পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ
আপনি কি জানতে চান পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ? যদি জানতে চান পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ তাহলে স্বাগতম আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে। কারন আজকে আমরা জানবো পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ।
পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ |
আসসালামু আলাইকুম হ্যালো বন্ধুরা আমি আরকে আজকে আমি আপানদের সাথে আলোচনা করব পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ। আশা পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ এই প্রশটির উত্তর শেষ পর্যন্ত পড়বেন। তাহলে পড়তে থাকুন পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ।
পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ
বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত শব্দ ও ধাতুকে পদ বলে।
পদগুলাে প্রধানত দুই প্রকার : সব্যয় পদ ও অব্যয় পদ।
সব্যয় পদ কত প্রকার
সব্যয় পদ চার প্রকার:
১. বিশেষ্য
২. বিশেষণ
৩. সর্বনাম
৪. ক্রিয়া।
পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
সুতরাং পদ মােট পাঁচ প্রকার:
- বিশেষ্য,
- বিশেষণ,
- সর্বনাম,
- ক্রিয়া এবং
- অব্যয়।
আলােচ্য বাক্যটিতে
১. বিশেষ্য পদ - (অভিযাত্রী, মানুষ, কল্পনা, রাজ্য, দেশ, মঙ্গলগ্রহ)
২. বিশেষণ পদ - (দুঃসাহসী, চিরন্তন, প্রস্তুত)
৩. সর্বনাম পদ - (তারা)
৪. ক্রিয়াপদ - পৌছেছেন, হচ্ছেন, যাওয়ার (অসমাপিকা ক্রিয়া)
৫. অব্যয় পদ - এবং, জন্য
বিশেষ্য পদ
বিশেষ্য পদ কাকে বলে উদাহরণ সহ | বিশেষ্য পদ কত প্রকার ও কি কি
কোনাে কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে। বাক্যমধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোনাে ব্যক্তি, জাতি, সমষ্টি, বস্তু, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম বা গুণের নাম বােঝানাে হয় তাদের বিশেষ্য পদ বলে।
বিশেষ্য পদ ছয় প্রকার
১. সংজ্ঞা (বা নাম) বাচক বিশেষ্য (Proper Noun)
২. জাতিবাচক বিশেষ্য (Common Noun)
৩. কতু (বা দ্রব্য) বাচক বিশেষ্য (Material Noun)
৪. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য (Collective Noun)
৫. ভাববাচক বিশেষ্য (Verbal Noun)
৬. গুণবাচক বিশেষ্য (Abstract Noun)
বিশেষণ পদ
বিশেষণ পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
বিশেষণ: যে পদ বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে। যেমনঃ
চলন্ত গাড়ি : বিশেষ্যের বিশেষণ।
করুণাময় তুমি : সর্বনামের বিশেষণ।
দুত চল : ক্রিয়া বিশেষণ।
বিশেষণ দুই ভাগে বিভক্ত। যথা—
১. নাম বিশেষণ ও
২. ভাব বিশেষণ।
১. নাম বিশেষণ: যে বিশেষণ পদ কোনাে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে, তাকে নাম বিশেষণ বলে। যথা
বিশেষ্যের বিশেষণ : সুস্থ সবল দেহকে কে না ভালােবাসে?
সর্বনামের বিশেষণ : সে রূপবান ও গুণবান।
নাম বিশেষণের প্রকারভেদ
ক. রূপবাচক : নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, কালাে মেঘ।
খ. গুণবাচক : চৌকস লােক, দক্ষ কারিগর, ঠাণ্ডা হাওয়া।
গ. অবস্থাবাচক : তাজা মাছ, রােগা ছেলে, খোঁড়া পা।
ঘ, সংখ্যাবাচক : হাজার লােক, দশ দশা, শ টাকা।
ঙ, ক্রমবাচক : দশম শ্রেণি, সত্তর পৃষ্ঠা, প্রথমা কন্যা।
চ. পরিমাণবাচক বিঘাটেক জমি, পাঁচ শতাংশ ভূমি, হাজার টনী জাহাজ, এক কেজি চাল, দু কিলােমিটার রাস্তা।
ছ, অংশবাচক। : অর্ধেক সম্পত্তি, যােল আনা দখল, সিকি পথ।
জ, উপাদানবাচক : বেলে মাটি, মেটে কলসি, পাথুরে মূর্তি।
ঝ, প্রশ্নবাচক : কতদূর পথ? কেমন অবস্থা?
