সময়ের মূল্য রচনা class 6, 7, 8, 9, 10, 11, 12
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মানুষের জীবনে সময়ের মূল্য | সময়ের মূল্য রচনার ২০ পয়েন্ট জেনে নিবো। তোমরা যদি রচনা সময়ের মূল্য | সময়ের মূল্য রচনা class 4 টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মানুষের জীবনে সময়ের মূল্য | সময়ের মূল্য রচনার ২০ পয়েন্ট টি।
সময়ের মূল্য রচনা |
সময়ের মূল্য রচনা
ভূমিকা: সময় বয়ে চলেছে নিরন্তর। সময়ের এ অন্তহীন চলার পথে প্রত্যেক মানুষ তাদের ভেলা ভাসিয়ে চলে। অনন্ত প্রবাহিত সময়ধারা থেকে যে খণ্ড সময়টুকু মানুষ তার জীবন রচনার জন্য পায়, তা এত মূল্যবান যে একবার পিছিয়ে পড়লে সারাজীবন তপস্যা করেও তা আর ফিরে পায় না ।
সময়ের মূল্য ও তাৎপর্য: সময়ের মূল্য ও তাৎপর্য অপরিসীম। পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিগণ যথাসাধ্য সময়মতো কাজ করে গেছেন। কথায় বলে, সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়ের সমান। তাছাড়া এটাও অনেকে জানেন যে, যেকোনো কিছু হারালে ফেরত পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু সময় একবার হারালে আর তা কখনোই ফিরে পাওয়া যায় না। এজন্য সময়ের মূল্য ও তাৎপর্য অপরিসীম ।
সময়ের সদ্ব্যবহার: সময়ের ব্যবহার সম্পর্কে সকলের সচেতন হওয়া -উচিত। সময়কে ঠিকভাবে ব্যবহার না করলে জীবনে দুঃখপ্রাপ্তি অবশ্যম্ভাবী। মনে রাখতে হবে, মানবজীবনের প্রতিটি মুহূর্ত প্রয়োজনীয় । তাই কোনো কাজ সময় মতো করা না হলে ঐ কাজ আর হয়তো কখনো করা হয় না। কবি হেমচন্দ্রের ভাষায়—
দিন যায় ক্ষণ যায় সময় কাহারো নয়।
বেগে ধায় নাহি রহে স্থির ।
স্বভাবতই জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগাতে পারলেই জীবন সফল হয়, সুন্দর হয়, সার্থক হয়। সময়কে অবহেলা করে আলস্যে সময় অপচয় করলে, কর্মবিমুখ হয়ে বসে থাকলে শত হাহাকার করলেও হত সময় পাওয়া যায় না। তাই প্রত্যেক মানুষের জীবনে কর্মের এবং সৃজনের সফলতা আনতে হলে প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগানো উচিত ।
মানবজীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রে সময়ের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান যন্ত্রসভ্যতার যুগে কোনো মানুষ একবার পিছিয়ে পড়লে তার পক্ষে এগিয়ে যাওয়া খুব কঠিন। যারা জীবনের মূল্যবান সময় হাতে পেয়েও কাজে লাগায় না পরবর্তীতে তাদের দুঃখের অন্ত থাকে না। সীমাবদ্ধ ও স্বল্পস্থায়ী মানবজীবনে দায়িত্ব অনেক বেশি, সেজন্য সময় হেলায় হারানো উচিত নয়। সেই জন্যই বলা হয়ে থাকে, “কাল করো তো আজ করো, আজ করো তো এখন করো।"
সময়ের উপযুক্ত বণ্টন: সময়ের সদ্ব্যবহারের পাশাপাশি সময়ের সুষ্ঠু বণ্টন করাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দিনের সমস্ত কাজকে একটি রুটিনের মধ্যে আনতে হবে প্রথমে। এরপর ক্রমান্বয়ে কাজ করতে হবে। আমরা যদি আমাদের জীবনকে একটি ছকে বাঁধতে পারি তবেই সফল হওয়া সম্ভব। জীবনের কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব পর্যায়ের কোন সময়ে আমরা কোন কাজ করব আগে থেকেই ঠিক রাখলে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। দিনের কোন ভাগে কোন কাজ করব, এটাও সকালে ভেবেচিন্তে নির্ধারণ করলে ভালো। যেমন— কখন পড়ব, কখন খেলব এর সবকিছুই নির্ধারিত হওয়া উচিত।
সময়ানুবর্তিতার অভ্যাস গঠন: সময়ের উপযুক্ত বণ্টন করলেই শেষ হয় না কোনো কাজ। সুষ্ঠু বণ্টনের পর সে অনুসারে আমাদের কাজের অভ্যাস । গঠন করতে হবে। অভ্যাস মানুষের দাস। অভ্যাস মানুষকে অনেক দূরে নিয়ে যায়। অনেক লোক আছে পৃথিবীতে যারা জীবনকে সুন্দর রুটিনে সাজায় কিন্তু সে অনুসারে কাজ করে না। ফলে তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে । তাই আমাদের উচিত সময়ানুবর্তিতার অভ্যাস গঠন করা।
