বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা টি।
বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা |
বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা
হেরে যাওয়ার মধ্যেও যে কী আনন্দ আছে তা আজকে গভীরভাবে উপলব্ধি করিয়ে দিলেন এক আমেরিকান বৃদ্ধা। কিছুদিন আগের কথা। করোনার প্রবল থাবা সারা বিশ্বের মতো নিউইয়র্ককেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বাধ্য হয়ে সমগ্র নিউইয়র্ক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা যেখানে থাকি তার কিছু দূরেই একটি হাসপাতাল আছে। জনমানবহীন হওয়ায় প্রায় সারাদিনই অ্যাম্বুলেন্সের শব্দ আমাদের বাসা অব্দি আসে। অজানা এক আতঙ্ক গ্রাস করে আমাদের। আমাদের নিয়ে না যতটুকু ভয় তার চেয়ে বেশি আতঙ্ক আমার দাদাকে নিয়ে। ৮০ ঊর্ধ্ব দাদা হৃদরোগে আক্রান্ত। তাই দুশ্চিন্তা দ্বিগুণ হয়েছে। ইদানীং করোনার বেশ কিছু উপসর্গ লক্ষ করায় আমি দাদাকে নিয়ে গেলাম হাসপাতালে। টেস্ট করানোর পর রেজাল্ট পজিটিভ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ দাদাকে হাসপাতালেই আইসোলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমাকেও বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে বলে + অসুস্থ বোধ করলে যেন কালবিলম্ব না করি তা পই পই করে বলে দিয়েছে। আমি বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে বাসায় ফোন দিয়ে জানালাম। বাসায় আমার রুমটিকে ভালো করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে পেছনের দরজা দিয়ে বাসায় প্রবেশের বন্দোবস্ত করা হলো । আর বাবা-মা দাদার জন্য বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন । . আইসোলেশনের ২/৩ দিন পর থেকেই জ্বর আর গলাব্যথা। ৪/৫ দিন পর রাতে আমার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বাবা দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। হাসপাতালে স্থান সংকট জানিয়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে তৈরি একটি হাসপাতালে আমাকে পাঠানো হয়। আমাকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলার পর আর কিছু মনে নেই। যখন চোখ মেলি তখন সকাল। চারদিকে শুধু ডাক্তার নার্সদের ছুটোছুটি এবং প্রায় সব রোগীকেই ভেন্টিলেটর দিয়ে রাখা হয়েছে। আমি কিছু বলতে পারছি না। পুরো ওয়ার্ডে বয়স্ক রোগীর সংখ্যাই বেশি। আমার বয়সি রোগীর সংখ্যা হাতেগোনা। সারাদিন আমাকে বেশ ভালোভাবে অবজার্ভেশনে রাখা হয় এবং আভাস দেয় আমার উন্নতি হবে। পরবর্তীতে অপেক্ষাকৃত তরুণদের জন্য তৈরি একটি ইউনিটে আমাকে নিয়ে রাখা হয় । ট্রলি ঠেলে যখন আমাকে নিয়ে যাচ্ছে তখন কিছু বয়স্ক রোগী দেখে হঠাৎ করেই আমার দাদার কথা মনে পড়ল । কিন্তু এখানে চিন্তা করা ছাড়া কিছুই করার নেই। নানা চিন্তা-ভাবনা করে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি, কখন রাত হয়ে গেছে কিছুই টের পাইনি। চারদিকে শুধু হাহাকার আর মৃত্যুর মিছিল টের পাচ্ছিলাম । রাত হতে না হতেই আরও কিছু বয়স্ক রোগী আমাদের ইউনিটে আনা হয়েছে। হঠাৎ করেই রোগীর পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে এবং ভেন্টিলেটরের জন্য হাহাকার শুরু হয়ে গেছে। আমার পাশে বয়স্ক এক বৃদ্ধা এসেছেন। অবস্থা সুবিধাজনক মনে হচ্ছে না। রাত গড়িয়ে সকাল হলো। একজন যুবককে আনা হয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। পুরো হাসপাতালে ঘুরেও আর কোনো ভেন্টিলেটর পাওয়া যাচ্ছে না। যুবকের সাহায্যে এগিয়ে এলেন আমার পাশের বেডের এক বৃদ্ধা। তিনি ইশারায় জানালেন তার সাপোর্ট খুলে ঐ যুবককে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য। ডাক্তাররা সম্মতি না দেওয়ায় তিনি বলেন, তার আর তেমন কিছুই দেওয়ার নেই পৃথিবীকে। আর ঐ যুবকের পড়ে রয়েছে এক অবারিত সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। দেশকে দেওয়ার মতো তার অনেক কিছু রয়েছে। ডাক্তাররা তবুও রাজি না হওয়ায় তিনি আবারও বলেন, Save it (ventilator) for youngest who need it most. I have already had a beautiful life. আমার জীবনে যুক্ত হলো এক জলজ্যান্ত অভিজ্ঞতা। নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে বাঁচালেন একটি সম্ভাবনাময় যুবকের জীবন। আর নিজে আলিঙ্গন করলেন পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন সত্যকে
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা টি। যদি তোমাদের আজকের এই বিসর্জন প্রতিবেদন রচনা টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।