ঞ. নির্দিষ্টতাজ্ঞাপক : এই লােক, সেই ছেলে, ছাব্বিশে মার্চ।
বিভিন্নভাবে বিশেষণ গঠনের পদ্ধতি
ক. ক্রিয়াজাত। : হারানাে সম্পত্তি, খাবার পানি, অনাগত দিন।
খ. অব্যয়জাত। : আচ্ছা মানুষ, উপরি পাওনা, হঠাৎ বড়লােক।
গ. সর্বনাম জাত : কবেকার কথা, কোথাকার কে, স্বীয় সম্পত্তি।
ঘ. সমাসসিদ্ধ : বেকার, নিয়ম-বিরুদ্ধ, জ্ঞানহারা, চৌচালা ঘর।
ঙ. বীপ্সামূলক : হাসিহাসি মুখ, কাঁদাদ চেহারা, ডুবুডুবু নৌকা।
চ. অনুকার অব্যয়জাত : কনকনে শীত, শনশনে হাওয়া, ধিকিধিকি আগুন, টসটসে ফল, তকতকে মেঝে।
ছ. কৃদন্ত: কৃতী সন্তান, জানাশােনা লােক, পায়ে-চলা পথ, হৃত সম্পত্তি, অতীত কাল।
জ, তদ্ধিতান্ত : জাতীয় সম্পদ, নৈতিক বল, মেঠো পথ।
ঝ. উপসর্গযুক্ত : নিখুঁত কাজ, অপহৃত সম্পদ, নির্জলা মিথ্যে।
ঞ, বিদেশি : নাস্তানাবুদ অবস্থা, লাওয়ারিশ মাল, লাখেরাজ সম্পত্তি, দরপত্তনি তালুক।
২. ভাব বিশেষণ : যে পদ বিশেষ্য ও সর্বনাম ভিন্ন অন্য পদকে বিশেষিত করে তা-ই ভাব বিশেষণ। ভাব বিশেষণ চার প্রকার :
১. ক্রিয়া বিশেষণ
২. বিশেষণের বিশেষণ বা বিশেষণীয় বিশেষণ
৩. অব্যয়ের বিশেষণ
৪. বাক্যের বিশেষণ।
ক. বাংলা শব্দের অতিশায়ন
১. বাংলা শব্দের অতিশায়নে দুয়ের মধ্যে চাইতে, চেয়ে, হইতে, হতে, অপেক্ষা, থেকে ইত্যাদি শব্দ ব্যবহৃত হয়। এসব ক্ষেত্রে দুয়ের মধ্যে তারতম্য বােঝাতে প্রথম বিশেষ্যটি প্রায়ই ষষ্ঠী বিভক্তিযুক্ত হয়ে থাকে এবং মূল বিশেষণের পর কোনাে পরিবর্তন সাধিত হয় না। যথাগরুর থেকে ঘােড়ার দাম বেশি। বাঘের চেয়ে সিংহ বলবান।
২. বস্তুর মধ্যে অতিশায়ন : অনেকের মধ্যে একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বােঝাতে মূল বিশেষণের কোনাে পরিবর্তন হয় না। মূল বিশেষণের পূর্বে সবচাইতে, সবচেয়ে, সব থেকে, সর্বাপেক্ষা, সর্বাধিক প্রভৃতি শব্দ ব্যবহার হয়। যথানবম শ্রেণির ছাত্রদের মধ্যে করিম সবচেয়ে বুদ্ধিমান। ভাইদের মধ্যে বিমলই সবচাইতে বিচক্ষণ। পশুর মধ্যে সিংহ সর্বাপেক্ষা বলবান।
৩. দুটি বস্তুর মধ্যে অতিশায়নে জোর দিতে হলে মূল বিশেষণের আগে অনেক, অধিক, বেশি, অল্প, কম, অধিকতর প্রভৃতি বিশেষণীয় বিশেষণ যােগ করতে হয়। যথাপদ্মফুল গােলাপের চাইতে অনেক সুন্দর। ঘিয়ের চেয়ে দুধ বেশি উপকারী। কমলার চাইতে পাতিলেবু অল্প ছােট।
৪. কখনাে কখনাে ষষ্ঠী বিভক্তিযুক্ত শব্দে ষষ্ঠী বিভক্তিই চেয়ে, থেকে প্রভৃতি শব্দের কার্যসাধন করে। যেমন - এ মাটি সােনার বাড়া।
খ. তৎসম শব্দের অতিশায়ন।
১. তৎসম শব্দের অতিশায়নে দুয়ের মধ্যে ‘তর এবং বস্তুর মধ্যে ‘তম’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে থাকে। যেমন— গুরু-গুরুতর-গুরুতম। দীর্ঘ-দীর্ঘতর-দীর্ঘতম। | কিন্তু “তর' প্রত্যয়যুক্ত বিশেষণটি শুকিটু হলে ‘তর প্রত্যয় যােগ না করে বিশেষণের পূর্বে ‘অধিকতর' শব্দটি যােগ করতে হয়। যেমন- অশ্ব হস্তী অপেক্ষা অধিকতর সুশ্রী।
