ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ভাবসম্প্রসারন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ভাবসম্প্রসারন জেনে নিবো। তোমরা যদি ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ভাবসম্প্রসারন টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় ভাবসম্প্রসারণ টি।
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ভাবসম্প্রসারন |
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়;
পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝলসানাে রুটি।
ভাব-সম্প্রসারণ: ক্ষুধার্ত মানুষের একমাত্র আকাক্সক্ষা ক্ষুন্নিবৃত্তি। সব কিছুর মধ্যেই সে ক্ষুধা নিবৃত্তির কথা | ভাবে। তখন কোনাে কিছু সুন্দর কি অসুন্দর, তা তাকে ভাবায় না।
প্রত্যেক মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কতগুলাে মৌলিক চাহিদা রয়েছে। খাদ্য হলাে এর মধ্যে প্রধান মৌলিক চাহিদা। খাদ্য ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। মানুষের শরীরে তৈরি হওয়া এই খাদ্যের চাহিদারই অপর নাম ক্ষুধা। ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য মানুষ সব কিছু করতে পারে। মানুষ যে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে, তার পেছনে এই ক্ষুন্নিবৃত্তিই মূল চালিকাশক্তি। ক্ষুধা নিবৃত্ত হওয়ার পরেই মানুষ অন্যান্য মৌলিক চাহিদার কথা ভাবে। বাসস্থানের কথা ভাবে, পােশাকের কথা ভাবে, স্বাস্থ্যের কথা ভাবে। সুন্দর-অসুন্দরের কথা ভাবে একেবারে শেষ পর্যায়ে। তাই ক্ষুধা যখন মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তখন সৌন্দর্যের মূল্য তার কাছে থাকে না। একজন সুখী মানুষের কাছে পৃথিবীকে সুন্দর মনে হতে পারে। কিন্তু ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে তা নাও হতে পারে। অতীতে প্রায়ই দুর্ভিক্ষ দেখা দিত। হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মারা যেত। সামান্য দুটো রুটির জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষকে সারাদিন পরিশ্রম করতে হতাে। সেই দুর্ভিক্ষে একজন শ্রমজীবীর কাছে পূর্ণিমার চাঁদ বড়াে জোর একখানা ঝলসানাে রুটির মতাে মনে হবে, সেটাই স্বাভাবিক।
ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে পৃথিবীর সৌন্দর্য কোনাে তাৎপর্য বহন করে না। ক্ষুধা নিবারণের জন্য তার সবচেয়ে আগে দরকার খাদ্য। গদ্যের কাঠিন্যটুকু সে ভালাে উপলব্ধি করতে পারে; কাব্যের কোমলতা তার কাছে অর্থহীন।
ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ভাবসম্প্রসারন
মূলভাব: অন্ন-তৃপ্ত মানুষের মন প্রেম ও সৌন্দর্যের মধুর কাব্যসুধায় সিক্ত হয় কিন্তু যে মানুষের ক্ষুধায় অন্ন জোটে না, জঠরাগ্নি যার নিবৃত্ত হয়নি, বেঁচে থাকার ন্যূনতম প্রয়োজনটুকু যার জীবনে অস্বীকৃত, সুন্দর তার কাছে কোনো তাৎপর্যই বহন করে না। জীবনে ক্ষুধাই যখন সর্বাপেক্ষা প্রবল হয়ে দেখা দেয়, মানুষের জীবন থেকে প্রেম ও সৌন্দর্যের সূক্ষ্মতার বোধগুলো বিশুষ্ক পণ্যের মতোই তখন ঝরে পড়ে।
সম্প্রসারিত ভাব: সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষকে অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়ের জন্য নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়েছে। এ সংগ্রামে যখন সে জয়ী হয়েছে তখনই তার মন প্রয়োজনের সীমাকে ডিঙিয়ে প্রকৃতির মধ্যে রূপ, রং, রসের সন্ধান করেছে। এভাবেই পূর্ণিমার চাঁদ তার কাছে প্রতিভাত হয়েছে প্রেম ও সৌন্দর্যের আধাররূপে । যুগ যুগ ধরে চিত্রে, সাহিত্যে, সংগীতে এ অপরূপকে মানুষ কত রূপেই না প্রত্যক্ষ করেছে। সুদূরের সৌন্দর্যকে সে সীমার স্বপ্নে বাঁধতে চেয়েছে। কিন্তু জীবনের জৈব প্রয়োজনকে অস্বীকার করার কোনো পথ নেই । শুধু বেঁচে থাকার জন্য অন্ন সংগ্রহের তাড়নায় যে জীবন পর্যুদস্ত, তার কাছে পূর্ণিমার চাঁদ কোনো সুন্দরের স্বপ্নকে বহন করে আনে না। নিয়ে আসে শুধু একটি বহু কাঙ্ক্ষিত ঝলসানো রুটির স্বপ্ন। পরিবেশই মানুষের জীবন ও মনকে গড়ে তোলে। বর্তমানে ধনতান্ত্রিক সভ্যতার অর্থনৈতিক সংকট বিপুলসংখ্যক মানুষের মুখ থেকে কেড়ে নিয়েছে ক্ষুধার অন্ন। জনজীবনে নেমে এসেছে দারিদ্র্যের অভিশাপ। সুকঠিন জীবনসংগ্রামে জর্জরিত
মানুষ স্বাভাবিক কারণেই সুন্দরকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ক্ষুধার অন্নই তার কাছে সর্বাপেক্ষা সত্য হয়ে দেখা দেয়। প্রেম ও সুন্দরের স্বপ্ন-মন্দির, কাব্যকূজন তখন তার কাছে নিরর্থক মিথ্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে পৃথিবী গদ্যের মতোই নীরস ও কঠিন, কাব্যের ললিতবাণী তার কাছে শুধু ব্যর্থ পরিহাস মাত্র।
মন্তব্য: ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে কোনো সৌন্দর্যই প্রতিভাত হয় না । সৌন্দর্য হলো প্রয়োজনের আনন্দ । ক্ষুধা নিবারণ জীবমাত্রেই প্রথম প্রয়োজন । সেই প্রয়োজন যখন অসম্ভব হয়ে ওঠে, তখন কাব্যের শব্দ-ছন্দ-অলংকারের বৈভব অবাস্তব ও অলীক বলে মনে হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ভাবসম্প্রসারন
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি ভাবসম্প্রসারন টি। যদি তোমাদের আজকের এই ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় ভাবসম্প্রসারণ টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।