ছাত্রজীবনে সময়ের মূল্য: ছাত্রজীবন মানবজীবনের বীজ বপনের সময়। এ সময় কাজ করার প্রকৃষ্ট সময়। এ সময়ে লেখাপড়া, খেলাধুলা, বিনোদন ও বিশ্রামের জন্য সময়ের সুষ্ঠু পরিকল্পনা থাকা দরকার। আলস্যে সময় নষ্ট করে এমন ছেলে যে শুধু লেখাপড়ায় পিছিয়ে যায় তাই নয়, জীবন থেকেও পিছিয়ে যায়। ছাত্রজীবনে সময়ানুবর্তী হলে ভবিষ্যতে তার সাফল্য অবশ্যম্ভাবী।
জাতীয় জীবনে সময়ের মূল্য: শুধু ছাত্রজীবনেই নয়, জাতীয় জীবনে সময়ের মূল্য অপরিসীম। যে জাতি যত বেশি সময়নিষ্ঠ, সে জাতি তত বেশি উন্নত। এটা দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ অলস এবং সময়-অসচেতন। সরকারিভাবে ভালো পরিকল্পনা হাতে নিলেও অনেক সময় সময় সম্পর্কে সচেতন না হওয়ার ফলে বিষয়গুলো ভেস্তে যায়। জাতীয় জীবনে সময় সম্পর্কে সচেতন না হলে জাতি কাঙ্ক্ষিত উন্নতি করতে পারবে না কখনোই ।
সময় অপচয়ের পরিণাম: লালন ফকির তাঁর গানে বলেছেন, ‘সময় গেলে সাধন হবে না, দিন থাকতে দিনের সাধন কেন করলে না'। সময়ের কাজ সময়ে না করলে অনেক কাজ জমা হয়, তখন সবগুলো যথার্থভাবে করা সম্ভব হয় না। এমন সময় আসে যে আমরা আমাদের সব থেকে প্রয়োজনীয় কাজ করতেও ভুলে যাই অন্য কাজের চাপে।
আমাদের কর্তব্য: আমাদের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত সময় সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো। বিশ্বের পরিশ্রমী এবং সময়ানুবর্তীদের থেকে শেখা তারা কীভাবে কাজ করে। শিক্ষিত বাঙালি হিসেবে সমস্ত বাঙালিকে সময়জ্ঞান দান করতে হবে ।
সময়নিষ্ঠ জাতি ও ব্যক্তির উদাহরণ: সময়নিষ্ঠ ব্যক্তি ও জাতির উদাহরণ দিতে গেলে পশ্চিমাদের কথা আগে আসবে। পাশ্চাত্য দেশীয়রা আমাদের থেকে বেশি পরিশ্রমী, সময়নিষ্ঠ । পাশ্চাত্যের প্রায় প্রতিটি দেশে সময়কে মূল্যায়ন করা হয় অসম্ভব গুরুত্বের সাথে। পাশ্চাত্যে সময়ের গুরুত্ব বোঝাতে এই কথাটি সর্বত্র প্রচলিত Time is asset. পাশ্চাত্য জাতিসমূহের সময়ানুবর্তিতা প্রমাণ করে, যে জাতি যত বেশি সময়নিষ্ঠ, সে জাতি তত বেশি উন্নত। আমাদের উপমহাদেশে জাপান, কোরিয়া এবং চীনারা অত্যন্ত সময়নিষ্ঠ ।
আলবার্ট আইনস্টাইন, নিউটন, নোবেল প্রমুখ বিজ্ঞানী ছিলেন সময়নিষ্ঠ । তাঁদের চিন্তার প্রসারতার আলোকে বলা যায়, প্রত্যেকেই সময়োপযোগী চিন্তা না করলে আপেক্ষিক তত্ত্ব, গতি তত্ত্ব আসত না। আবার আমরা যদি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, অমর্ত্য সেন প্রমুখকে দেখি তাহলে দেখব তাঁরা প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগিয়েছেন । যেমন— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুর আগে শেষ চিকিৎসার সময়ও কবিতা লিখেছেন ।
উপসংহার: আধুনিক সময়ে জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসার লাভ করায় জীবনসংগ্রামে প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। এখন মানুষের জীবন হয়েছে বহুমুখী। তাই সময়ের সঠিক ব্যবহার হওয়া চাই অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং ফলপ্রসূ। সময়কে কাজে লাগনো শুধু ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, জাতীয় ব্যাপারও। ব্যক্তি নিজে এবং দলবদ্ধভাবে সমস্ত জাতিকে সময়ানুবর্তী করলে তবেই জাতির মঙ্গল সূচিত হবে
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মানুষের জীবনে সময়ের মূল্য | সময়ের মূল্য রচনার ২০ পয়েন্ট
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মানুষের জীবনে সময়ের মূল্য | সময়ের মূল্য রচনার ২০ পয়েন্ট টি। যদি তোমাদের আজকের এই রচনা সময়ের মূল্য | সময়ের মূল্য রচনা class 4 টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।