প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও টি।
প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও |
প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও
উত্তর : ভূমিকা : প্রাক-ইসলামি আরবের সামাজিক অবস্থা অত্যন্ত শােচনীয় ছিল। বংশগত ও গােত্রগত আভিজাত্য, অহংকার, ঈর্ষা ও বিদ্বেষ সমাজ জীবনকে দুর্বিষহ করে তােলে। অজ্ঞতা, বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা ও পৈশাচিকতা সমাজদেহকে কলুষিত করে তােলে। এ প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক খােদাবক্স বলেন, আরববাসীরা সুরা, নারী ও যুদ্ধে লিপ্ত থাকতাে এবং মুহাম্মদ (সা.) দেখলেন সমগ্র আরবদেশ মুখতা, বর্বরতা ও প্রকৃতি নিমজ্জিত।
প্রাক-ইসলামি আরবের সামাজিক অবস্থা : ইসলামের আগমনের পূর্বে আরবের সামাজিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। তাদের কিছু মহৎ গুণ থাকলেও মানবিক মূল্যবোধের ছিল বড়ই অভাব। ত নিম্নে প্রাক-ইসলামি আরবের সামাজিক অবস্থা আলোচনা করা হলো :
১. নারীদের অবস্থা : তৎকালীন সময়ে কন্যা সন্তানের জন্ম আরবদের নিকট অত্যন্ত লজ্জাকর ব্যাপার ছিল। অনেকে লজ্জার হাত হতে মুক্তি পাবার জন্য এবং অনেকে দারিদ্র্যের কারণে কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবর দিতেও দ্বিধাবোধ করতো না। নারীদেরকে ভোগের সামগ্রী ছাড়া কিছুই মনে করা হতো না। স্বামীরা জুয়াখেলায় স্ত্রীদেরকে বাজি লাগাত, টাকার বিনিময়ে স্ত্রীদেরকে বিক্রি করে দিত।7m
২. দাস-দাসীদের দুরবস্থা : তখনকার দিনে অন্যান্য সমাজের ন্যায় আরব সমাজেও দাস প্রথা প্রচলিত ছিল । পণ্য দ্রব্যের মত দাসদাসীও হাটে বাজারে বিক্রয় হতো। তাদের দুরবস্থা সম্পর্কে ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেছেন, ভৃত্যই হউক আর ভূমিদাসই হউক তাদের ভাগ্য ক্ষীণ আশা বা এককণা সূর্যরশ্মিও কবরের এই দিকে অর্থাৎ ইহজীবনে জুটত না। প্রভুরা তাদেরকে খেয়াল খুশিমত অত্যাচার করতো এবং কখনও দাসীদেরকে উপপত্নী হিসেবে ব্যবহার করতো। তাদের জীবন মৃত্যু, বিয়ে সবই ছিল প্রভুর ইচ্ছাধীন। এক কথায় তখনকার দাস-দাসীদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল ।
৩, ব্যভিচার ও কুসংস্কার : প্রাক ইসলামি যুগে আরবের মানুষের নৈতিক চরিত্র বলতে কিছুই ছিল না। মদ্যপান, জুয়া খেলা, অবিচার, অত্যাচার, লুণ্ঠন, নরবলি ইত্যাদি ছিল তাদের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। তারা কুসংস্কারে এতাে বেশি আচ্ছন্ন ছিল যে তারা কোন কাজ আরম্ভ করার পূর্বে তীরের সাহায্যে দেবমূর্তির সাথে পরামর্শ করতাে। আভিজাত্যের দম্ভ, আত্মম্ভরিতা, পরনিন্দা ও পরশ্রীকাতরতা ইত্যাদি জাহেলিয়া যুগে আরব চরিত্রকে ভীষণভাবে কলুষিত ও কলঙ্কিত করে তুলেছিল।
৪. সুদপ্রথা : প্রাক ইসলামি আরবে সুদ প্রথা প্রচলিত ছিল। তৎকালীন সময়ে ইহুদিরা উচ্চহারে সুদের ব্যবসা করতাে। সময়মতাে সুদের টাকা পরিশােধ করতে না পারলে চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ আদায় করতাে। কখনাে কখনাে ঋণগ্রহীতারা সুদ ও ঋণ ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এমনকি স্ত্রী কন্যাসন্তানকে দখল করে নিতাে।
৫, মদ্যপান : প্রাক ইসলামি যুগে আরবগণ অতিমাত্রায় মাদকাসক্ত ছিল। বিনােদনমূলক কাজকর্মের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। নেশাগ্রস্ত আরবরা নারী নিয়ে নীতিবহির্ভূত কাজে লিপ্ত হতাে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইসলাম পূর্ব সময়ে আরবের সামাজিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ছিল। সমাজ জীবন ছিল নানা বিশৃঙ্খলায় | পরিপূর্ণ। তাই এ সময়কে জাহেলিয়ার যুগের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও টি। যদি তোমাদের আজকের এই প্রাক ইসলামী আরবের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থার বিবরণ দাও টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।