২. বহুর মধ্যে অতিশায়নে তুলনীয় বস্তুর উল্লেখ না করেও ‘তম’ প্রত্যয় যুক্ত হতে পারে। যেমন— মেঘনা বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী। দেশসেবার মহত্তম ব্রতই সৈনিকের দীক্ষা।
৩. তৎসম শব্দের অতিশায়নে দুয়ের মধ্যে তুলনায় ‘ঈয়স্’ প্রত্যয় এবং বহুর মধ্যে তুলনায় ‘ই’ প্রত্যয় যুক্ত হয়। বাংলায় সাধারণত ‘ঈয়স’ প্রত্যয়ান্ত শব্দগুলাে ব্যবহৃত হয় না। যেমন— উদাহরণ : তিন ভাইয়ের মধ্যে রহিমই জ্যেষ্ঠ এবং করিম কনিষ্ঠ। সংখ্যাগুলাের লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক বের কর।
৪. ‘ঈয়স' প্রত্যয়ান্ত কোনাে কোনাে শব্দের স্ত্রীলিঙ্গ রূপ বাংলায় প্রচলিত আছে। যেমন- ভূয়সী প্রশংসা।
একই পদের বিশেষ্য ও বিশেষণ রূপে প্রয়ােগ
বাংলা ভাষায় একই পদ বিশেষ্য ও বিশেষণ রূপে ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন –
ভালাে
বিশেষণ রূপে - ভাললা বাড়ি পাওয়া কঠিন।
বিশেষ্য রূপে - আপন ভালাে সবাই চায়।।
মন্দ :
বিশেষণ রূপে - মন্দ কথা বলতে নেই।
বিশেষ্য রূপে - এখানে কী মন্দটা তুমি দেখলে?
পুণ্য
বিশেষণ রূপে - তােমার এ পুণ্য প্রচেষ্টা সফল হােক।
বিশেষ্য রূপে - পুণ্যে মতি হােক।
নিশীথ :
বিশেষণ রূপে - নিশীথ রাতে বাজছে বাঁশি।
বিশেষ্য রূপে - গভীর নিশীথে প্রকৃতি সুপ্ত।
শীত :
বিশেষণ রূপে - শীতকালে কুয়াশা পড়ে।
বিশেষ্য রূপে - শীতের সকালে চারদিক কুয়াশায় অন্ধকার।
সত্য :
বিশেষণ রূপে - সত্য পথে থেকে সত্য কথা বল।
বিশেষ্য রূপে - এ এক বিরাট সত্য।
সর্বনাম পদ
সর্বনাম পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। সর্বনাম সাধারণত ইতােপূর্বে ব্যবহৃত বিশেষ্যের প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দ। যেমন- হস্তী প্রাণিজগতের সর্ববৃহৎ প্রাণী। তার শরীরটি যেন বিরাট এক মাংসের সূপ।
দ্বিতীয় বাক্যে ‘তার' শব্দটি প্রথম বাক্যের ‘হতী’ বিশেষ্য পদটির প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই, ‘তার' শব্দটি সর্বনাম পদ। বিশেষ্য পদ অনুক্ত থাকলেও ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষ্য পদের পরিবর্তে সর্বনাম পদ ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন
ক. যারা দেশের ডাকে সাড়া দিতে পারে, তারাই তাে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক।
খ, ধান ভানতে যারা শিবের গীত গায়, তারা স্থির লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে না।
সর্বনামের শ্রেণিবিভাগ
বাঙলা ভাষায় ব্যবহৃত সর্বনাম সমূহকে নিম্ন লিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।
(১) ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক : আমি, আমরা, তুমি, তােমরা, সে, তারা, তাহারা, তিনি, তারা, এ, এরা, ও, ওরা ইত্যাদি।
(২) আত্মবাচক : সয়ং, নিজে, খােদ, আপনি।
(৩) সামীপ্যবাচক : এ, এই, এরা, ইহারা, ইনি ইত্যাদি।
(৪) দূরত্ববাচক : ঐ, ঐসব।
(৫) সাকুল্যবাচক : সব, সকল, সমুদয়, তাবৎ।
(৬) প্রশ্নবাচক : কে, কি, কী, কোন, কাহার, কার, কিসে?
