১৯৬২ সালের সংবিধান কেন ব্যর্থ হয়েছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ১৯৬২ সালের সংবিধান কেন ব্যর্থ হয়েছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ১৯৬২ সালের সংবিধান কেন ব্যর্থ হয়েছিল ।
১৯৬২ সালের সংবিধান কেন ব্যর্থ হয়েছিল |
১৯৬২ সালের সংবিধান কেন ব্যর্থ হয়েছিল
- অথবা, ১৯৬২ সালের সংবিধানের ব্যর্থতার কারণসমূহ আলোচনা কর ।
- অথবা, ১৯৬২ সালের পাকিস্তান সংবিধান ব্যর্থ হওয়ার কারণগুলো আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৬২ সালের সংবিধান বেশি দিন টিকে থাকতে পারেনি। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের কারণে আইয়ুবখান ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ ১৯৬৯ সালে ক্ষমতা দখল করে এবং ১৯৬২ সালের সংবিধান বাতিল ঘোষণা করে।
→ ১৯৬২ সালের সংবিধান ব্যর্থ হওয়ার কারণ : নিম্নে ১৯৬২ সালের সংবিধানের ব্যর্থতার কারণসমূহ বর্ণনা করা হলো :
১. গণসমর্থনের অভাব : ১৯৬২ সালের সংবিধানের প্রতি কোনো গণসমর্থন ছিল না। এ সংবিধান প্রণীত হয়েছিল প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার উদ্দেশ্যে। জাতীয় ধ্যানধারণার কোনো প্রতিফলন ও সংবিধানে ঘটেনি। ফলশ্রুতিতে এ সংবিধান ব্যর্থ হয়েছিল।
২. রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ১৯৫৬ সালের সংবিধানে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। আর সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় শাসনসংক্রান্ত সকল ক্ষমতা-প্রধানমন্ত্রীর হাতে ন্যস্ত থাকে। ১৯৬২ সালের সংবিধানে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। যা পাকিস্তানের ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে নিতান্তই অবান্তর ছিল।
৩. শাসনকার্যে পূর্ব পাকিস্তানের অনুপস্থিতি : ১৯৬২ সালের সংবিধানে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রাণের দাবি স্বায়ত্তশাসনকে অবহেলা করা হয়। সংবিধানের আলোকে এমন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয় যেখানে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব ছিল খুবই নগণ্য সংখ্যক ।
৪. মৌলিক গণতন্ত্রের প্রবর্তন : ১৯৬২ সালের সংবিধানের মাধ্যমে আইয়ুব খান মৌলিক গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেন । মৌলিক গণতন্ত্রের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয় এবং ভোটাধিকার চলে যায় মৌলিক গণতন্ত্রীদের হাতে ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণ ভোটাধিকারের দাবিতে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলে । অর্থাৎ মৌলিক গণতন্ত্র ছিল অগণতান্ত্রিক ।
৫. অর্থনৈতিক বৈষম্য : ১৯৬২ সালের সংবিধান পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে পাহাড় সমান বৈষম্যের সৃষ্টি করে সরকারের আর্থিক নীতি পশ্চিম পাকিস্তান ঘেঁষা হওয়ায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ব্যাপক অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। ফলে সংবিধান ব্যর্থতার দিকে ধাবিত হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলতে পারি যে, ১৯৬২ সালের সংবিধানে গণসমর্থন ছিল না। কারণ পাকিস্তানের ভৌগোলিক প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা একেবারেই অবান্তর ছিল । অর্থহীন মৌলিক ছিল এ সংবিধানের ব্যর্থতার কারণ ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ১৯৬২ সালের সংবিধান কেন ব্যর্থ হয়েছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ১৯৬২ সালের সংবিধান কেন ব্যর্থ হয়েছিল । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।