-দফা কর্মসূচির গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠীর শাসন, শোষণ, বঞ্চনার যাঁতাকলে এদেশবাসী নিষ্পেষিত হতে হতে অবশেষে ১৯৬৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘ছয়-দফা' দাবি পেশ করেন। তিনি ছয়-দফা দাবিকে ‘পূর্ববাংলার মানুষের বাঁচার দাবি' বলে অভিহিত করেন।
→ ছয়-দফা আন্দোলনের গুরুত্ব/তাৎপর্য : বঙ্গবন্ধুর ছয়- দফা দাবি পরবর্তীতে ছয়-দফা আন্দোলনে পরিণত হয়। এ আন্দোলনের গুরুত্ব/তাৎপর্য নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. স্বাধিকার আন্দোলন : ছয়-দফা আন্দোলন ছিল বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলন। এ আন্দোলনের উপর ভিত্তি করেই জনগণ স্বাধিকার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ।
২. বাঙালির স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ : তৎকালীন সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে বাংলার জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছয়-দফার সপক্ষে মিছিল, সভা ও শোভাযাত্রা করে । ইতিপূর্বে এদেশের কোনো আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এত লোক অংশগ্রহণ করেনি এবং এত প্রাণহানিও ঘটেনি।
৩. বাঙালি জাতীয়তাবাদ সুদৃঢ় হয় : ছয়-দফা আন্দোলনের ফলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সুদৃঢ় হয় এবং ছাত্র, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সংগ্রামী ঐক্য আরও জোরদার হয়। সুতরাং বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটাতে ছয়-দফা বিষেশ ভূমিকা পালন করেছে।
৪. স্বৈরাচারী শাসকের পতন : ছয়-দফা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের দাবি। স্বৈরাচারী ও গণবিরোধী শাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এ কর্মসূচি নিরাশার আঁধার নিক্ষিপ্ত বাঙালি জাতিকে যুগিয়েছে শক্তি, যুগিয়েছে প্রেরণা।
৫. বাঙালির মুক্তিসনদ : পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, নির্যাতন ও অবিচারের বিরুদ্ধে ছয়-দফা ছিল বাঙালির মুক্তিসনদ এ প্রসঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের বক্তব্য উল্লেখ করা যায় । তিনি বলেছেন যে, ছয়-দফা বাংলার কৃষক, শ্রমিক, মজুর, মধ্যবিত্ত তথা গোটা বাঙালির মুক্তিসনদ এবং বাংলার স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার নিশ্চিত পদক্ষেপ। অতএব, বাঙালির মুক্তিসনদ হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম
৬. ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের ক্ষেত্রে : ছয়-দফা কর্মসূচি ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের এ কর্মসূচির উপর ভিত্তি করেই ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঊনসত্তরের গণআন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখে ।
৭. সত্তর-এর নির্বাচনে জয়লাভ : ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন ছয়-দফা কর্মসূচিকে আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনি মেনিফেস্টো হিসেবে দাঁড় করায়। আর এ ছয়-দফার ভিত্তিতেই গণরায় লাভ করে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, ইংল্যান্ডের গণতন্ত্রের ইতিহাসে ম্যাগনাকার্টা যেমন উজ্জ্বল, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ছয়-দফা তেমনই উজ্জ্বল । ছয়-দফাভিত্তিক আন্দোলনের সিঁড়ি বেয়েই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলনের গুরুত্ব কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলনের গুরুত্ব কি । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।