(৭) অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক : কোন, কেহ, কেউ, কিছু।
(৮) ব্যতিহারিক : আপনা আপনি নিজে নিজে, আপসে, পরস্পর ইত্যাদি।
(৯) সংযােগজ্ঞাপক : যে, যিনি, যাঁরা, যারা, যাহারা ইত্যাদি।
(১০) অন্যাদিবাচক : অন্য, অপর, পর ইত্যাদি।
সর্বনাম পদ
১. ব্যক্তিবাচক
২. আত্মবাচক
৩. সামীপ্যবাচক
৪. দূরত্ববাচক
৫. সাকুল্যবাচক
৬. প্রশ্নবাচক
৭. অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপক
৮. ব্যতিহারিক
৯. সংযােগজ্ঞাপক।
১০. অন্যাদিবাচক
সর্বনামের পুরুষ
‘পুরুষ’ একটি পারিভাষিক শব্দ। বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়ারই পুরুষ আছে। বিশেষণ ও অব্যয়ের পুরুষ নেই। ব্যাকরণে পুরুষ তিন প্রকার।
১. উত্তম পুরুষ : সয়ং বক্তাই উত্তম পুরুষ। আমি, আমরা, আমাকে, আমাদের ইত্যাদি সর্বনাম শব্দ উত্তম পুরুষ।
২. মধ্যম পুরুষ : প্রত্যক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বা শ্রোতাই মধ্যম পুরুষ। তুমি, তােমরা, তােমাকে, তােমাদের, তােমাদিগকে, আপনি, আপনারা, আপনার, আপনাদের প্রভৃতি সর্বনাম শব্দ মধ্যম পুরুষ।
৩. নাম পুরুষ: অনুপস্থিত অথবা পরােক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীই নাম পুরুষ। সে, তারা,তাহারা, তাদের, তাহাকে, তিনি, তঁাকে, তারা, তাদের প্রভৃতি নাম পুরুষ। (সমত বিশেষ্য শব্দই নাম পুরুষ)।।
পুরুষ তিন প্রকারঃ
১. উত্তম পুরুষ
২. মধ্যম পুরুষ
৩. নাম পুরুষ
পুরুষভেদে ব্যক্তিবাচক সর্বনামগুলাের রূপ
রূপ | উত্তম পুরুষ | মধ্যম পুরুষ | নাম পুরুষ |
---|---|---|---|
সাধারণ | আমি, আমরা, আমাকে, আমাদিগকে, আমার, আমাদের; কবিতায় : মাের, মােরা | তুমি, তােমরা, তােমাকে, তােমাদিগকে, তােমার, তােমাদের | সে, তারা, তাহারা, তাকে, তাহাকে |
সন্ত্রমাত্মক | আপনি, আপনারা, আপনাকে, আপনার, আপনাদের | তিনি, তাঁরা, তাঁহারা, তাঁদের, তাঁহাদের, তাহাদিগকে, তাদেরকে, তাহাকে, তাকে, ইনি, এঁর, এঁরা, ইহাদের, এঁদের, ইহাকে, ঐকে, উনি, ওঁর, ওঁরা, ওঁদের | |
তুচ্ছার্থক বা ঘনিষ্ঠতা-জ্ঞাপক | ইহা, ইহারা, এই, এ, এরা, উহা, উহারা, ও, ওরা, ওদের |
সর্বনামের বিভক্তিগ্রাহী রূপ : বাংলা সর্বনামসমূহ কর্তৃকারক ভিন্ন অন্যান্য কারকে বিভক্তিযুক্ত হওয়ার পূর্বে একটি বিশেষ রূপ পরিগ্রহ করে। সর্বনামের এ রূপটিকে বিভক্তিগ্রাহী রূপ বলা হয়।
অব্যয় পদ
অব্যয় পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
ন ব্যয় = অব্যয়। যার ব্যয় বা পরিবর্তন হয় না, অর্থাৎ যা অপরিবর্তনীয় শব্দ তাই অব্যয়। অব্যয় শব্দের সাথে কোনাে বিভক্তিচিহ্ন যুক্ত হয় না, সেগুলাের একবচন বা বহুবচন হয় না এবং সেগুলাের স্ত্রী ও পুরুষবাচকতা নির্ণয় করা যায় না।
