বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি ব্যাখ্যা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি ব্যাখ্যা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে কোন গ্রন্থে উল্লেখ আছে টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাংলা নামের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল ব্যাখ্যা করো টি।
বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি ব্যাখ্যা কর |
উত্তর : ভূমিকা : ঐতিহাসিকদের মধ্যে বঙ্গ নামের উৎপত্তি নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পূর্ব পর্যন্ত বাঙালির আবাসভূমিকে বলা হতো ‘বঙ্গদেশ’ ইংরেজিতে বলা হতো বেঙ্গল। বেঙ্গল নামটা দিয়েছিল ইংরেজরা, তারা এটি নিয়েছিল পর্তুগিজের দেয়া ‘বেঙ্গলা' শব্দ থেকে। বেঙ্গালা শব্দটি মুসলমানদের দেয়া 'বঙ্গালই' শব্দের রূপান্তর মাত্র। ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দ প্রথম পাঠান সুলতানগণই ‘বঙ্গালই' শব্দের ব্যবহার শুরু করেন। নিম্নে বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বিভিন্ন তাত্ত্বিকদের মতামত তুলে ধরা হলো :
১. আবুল ফজলের মতে : আবুল ফজল তার আইন-ইআকবরী গ্রন্থে বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন। তিনি মনে করেন যে, বংগ’-এর সাথে বাঁধ অর্থজ্ঞাপন ‘আল’ যুক্ত হয়েই বাংগাল’ শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। অন্যদিকে সেমিট্রিক ভাষায় ‘আল’ অর্থ আওলাদ, সন্তান-সন্ততি ও বংশধর। তাই ‘বং’-এর বংশধর অর্থ (বাং + আল) বঙ্গাল বা বাংগাল শব্দের উৎপত্তিটাকে নেহায়েত উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বংগ’ শব্দের উৎপত্তিটাকে নেহায়েত উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বংগ’ শব্দটি ‘গংগ’ শব্দে রূপান্তর বলেও আবার কেউ কেউ যুক্তি দেখিয়েছেন। বঙ্গ’-শব্দজাত ‘বঙ্গাল’ শব্দটি একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দী থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
২. ড. নীহার রঞ্জন রায়ের মতে : “বাঙালির ইতিহাস। আদিপর্ব রচয়িতা ড. নীহার রঞ্জন রায়ের মতে, রাজতন্ত্রের। নিঃসংশয় প্রমাণ ও পরিচয় পাওয়া যায় খিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে গ্রিক-ইতিহাস কথিত গঙ্গারাষ্ট্রের বিবরণের মধ্যে।
৩, সুকুমার সেনের মতে : জলময় দেশে সারা পূর্বাপর বাস করে তারা ‘বঙ্গ’ এবং তাদের নিবাস-ভূমি ‘বঙ্গ-দেশ এইরূপ মত প্রকাশ করেছেন সুকুমার সেন।
৪. দ্বাদশ শতাব্দীর অনুশাসন মতে : দ্বাদশ শতাব্দীর এক অনুশাসনে বঙ্গাল বল (অর্থাৎ বাঙাল রাজার সৈন্য) কর্তৃক নালন্দার একটি বিহার ধ্বংসের কথা উল্লেখ আছে। এ সময়ে এক কবিও ‘বাঙ্গাল' নামে পরিচিত ছিলেন। কেউ কেউ মনে করেন, “বঙ্গ” নামটির মূলে ছিল চীন-তিব্বতি-গোষ্ঠীর কোনো শব্দ। বাঙ্গালা নামটি মুসলিম অধিকার কালের গোড়ার দিকেই চলিত হয়। ফরাসি “ঙ্গোলহ' হতে পর্তুগিজ Bengala ও ইংরেজি Bengla এর উৎপত্তি।
৫. ইউরোপীয়দের মতে : বাঙ্গাল দেশের নাম থেকেই যে সময়ের বিবর্তনে সমগ্র দেশের নাম বাংলা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীর = ইউরোপীয়দের লেখায় 'বেঙ্গালা' নামে দেশের উল্লেখ পাওয়া ল যায়। মিরাজ ফ্রেডারিক ‘বেঙ্গালা' রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত চাটি গাঁয়ের ১২০ মাইল দূরে অবস্থিত ‘সোন্দিব’ দ্বীপের উল্লেখ করেছেন। - দুজারিক (১৫৯৯) প্রায় ২০০ লীগ উপকূল বিশিষ্ট ‘বেঙ্গালা’ ট দেশের উল্লেখ করেছে। স্যামুয়েল পচসি (১৬২৬)-এর বর্ণনায়ও ‘বেঙ্গালা' রাজ্যের উল্লেখ রয়েছে। র্যালফে ফিচ্ (১৫৮৬) | ‘বঙ্গালা’ দেশে ‘চাটিগাণ, ‘সাত গাম’ সপ্তগ্রাম, (হুগলি) এবং তান্ডা (রাজ্যমহলের নিকটবর্তী) শহরের উল্লেখ করেছেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রাচীন জনপদ ‘বঙ্গ। | থেকে মধ্যযুগে বাঙ্গালাহ’ বা ‘বাঙ্গালা’ আধুনিক যুগে তথা ব্রিটিশ শাসনামলে পর্তুগিজদের ‘বেঙ্গালা’ ইংরেজদের ‘বেঙ্গল/Bengal', পাকিস্তান শাসনামলে ‘পূর্ববঙ্গ (১৯৪৭-১৯৫৫), পূর্ব পাকিস্তান (১৯৫৫) বাংলাশে’ নাম সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। → সুবা-ইবাঙ্গালা → পূর্ববঙ্গ → পূর্ব পাকিস্তান > বাংলা নামের উৎপত্তি। | বাংলা নামের উপর ভিত্তি করেই ১৯৬৯ সালের গণঅভুত্থানের পর এদেশের নামকরণ করা হয় বাংলাদেশ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাংলা নামের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল ব্যাখ্যা করো
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ টি। যদি তোমাদের আজকের এই বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে টীকা লিখ টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। বঙ্গ বা বাংলা নামের উৎপত্তি ব্যাখ্যা কর, বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে কোন গ্রন্থে উল্লেখ আছে, বাংলা নামের উৎপত্তি কিভাবে হয়েছিল ব্যাখ্যা করো, বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ, বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে টীকা লিখ, বাংলা নামের উৎপত্তি সম্পর্কে লিখ