ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় | ফ্রিল্যান্সিং কেন করব
আপনি কি ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় এই দুটো প্রশ্নের উত্তর জানতে চান? যদি না জেনে থাকেন ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল টি ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে আপনাকে কিছুটা ধরনা দিবে। তার পাশাপাশি আপনি আরো জানতে পারবেন আমরা ফ্রিল্যান্সিং কেন করব সেই বিসয়ে। যদি ফ্রিল্যান্সিং কেন করব এই প্রশ্ন টি আপনার মনে থাকে তাহলে আপনি জানতে কি কি কারনে ফ্রিল্যান্সিং করা ভালো। তো চল আমরা আমাদের মুল পোষ্টের দিকে ধাবিত হয়।
ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ফ্রিল্যান্সিং কেন করব |
ফ্রিল্যান্সিং কি | ফ্রিল্যান্সার কে | ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায়
ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুনঃ- তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্সার হতে চান। এই Website এ পর্যন্ত ইন্টারনেটে আয়ের যে কথাগুলি বলা হয়েছে তাতে আপনি সস্তুষ্ট নন। সেক্ষেত্রে আপনার প্রথম প্রশ্ন, ফ্রিল্যান্সিং কি ? (What is Freelancing)? ফ্রিল্যান্সার কাকে বলে ? সবাই কি ফ্রিল্যান্সার হতে পারে ? কেউ কেউ কবি নন, সকলেই কবি। একথার সাথে মিল রেখে বলতে পারেন কেউ কেউ Freelancer নন, সকলেই ফ্রিল্যান্সার। বিশ্বাস করা কঠিন।
তাহলে উদাহরন দিয়ে দেখা যাক। আপনি কাঠের একটি Bookself তৈরী করতে চান। সেটা কোন মাপের করবেন, কি দিয়ে তৈরী করবেন, দেখতে কেমন হবে পরিকল্পনা করলেন। এরপর গেলেন একজন কাঠমিস্ত্রির কাছে । তাকে কাজটি বুঝিয়ে দিলেন । দাম ঠিক করলেন। কাজটি কখন পাবেন জেনে নিলেন। নির্দিষ্ট দিনে টাকা দিয়ে তৈরী বুকসেলফ নিয়ে এলেন। এখানে কাঠমিস্ত্রী ফ্রিল্যান্সার, আপনি তার ক্লায়েন্ট। Freelancing কাজের সাধারন বৈশিষ্টগুলি এখানে বিদ্যমান।
ব্যাখ্যা করে দেখা যাক;
- আপনি নির্দিষ্ট কাঠমিস্ত্রি বেছে নিয়েছেন কারন আপনি জানেন সে কাজটি করতে পারবে । সে তার নিজের কাজে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ।
- আপনি যেভাবে কাজ করতে চান সেটা সে বুঝেছে। সেভাবে কাজ হবে বলে আপনাকে নিশ্চয়তা দিয়েছে। এবং আপনি তার কথার ওপর আস্থা রেখেছেন। তার আগের কাজ দেখে আপনি নিশ্চিত হয়েছেন সে কাজটি করতে ব্যর্থ হবে না।
- সে তুলনামুলক কম টাকায় কাজ করবে বলে আপনাকে জানিয়েছে। নইলে আপনি অন্য কারাে কাছে যেতেন খরচ কমানাের জন্য।
- সে কাজটি সময়মত, ঠিকভাবে করেছে। আপনি সন্তুষ্ট হয়েছেন বলেই টাকা দিয়ে কাজটি নিয়েছেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর সাথে ফ্রি বা মুক্ত শব্দটি লক্ষ্যনীয়। সে আপনার কাজ করতে বাধ্য না । তার হাতে আরাে লাভজনক কাজ থাকলে সে আপনার কাজ করতে রাজী হত না । আপনি তাকে বাধ্য করতে পারতেন না। এখন নিশ্চয়ই Freelancing বিষয়টি কিছুটা বােধগম্য হয়েছে।
ফ্রিল্যান্সার তিনিই যিনি নিজের সুবিধে বিবেচনা করে ঠিক করেন কোন কাজ করবেন কি করবেন না। করবেন সিদ্ধান্ত নিলে সময়মত কাজ করেন। তার কাজের পারিশ্রমিক হিসেব করেন তার দক্ষতা এবং শ্রমের ওপর । তিনি বিনা টাকায় কাজ করেন না, আবার যেটা তার প্রাপ্য সেখানে ছাড় দেন না।
