চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি জেনে নিবো। তোমরা যদি চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি টি।
চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা |
চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমান কালের ন্যায় বাংলা একক কোনো অংশে বিভক্ত ছিল না। বাংলা আলাদা আলাদা ভাগে বিভক্ত ছিল । আলাদা আলাদা অংশে একেক জন শাসক শাসন করতো। সে সময় বাংলা বেশকটি জনপদে বিভক্ত ছিল এর মধ্যে অন্যতম দশ ছিল চন্দ্রদ্বীপ জনপদ ।
চন্দ্রদ্বীপ জনপদ : প্রাচীন বাংলার অন্যতম জনপদ হলো চন্দ্রদ্বীপ জনপদ। নিম্নে চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ধারণা প্রদান করা হলো :
বর্তমান বরিশাল জেলা ছিল চন্দ্রদ্বীপের মূল ভূখণ্ড ও প্রাণকেন্দ্র। এ প্রাচীন জনপদটি বালেশ্বর ও মেঘনার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ছিল। আবুল ফজলের মতে, বাকলা চন্দ্রদ্বীপ ছিল সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত। প্রাচীনকালে গঙ্গা নদী সপ্ত শাখায় বিভক্ত ছিল। এর একটি ছিল পাবণী পূর্বগামী শাখা। পূর্বগামী ত্রিধারার মিলিত স্থানকে সুগন্ধা বলা হতো। এই সুগন্ধা নদীর বুকে গঙ্গার পলিমাটি অসংখ্য দ্বীপ সৃষ্টি করে। এসবের মধ্যে ইন্দ্রদ্বীপ, সংখকোট, স্ত্রীর, জম্বু দ্বীপ প্রভৃতির উল্লেখ পাওয়া যায়। কালের বিবর্তনে দ্বীপগুলো সম্মিলিত নাম হয় চন্দ্রদ্বীপ।' দ্বীপগুলোর আকৃতি চাঁদের ন্যায় ছিল বলে এরূপ নামকরণ করা হয়। আবার কেউ কেউ বলেন, চন্দ্রভদ্র জনগোষ্ঠীর নামানুসারে চন্দ্রদ্বীপের নাম হয়েছে।
খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকের পূর্ব পর্যন্ত বাকলা চন্দ্রদ্বীপের রাজনৈতিক ইতিহাস জানা যায় না। খ্রিস্টীয় ৪র্থ ও ৫ম শতকে এই অঞ্চল মৌর্য ও গুপ্ত শাসনাধীন ছিল। ৪র্থ শতকে পুষ্করণ (বাঁকুড়া) মহারাজা চন্দ্রবর্মা কোটালীপাড়া দখল করে বাকলা চন্দ্রদ্বীপে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই সময় কোটালীপাড়াকে কেন্দ্র করে চন্দ্রদ্বীপের সভ্যতা বিকাশ লাভ কলে। উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, বাখরগঞ্জ, পটুয়াখালী, খুলনা, বাগেরহাটসহ সমস্ত দক্ষিণাঞ্চল তখন বাকলা চন্দ্রদ্বীপের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
সমুদ্রগুপ্ত চন্দ্রবর্মাকে পরাজিত করে চন্দ্রদ্বীপ দখল করেছিলেন। এই বংশের বৌন্যগুপ্ত গুপ্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সমতটে স্বাধীন রাজত্ব কায়েম করেন। পরে এই রাজা চন্দ্রদ্বীপের পনের শতকের শুরুর দিকে, লক্ষ্মণসেনের পৌত্র ধনুজমর্দন চন্দ্রদ্বীপকে স্বতন্ত্র রাজ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। সাতক্ষীরার বাসুদেবপুর ( প্রাপ্ত ধনুজমর্দনের মুদ্রায় দেখা যায় তিনি ১৪১৭ খ্রিস্টাব্দে চন্দ্রদ্বীপে রাজত্ব করেন। তিনি প্রথমে হিজলার গোবিন্দপুরে, পরে বাউফলের কচুয়ায় রাজধানী স্থাপন করেন।
বাকলা নগর এখানেই গড়ে উঠে। বনজ মর্দন এ পর রমা বল্লভ, কৃষ্ণবল্লভ (বাকলার একমাত্র মহিলা রাজা) ও পরমানন্দ-এ সাতজন রাজা শাসনকার্য পরিচালনা করেন। ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাকলা চন্দ্রদ্বীপে এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এতে প্রায় দুই লাখ লোকের মৃত্যু হয়। এই সময় রাজা জগদানন্দ বসুও এসময় পানিতে ডুবে মারা যান।
৫২৫ থেকে ৬০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত গোপালচন্দ্র, ধর্মাদিত্য, নরেন্দ্রাদিত্য সমাচারদেব এই অঞ্চল শাসন করেন। পরবর্তীতে সপ্তম শতাদ্বীতে খড়গ বংশ, অষ্টম শতাব্দীতে দেববংশ, নবম ও দশম শতাব্দীতে চন্দ্রবংশ এবং এগার থেকে চৌদ্দ শতাব্দীতে সেন বংশের প্রতিনিধিরা উপকূলীয় অঞ্চল শাসন করেন। চন্দ্রদ্বীপে ইসলামের আগমন ঘটে পনেরো শতকের মধ্যভাগে । ইলিয়াস শাহী বংশের সুলতান বারবাক শাহ (১৪৫৯-৭৪) চন্দ্রদ্বীপে মুসলিম শাসনের গোড়াপত্তন করেন। মির্জাগঞ্জের মসজিদবাড়িয়ার শাহী মসজিদ (৮৭০ হিজরি) তাঁর নির্মিত স্থাপত্যকীর্তি ।
উপসংহার : পরিশেষে একথা বলা যায় যে, প্রাচীন বাংলায় যে কটি জনপদ ছিল সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ ছিল তার মধ্যে সকল দিক দিয়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছিল চন্দ্রদ্বীপ জনপদ ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি টি। যদি তোমাদের আজকের এই চন্দ্রদ্বীপ জনপদের ব্যাখ্যা | প্রাচীন চন্দ্রদ্বীপের বর্তমান নাম কি টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।