স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প জেনে নিবো। তোমরা যদি স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প টি।
স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প |
স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প
সবারই কোনো না কোনো শৈশবস্মৃতি থাকে, যা তাকে তাড়িয়ে বেড়ায় সারা জীবন। আমার আছে এক ব্যতিক্রমী স্মৃতি যা কখনো ভুলতে পারি না। ঘুরেফিরে মনের মধ্যে জেগে ওঠে সেই অবিনাশী স্মৃতি। তখন আমার বয়স বেশি নয়। সাত কি আট বছর। দেশে চলছিল মুক্তিযুদ্ধ । রাত সাড়ে দশটার সময় হঠাৎ দরজায় কারা যেন কড়া নাড়ল। ঘরের সবাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল। আমার বাবা সবাইকে চুপচাপ থাকতে বললেন । কিন্তু কিছুক্ষণ পর আরও জোরে দরজায় লাথির আওয়াজ শোনা গেল। বাবা তখন মা, ছোটো ভাই ও আমাকে অন্য রুমে পাঠিয়ে ধীরে ধীরে দরজার দিকে এগিয়ে গেলেন। মা দোয়া-দরুদ পড়ে সবার গায়ে ফুঁ দিলেন। আর আল্লাহকে ডাকতে লাগলেন। আমি দরজার ফাঁক দিয়ে দেখতে লাগলাম কী হয়। বাবা কম্পিত হস্তে দরজাটা খুলতেই চার- পাঁচজন মিলিটারি ঘরে প্রবেশ করল। মিলিটারির সাথেই ছিল গ্রামের এক রাজাকার আনসার আলী। আনসার আলী বাবাকে দেখিয়ে বলল- ইয়ে মুক্তি হ্যায়। মিলিটারি তখন বাবার দিকে অস্ত্র তাক করে একযোগে গুলি করা শুরু করল । বাবার বুক মুহূর্তের মধ্যে ঝাঁঝরা হয়ে গেল। আমি হঠাৎ চিৎকার করার চেষ্টা করলে মা মুখ চেপে ধরেছিল। মিলিটারি হঠাৎ আমাদের রুমের দিকে এগোতে থাকে। তখন মা আমাদের নিয়ে খাটের নিচে গিয়ে আশ্রয় নিলেন। মিলিটারি আমাদের ঘরের জিনিসপত্র সব ভেঙে চুরমার করে দেয়। তারপর আনসার আলী সবাইকে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। ওরা চলে গেলে আমি মায়ের সঙ্গে খাটের নিচ থেকে বেরিয়ে আসি । বাবার লাশের ওপর গড়িয়ে পড়ে মা হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। আমার চোখও অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। কিন্তু সে অশ্রুতে জলের চেয়ে আগুনই বেশি ছিল। মিলিটারিদের হত্যা করার জন্য আমার হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে ওঠে। এরপর মা আমাদের নিয়ে নির্মম জীবনযাপন করতে থাকেন গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার সহায়তায়। মা একটি স্কুলে চাকরি নিয়ে আমাদের লালন-পালনের খরচ যোগান। শৈশবের এই করুণ স্মৃতি আমাকে স্মৃতিকাতর করে তোলে, করে তোলে বেদনাহত ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প টি। যদি তোমাদের আজকের এই স্মৃতিকাতরতা খুদে গল্প টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।