কাজেই তিনি একজন Freelancer, যে কাজ করছেন সেটা ফ্রিল্যান্সিং। অনেকে বাংলায় বলেন মুক্তপেশাজীবি ।। এবার চারিদিকে লক্ষ করুন। দেখবেন প্রত্যেকেই কোন না কোনভাবে ফ্রিল্যান্সার। একজন ছাত্র Job ছাড়াই যখন কোন কাজ করে অর্থ উপার্জন করেন তিনি তখন ফ্রিল্যান্সার। একজন চাকুরীজীবি তার অফিসের কাজের বাইরে কিছু করে আয় করলে তিনি ফ্রিল্যান্সার।
আবার কোন কোন পেশা পুরােপুরি ফ্রিল্যান্সারের। একজন লেখক, শিল্পী, অভিনেতা সবাই কাজ করেন নিজের পছন্দমত । তারা সবাই ফ্রিল্যান্সার। একটি খটকা এখানে থেকে গেছে। যখনই ফ্রিল্যান্সিং এর কথা বলা হয় তখনই ইন্টারনেটের কথা বলা হয়।
এদের কারাে কাজের সাথেই ইন্টারনেটের সরাসরি সম্পর্ক নেই। ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে সবচেয়ে বড় ভুল এটাই। এই ভুল উল্লেখ করার জন্যই এসব প্রসংগ। ইন্টারনেটে যখন Freelancing কাজ করবেন তখন তাকে নির্দিষ্টভাবে Online Freelancing বলতে পারেন।
তিনি সবসময় শুধুমাত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ পাবেন এবং করবেন এটা ধরে নেয়ার কোন কারন নেই। একজন Graphics Designer অনলাইন ফ্রিল্যান্সার। সবসময় সেকাজ করেন। তাকে যদি একটি বিজ্ঞাপন ডিজাইনের জন্য হাজার টাকার দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় তাহলে কি তিনি সেটা করবেন না সেটা ইন্টারনেটের না বলে!
অবশ্যই কাজটি করবেন। অনলাইনের বাইরের কাজকে অফলাইন বা Local Freelancing যদি বলা হয় তাহলে একটা বিষয় স্পষ্ট করে নিন, লােকাল ফ্রিল্যান্সিং Online Freelancing এর বড় একটি অংশ। অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর আগেই এটা শুরু করতে হয়, পরবর্তীতে নানা কারনে ফ্রিল্যান্সারকে এটা চালিয়ে যেতে হয় ।
বিষয়টি এতটাই গুরুত্বপুর্ন যে Local Freelancing সম্পর্কে আরাে বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রয়ােজন। সেটা আগে দেখে নেয়া যাক।
(যিনি ফ্রিল্যান্সিং করেন তিনি ফ্রিল্যান্সার এভাবেই শব্দগুলি প্রচলিত। অনেক Freelancer নিজেকে ফ্রিল্যান্সার না বলে ফ্রিল্যান্স শব্দ ব্যবহার করেন। সে অর্থে Freelance শব্দটি কাজ এবং ব্যক্তি দুইই বুঝায়। দুটিই ঠিক।)। ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
ফ্রিল্যান্সিং কেন করব
ফ্রিল্যান্সার কেন হবেন এবং ফ্রিল্যান্সিং কেন করব ? ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক ভাল ভাল কথা এরই মধ্যে বলা হয়ে গেছে। তারপরও প্রশ্ন করতে পারেন, সেগুলি সমাধানের পথ কি Freelancing ?
শুরু থেকে যেভাবে বক্তব্য তুলে ধরা হচ্ছে সেদিকে আরেকবার দৃষ্টি দিন । কখনােই আপনাকে বলা হচ্ছে না আপনি অমুক কাজ করুন। প্রতিটি বিষয়ের ভাল এবং মন্দ, সুবিধা এবং অসুবিধা তুলে ধরা হচ্ছে। সেগুলি বিবেচনার দায়িত্ব আপনার।
এখনে যে কথাগুলি বলা হয়েছে সেগুলিকে অভ্রান্ত ধরে নেবেন না। রামকৃষ্ণের সেই বিখ্যাত কথাটি মনে আছে কি ? যত মত তত পথ । আপনি যত জানবেন, তত নতুন নতুন পথ খুলে যাবে। সব মতই গুরুত্বপুর্ন। এরমধ্যে প্রয়ােজনীয় মত বাছাই করার দায়িত্ব আপনার নিজের ।
একজনের জন্য যা গ্রহনযােগ্য আরেকজনের জন্য সেটা নাও হতে পারে। সাধারনভাবে Freelancer হওয়ার পক্ষের যুক্তিগুলি দেখে নিন তাহলে;