যে পদ সর্বদা অপরিবর্তনীয় থেকে কখনাে বাক্যের শােভা বর্ধন করে, কখনাে একাধিক পদের, বাক্যাংশের বা বাক্যের সংযােগ বা বিয়ােগ সম্বদ্ধ ঘটায়, তাকে অব্যয় পদ বলে।
বাংলা ভাষায় তিন প্রকার অব্যয় শব্দ রয়েছে- বাংলা অব্যয় শব্দ, তৎসম অব্যয় শব্দ এবং বিদেশি অব্যয় শব্দ।
১. বাংলা অব্যয় শব্দ : আর, আবার, ও, হঁ্যা, না ইত্যাদি।
২. তৎসম অব্যয় শব্দ : যদি, যথা, সদা, সহসা, হঠাৎ, অর্থাৎ, দৈবাৎ, বরং, পুনশ্চ, আপাতত, বস্তুত ইত্যাদি। এবং’ ও ‘সুতরাং তৎসম শব্দ হলেও বাংলায় এগুলাের অর্থ পরিবর্তিত হয়েছে। সংস্কৃতে ‘এবং’ শব্দের অর্থ এমন, আর ‘সুতরাং’অর্থ অত্যন্ত, অবশ্য। কিন্তু এবং = ও (বাংলা), সুতরাং = অতএব (বাংলা)।
৩. বিদেশি অব্যয় শব্দ : আলবত, বহুত, খুব, শাবাশ, খাসা, মাইরি, মারহাবা ইত্যাদি।
বিবিধ উপায়ে গঠিত অব্যয় শব্দ
১. একাধিক অব্যয় শব্দযােগে : কদাপি, নতুবা, অতএব, অথবা ইত্যাদি।
২, আনন্দ বা দুঃখ প্রকাশক একই শব্দের দুইবার প্রয়ােগে : ছি ছি, ধিক্ ধিক্, বেশ বেশ ইত্যাদি।
৩. দুটি ভিন্ন শব্দযােগে : মােটকথা, হয়তাে, যেহেতু, নইলে ইত্যাদি।
৪. অনুকার শব্দযােগে : কুহু কুহু, গুন গুন, ঘেউ ঘেউ, শন শন, ছল ছল, কন কন ইত্যাদি।
অব্যয়ের প্রকারভেদ অব্যয় প্রধানত চার প্রকার :
১. সমুচ্চয়ী,
২. অনন্বয়ী,
৩. অনুসর্গ,
৪. অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়।
১. সমুচ্চয়ী অব্যয় : যে অব্যয় পদ একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের অথবা বাক্যস্থিত একটি পদের। সঙ্গে অন্য একটি পদের সংযােজন, বিয়ােজন বা সংকোচন ঘটায়, তাকে সমুচ্চয়ী অব্যয় বা সম্বন্ধবাচক অব্যয় বলে।
ক. সংযােজক অব্যয়
(i) উচ্চপদ ও সামাজিক মর্যাদা সকলেই চায়। এখানে ‘ও’ অব্যয়টি বাক্যস্থিত দুটি পদের সংযােজন করছে।
(ii) তিনি সৎ, তাই সকলেই তাকে শ্রদ্ধা করে। এখানে ‘তাই’ অব্যয়টি দুটি বাক্যের সংযােজন ঘটাচ্ছে।
আর, অধিকন্তু, সুতরাং শব্দগুলােও সংযােজক অব্যয়।
খ. বিয়ােজক অব্যয়
(i) হাসেম কিংবা কাসেম এর জন্য দায়ী। | এখানে ‘কিংবা’ অব্যয়টি দুটি পদের (হাসেম এবং কাসেমের) বিয়ােগ সম্বন্ধ ঘটাচ্ছে।
(ii) মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন'। এখানে ‘কিংবা’ অব্যয়টি দুটি বাক্যাংশের বিয়ােজক।
আমরা চেষ্টা করেছি বটে, কিন্তু কৃতকার্য হতে পারিনি। এখানে কিন্তু’ অব্যয় দুটি বাক্যের বিয়ােজক। বা, অথবা, নতুবা, না হয়, নয়তাে শব্দগুলাে বিয়ােজক অব্যয়।
গ. সংকোচক অব্যয় : তিনি বিদ্বান, অথচ সৎ ব্যক্তি নন। এখানে ‘অথচ অব্যয়টি দুটি বাক্যের মধ্যে ভাবের সংকোচ সাধন করেছে। কিন্তু, বরং শব্দগুলােও সংকোচক অব্যয়।
