১১ দফা কর্মসূচি কি কি | ১১ দফা গুলো কি কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ১১ দফা কর্মসূচি কি কি | ১১ দফা গুলো কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ১১ দফা কর্মসূচি কি কি | ১১ দফা গুলো কি কি ।
১১ দফা কর্মসূচি কি কি ১১ দফা গুলো কি কি |
১১ দফা কর্মসূচি কি কি | ১১ দফা গুলো কি কি
- ছাত্রদের ১১-দফা আন্দোলনের কর্মসূচি কি ছিল?
- অথবা, ছাত্রদের বা SAC এর ১১ দফা কর্মসূচি তুলে ধর।
- অথবা, ১৯৬৯ সালের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা কর্মসূচি কি কি?
- অথবা, ১৯৬৯ সালের ছাত্রদের ১১ দফা কর্মসূচি সংক্ষেপে আলোচনা কর ।
- অথবা, ১৯৬৯ সালের ছাত্রদের ১১ দফা কর্মসূচির ৫টি দফা লেখ।
উত্তর : ভূমিকা : আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে যখন ছাত্রসমাজ নেতৃত্ব দিচ্ছিল তখন ছাত্র সমাজের উপর গুলি’ চালানো হয় স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের নির্দেশে। এতে কয়েকজন ছাত্র নিহত হয়, এতে আন্দোলন আরো বেগবান হয়। আর আন্দোলন জোরালো করতে ডাকসুর সহ-সভাপতি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত করে। এ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা দাবি | উত্থাপন করে যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রাখে ।
১১ দফা দাবি : ১৯৬৯ সালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ যে ১১ দফা দাবি উত্থাপন ও আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দেয় নিম্নে সে সম্বন্ধে আলোকপাত করা হলো :
১. বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স : হামিদুর রহমান কমিশন ও | জাতীয় শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাতিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নারী-শিক্ষার প্রসার, কারিগরি শিক্ষার প্রসার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলককরণ ।
১. (ক) যেসব কলেজ প্রাদেশিকীকরণ করা হয়েছে সেগুলোকে বেসরকারি কলেজে পুনঃরূপান্তর ।
(খ) স্কুল ও কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি ।
(গ) সরকারি কলেজসমূহে নৈশ বিভাগ প্রবর্তন।
(ঘ) শতকরা ৫০% ছাত্র বেতন হ্রাস।
(ঙ) বাংলাকে শিক্ষা, অফিস ও আদালতের কাজকর্মের মাধ্যম হিসেবে চালু করা।
(ছ) ছাত্রদের আবাসিক ব্যয়ের শতকরা ৫০% সাহায্য হিসেবে প্রদান ।
(জ) অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষার প্রবর্তন।
(ঝ) মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও মেডিকেল কাউন্সিল অর্ডিন্যান্স বাতিলকরণ।
(ঞ) পলিটেকনিক ছাত্রদের জন্য কনভেন্স ফোর্সের সুবিধা প্রদান।
(ট) ছাত্রদের ট্রেন ও বাসে ভ্রমণের সুবিধা দান ।
(ঠ) চাকরির নিশ্চয়তা বিধান ।
(ড) বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স বাতিলকরণ ও বিশ্ববিদ্যালয়স মূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদান ।
(ঢ) জাতীয় শিক্ষা কমিশন ও হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলকরণ ।
২. সর্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়া।
৩. সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা এবং একই ব্যবস্থায় দেশ রক্ষা, পররাষ্ট্র ও মুদ্রা সংক্রান্ত বিষয় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে রাখা ।
৪. পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধুসহ প্রত্যেক প্রদেশের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে দেশের পশ্চিম অংশে একটি সাব-ফেডারেশন গঠন করার ব্যবস্থা করা ।
৫. ব্যাংক, বিমা, ইনসিওরেন্স ও বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা।
৬. কৃষকের উপর থেকে খাজনা ও ট্যাক্সের বোঝা হ্রাস করা, বকেয়া খাজনা ও ঋণ মওফুক করা, সার্টিফিকেট প্রথা বাতিল করা, পাট, আখের ন্যায্যমূল্য প্রদান করা ।
৭. (ক) শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও বোনাস প্রদান করা, (খ) শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানের সুবিধা প্রদান করা। (গ) শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী সকল ধরনের নিয়মকানুন বাতিল করা । (ঘ) ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার প্রদান করা ।
৮. পূর্ব পাকিস্তানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা এবং পানি সম্পদের সার্বিক সদ্ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৯. সকল প্রকার নিরাপত্তামূলক আইন, জরুরি অবস্থা আইন, নির্যাতনমূলক আইন ও অন্যান্য নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করা।
১০. সিয়াটো (SEATO), সেন্টো (CENTO), পাকিস্তান ও মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিল করা এবং জোট বহির্ভূত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করা।
১১. তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামিসহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক সকল রাজবন্দির গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিল ঘোষণা করা।
উপসংহার : উপরিউক্ত আলোচনা শেষে বলা যায়, ১১ দফা দাবি ছিল তৎকালীন প্রগতিশীল ছাত্র সমাজের। নির্যাতন ও অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া ও ন্যায্য অধিকারের দাবিতে গঠিত হয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। এ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদই ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে। এ দাবির মাধ্যমে পূর্ববাংলার জনগণের সকল অধিকার প্রতিষ্ঠা করার নীতিমালা সংযোজিত ছিল । ১১ দফা দাবির ভিত্তিতে ১৯৭০ এর নির্বাচন ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ১১ দফা কর্মসূচি কি কি | ১১ দফা গুলো কি কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ১১ দফা কর্মসূচি কি কি | ১১ দফা গুলো কি কি । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।