১. নিজের কর্মসংস্থানের উপায় ।
যদি ফ্রিল্যান্সার না হন তাহলে আপনি কি করতে পারেন ? Job, বা ব্যবসা, বা অন্য কিছু। যদি এরই মধ্যে এদের কোনটির সাথে সংশ্লিষ্ট না হন, যদি শুরু করতে হয় তাহলে জেনে নিন, এদের কোনটিই । সহজ না। সরকারী হিসেবে বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লক্ষের মত, বেসরকারী কিছু হিসেব বলে প্রায় ৩ কোটি কিংবা আরাে বেশি ।
আপনি হয়ত তাদের একজন। যেপথেই যেতে চান না কেন, এই বিশাল সংখ্যার সকলে আপনার প্রতিযােগি। Job পাওয়ার সময় কি আপনার প্রতিযােগিদের পেছনে ফেলে Job পেতে আশা করেন! অনেকে করেন না। বাংলাদেশে অনেকেই শিক্ষা জীবন শেষ করে, কয়েক বছর সম্ভাব্য সবকিছু চেষ্টা করে একসময় চাকরী পাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছেন। সেখানে Freelancing আপনাকে কর্মসংস্থানের পথ দেখাতে পারে।
২. বর্তমান আয়ের সাথে অতিরিক্ত আয় যােগ করা
আপনি বর্তমানে কিছু করেন । হয়ত সেই আয়ে কোনভাবে চলতেও পারেন । আগামীতে চলতে পারবেন সেই নিশ্চয়তা কি আছে ? অনেকের জন্যই নেই। নিজের অভিজ্ঞতায় গত দুই দশকে ঢাকা শহরে বাড়িভাড়া ১০ গুন বাড়তে দেখেছি । বর্তমানে বৃদ্ধির হার আরাে বেশি।
সেইসাথে যাতায়াত, খাদ্যদ্রব্য, চিকিৎসা খরচ, সন্তান বা । অন্যদের পড়াশােনার খরচ যােগ করলে যে হিসেব দেখা যায় সেটা মাথা খারাপ করার মত । এই সমস্যা সমাধানের পথ কেউ দেখাচ্ছে না। আপনি নিজেই পথ দেখে নিতে পারেন ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে।
৩. বিনিয়ােগ ছাড়াই ব্যবসা।
আপনি ব্যবসা করতে চান। বড় ধরনের অর্থ বিনিয়ােগ করা প্রয়ােজন। ব্যবসায় লাভ এবং ক্ষতি দুটিই সম্ভাবনা, কাজেই ক্ষতির ঝুকি থাকেই। সেইসাথে রাজনৈতিক, অবকাঠামােগত এবং আরাে বহুবিধ কারন রয়েছে বাংলাদেশে যা ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে ।
ফ্রিল্যান্সিংকে ব্যবসা হিসেবে কল্পনা করলে সেটা বিনা টাকার ব্যবসা। কথাটা এভাবে বলে হয়ত ফ্রিল্যান্সিংকে ছােট করা হয়। এজন্য মেধা, শ্রম, সময় ইত্যাদি যাকিছু বিনিয়ােগ করতে হয় যার মুল অর্থের চেয়ে বেশি। তারপরও অন্তত সরাসরি অর্থ বিনিয়ােগ করতে হচ্ছে না। অনেকের কাছে অর্থ বিনিয়ােগই সবচেয়ে বড় সমস্যা।
৪. সব ধরনের পরামর্শ, সহায়তা পাওয়ার সুযােগ।
অনেক দেশে সরকার যখন সরাসরি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন না তখন নানাভাবে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করেন। প্রযুক্তিগত পরামর্শ, সহজে অর্থঋন ইত্যাদি দেয়া হয় যেন কেউ সহজেই প্রতিষ্ঠান গড়ে নিজের এবং আরাে অন্যান্যদের কর্মসংস্থানের সুযােগ করে দিতে পারেন।
আমেরিকায় ১০০ কোটি Dollar আয় করা কোম্পানীকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য করা হয় না। ধরে নেয়া হয় এই পরিমান আয়ের যােগ্যতা যাদের আছে তারা সেই অর্থ বিনিয়ােগ করে আরাে বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের যােগ্যতা রাখে।
এছাড়া ইন্টারনেটে রয়েছে বহু ওয়েবসাইট, ব্লগ, ফোরাম ইত্যাদি। সবাই বিনামুল্যের পরামর্শ দিচ্ছেন। কিছু শিখতে চান, ইন্টারনেটে টিউটোরিয়ালের অভাব নেই। একথায়, ফ্রিল্যান্সিং কাজ শেখার ইচ্ছে করাটাই যথেষ্ট। এরপর কি করতে হবে, কিভাবে করতে হবে জানা কোন সমস্যা না ।