ঘ. অনুগামী সমুচ্চয়ী অব্যয় : যে, যদি, যদিও, যেন প্রভৃতি কয়েকটি শব্দ সংযােজক অব্যয়ের কাজ করে থাকে। তাই তাদের অনুগামী সমুচ্চয়ী অব্যয় বলে। যেমন
১. তিনি এত পরিশ্রম করেন যে তার স্বাস্থ্যভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা আছে।
২. আজ যদি (শর্ত বাচক) পারি, একবার সেখানে যাব।
৩. এভাবে চেষ্টা করবে যেন কৃতকার্য হতে পার।
২. অনন্বয়ী অব্যয় : যে সকল অব্যয় বাক্যের অন্য পদের সঙ্গে কোনাে সম্বন্ধ না রেখে স্বাধীনভাবে নানাবিধ ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়, তাদের অনন্বয়ী অব্যয় বলে। যেমন
ক. উচ্ছ্বাস প্রকাশে মরি মরি! কী সুন্দর প্রভাতের রূপ।
খ. স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতি জ্ঞাপনে : হ্যা, আমি যাব। না, আমি যাব না।
গ. সম্মতি প্রকাশে : আমি আজ আলবত যাব। নিশ্চয়ই পারব।
ঘ. অনুমােদনবাচকতায় : আপনি যখন বলছেন, বেশ তাে আমি যাব।
ঙ. সমর্থনসূচক জবাবে : আপনি যা জানেন তা তাে ঠিকই বটে।
চ. যন্ত্রণা প্রকাশে : উঃ! পায়ে বড্ড লেগেছে। নাঃ! এ কষ্ট অসহ্য।
ছ. ঘৃণা বা বিরক্তি প্রকাশে : ছি ছি, তুমি এত নীচ! কী আপদ! লােকটা যে পিছু ছাড়ে না।
জ, সম্বােধনে ; “ওগাে, আজ তােরা যাস নে ঘরের বাহিরে।
ঝ, সম্ভাবনায় : ‘সংশয়ে সংকল্প সদা টলে পাছে লােকে কিছু বলে।
ঞ. বাক্যালংকার অব্যয় : কয়েকটি অব্যয় শব্দ নিরর্থকভাবে ব্যবহৃত হয়ে বাক্যের শােভাবর্ধন করে, এদের বাক্যালংকার অব্যয় বলে। যেমন
১. কত না হারানাে স্মৃতি জাগে আজও মনে।
২. হায়রে ভাগ্য, হায়রে লজ্জা, কোথায় সভা, কোথায় সজ্জা।
৩. অনুসর্গ অব্যয় : যে সকল অব্যয় শব্দ বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের বিভক্তির ন্যায় বসে কারকবাচকতা প্রকাশ করে, তাদের অনুসর্গ অব্যয় বলে। যথা- ওকে দিয়ে এ কাজ হবে না। (দিয়ে অনুসর্গ অব্যয়)। অনুসর্গ অব্যয় ‘পদান্বয়ী অব্যয়’ নামেও পরিচিত।
অনুসর্গ অব্যয় দুই প্রকার :
ক. বিভক্তিসূচক অব্যয় এবং
খ. বিভক্তি রূপে ব্যবহৃত অনুসর্গ।
৪. অনুকার অব্যয় : যে সকল অব্যয় অব্যক্ত রব, শব্দ বা ধ্বনির অনুকরণে গঠিত হয়, সেগুলােকে অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয় বলে। যথা
বজ্রের ধ্বনি- কড় কড়
মেঘের গর্জন – গুড় গুড় বৃষ্টির তুমুল শব্দ – ঝম ঝম
সিংহের গর্জন – গর গর স্রোতের ধ্বনি – কল কল।
ঘােড়ার ডাক – চিহি চিহি বাতাসের গতি - শন শন
কাকের ডাক কা কা। শুষ্ক পাতার শব্দ - মর মর
কোকিলের রব - কুহু কুহু নূপুরের আওয়াজ - রুম ঝুম
চুড়ির শব্দ - টুং টাং অনুভূতিমূলক অব্যয়ও অনুকার অব্যয়ের শ্রেণিভুক্ত। যথা
আঁ আঁ (প্রখরতাবাচক), আঁ খাঁ (শূন্যতাবাচক), কচ কচ, কট কট, টল মল, ঝল মল, চক চক, ছম ছম, টন। টন, খট খট ইত্যাদি।
ক. অব্যয় বিশেষণ : কতগুলাে অব্যয় বাক্যে ব্যবহৃত হলে নাম-বিশেষণ, ক্রিয়া-বিশেষণ এবং বিশেষণীয় বিশেষণের অর্থবাচকতা প্রকাশ করে থাকে। এদের অব্যয় বিশেষণ বলা হয়। যথা
নাম-বিশেষণ : অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ।
ভাব-বিশেষণ : আবার যেতে হবে।
ক্রিয়া-বিশেষণ : অন্যত্র চলে যায়।
খ. নিত্য সম্বন্ধীয় অব্যয় : কতগুলাে যুগশব্দ পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল, সেগুলাে নিত্য সম্বন্ধীয় অব্যয় রূপে পরিচিত। যেমন : যথা-তথা, যত-তত, যখন-তখন, যেমন-তেমন, যেরূপ-সেরূপ ইত্যাদি। উদাহরণ-যথা ধর্ম তথা জয়। যত গর্জে তত বর্ষে না।
গ. ত (সংস্কৃত তস্) প্রত্যয়ান্ত অব্যয় : এরকম তৎসম অব্যয় বাংলায় ব্যবহৃত হয়। যথা – ধর্মত বলছি। দুর্ভাগ্যবশত পরীক্ষায় ফেল করেছি। অন্তত তােমার যাওয়া উচিত। জ্ঞানত মিথ্যা বলিনি।
একই অব্যয় শব্দের বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার
১. আর – পুনরাবৃত্তি : অর্থে ও দিকে আর যাব না।
নির্দেশ অর্থে : বল, আর কী চাও?
নিরাশায় : সে দিন কি আর আসবে?
বাক্যালংকারে : আর কি বাজবে বাঁশি?
২. ও - সংযােগ অর্থে : করিম ও রহিম দুই ভাই।
সম্ভাবনায় : আজ বৃষ্টি হতেও পারে।
তুলনায় : ওকে বলাও যা, না বলাও তা।
স্বীকৃতি জ্ঞাপনে : খেতে যাবে? গেলেও হয়।
হতাশা জ্ঞাপনে : এত চেষ্টাতেও হলাে না।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ। আশা করি আমাদের আজকের এই আরটিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি ভালো লাগে তাহলে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানিয়ে দাও। আর এই রকম নিত্য নতুন আরটিকেল পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইট টি ভিজিট করুন ধন্যবাদ। পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি উদাহরণ সহ লিখ, অব্যয় পদ কাকে বলে, বিশেষ্য পদ কাকে বলে, পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি, বিশেষণ পদ কাকে বলে, পদ কাকে বলে উদাহরণ সহ পদের শ্রেণীবিভাগ, বিশেষ্য পদ কাকে বলে উদাহরণ সহ, পদ কাকে বলে কত প্রকার ও কী কী, পদ কাকে বলে কত প্রকার, বিশেষ্য পদ কাকে বলে উদাহরণসহ বিশেষ্য পদের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করো, বিশেষ্য ও বিশেষণ পদ কাকে বলে, নাম পদ কাকে বলে, পদ কাকে বলে কত প্রকার কি কি, অব্যয় পদ কাকে বলে উদাহরণ, সর্বনাম পদ কাকে বলে, পদ কাকে বলে পদের শ্রেণীবিভাগ, পদ কাকে বলে উদাহরণ দাও, সরল পদ কাকে বলে, সাদৃশ্য পদ কাকে বলে, সমষ্টিগত সম্পদ কাকে বলে, অব্যয় পদ কাকে বলে, বিশেষণ পদ কাকে বলে উদাহরণ, পদ কাকে বলে ও কি কি