৫. নিজেই নিজের বস
যার চাকরী করার অভিজ্ঞতা আছে তিনি জানেন, চাকরী সুখকর বিষয় না। বিশেষ করে যদি মানানসই। বস না পান। সরকারী JOBS হলে বস মনে করবেন তার পরের সবাই তার ক্রীতদাস, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের বস মনে করবেন লাঙ্গলের সাথে গরু জোতা হয়েছে, তাকে ইচ্ছেমত খাটানাে যাক । আপনার কিছু বলার সুযােগ নেই। এটা একেবারে খারাপের উদাহরন। মধ্যম পর্যায়ের উদাহরন হচ্ছে, আপনি।
কাজে ফাকি দিলেন কি-না, কাকে ফোন করলেন, কেন করলেন ইত্যাদি খােজ রাখা। আপনার ব্যক্তিগত বলে কিছু নেই। তারথেকে ভাল উদাহরন হচ্ছে । যাকগে। একজন Freelancer নিজেই নিজের বস । কেউ আপনাকে তদারক করছে না। কাজ করার সময় কেউ ঘাড়ের ওপর থেকে উকি দিয়ে খবরদারি করছে না। আপনি কাজ করছেন নিজের দায়িত্বে। আপনি জানেন কখন, কতটুকু কাজ করলে ক্লায়েন্টকে সময়মত কাজ বুঝিয়ে দিতে পারবেন। সেই নিয়ম মেনে। চলাই যথেষ্ট।
৬. নিজের পছন্দমত কাজ করার সুযােগ।
চাকরী করার সময় কি আপনার পছন্দের কাজ আপনাকে দেয়া হয় । নিশ্চয়ই না। আপনি যে কাজ করতে একেবারেই পছন্দ করেন না সেকাজ করতে বললেও আপনার আপত্তি করার সুযােগ নেই। এমনকি আপনার মুল দায়িত্বের বাইরে হলেও। একজন সৎ ব্যক্তি, যিনি ঘুষ সহ্য করতে পারেন না, তাকে কোন কাজ করিয়ে আনার জন্য ঘুষ দেয়ার দায়িত্ব দেয়া স্বাভাবিক ঘটনা। বাধ্য হয়ে এধরনের কাজ করা। নীতিবান ব্যক্তির কাছে সহ্য করা কঠিন। Freelancer এধরনের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। যে কাজ পছন্দ কেবলমাত্র সেটাই করবেন, যা পছন্দ করবেন না সেখান থেকে দুরে থাকবেন। সিদ্ধান্ত আপনার ।।
৭. পছন্দমত সময়ে কাজ করা।
বাংলাদেশে সরকারী Job করলে হরতালের দিন অফিস করা বাধ্যতামুলক। যারা সেটা করেন তারা জানেন বিষয়টি কি । জীবনের ঝুকিও নিতে হয় । হরতালের দিনে অফিস যাওয়ার সময়ে একটি বিখ্যাত ঘটনা, একজনকে রাজপথে জামাকাপড় খােলা হয়েছিল। কিংবা ঝড় বৃষ্টি, কিংবা যানজটে আটকা পড়া, কিংবা প্রিয় দলের খেলার দিন । আপনি ইচ্ছে করলেই কি অফিস বাদ দিতে পারেন ?
পারেন না। সেটা করলে কৈফিয়ত দিতে হয়। যদিও সে কারনে আপনার কাজে কোন ত্রুটি হয়নি। অতিরিক্ত কাজ করে সেটা পুরন করেছেন। তারপরও, কিছু বসের ক্ষমতা দেখানাের বাতিক থাকেই । Freelancer হিসেবে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্ত । কাজ সময়মত শেষ করতে হবে এটা আপনি জানেন, এরবেশি জানা প্রয়ােজন নেই। একদিন ঘুমিয়ে আরেকদিন করলেও কেউ আপত্তি করছে না।
৮. যােগ্যতার সর্বোচ্চ ব্যবহার
আপনি কি আপনার যােগ্যতাকে পুরােপুরি ব্যবহার করেন ? হয়ত অবাক হবেন বিপুল সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে সত্যিকারের উত্তর হবে, না। অনেকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতেও চান না। অধিকাংশ মানুষ চাকরী বা ব্যবসা করাকে টাকা আয়ের কারন বলেই ভাবেন। সত্যজিৎ রায়ের সেই গল্পের কথা কি মনে আছে, একজন চাকরী ছেড়ে থিয়েটারে গেলেন, আরেকজন থিয়েটার থেকে চাকরীতে এলেন ।
দুজনেই খুশি তাদের স্বপ্নপুরন হল বলে, আর আশ্চর্জজনকভাবে একজন আরেকজনের যায়গা দখল করলেন। আগ্রহ নিয়ে পড়াশােনা করেছেন এক বিষয়ে, বিশেষ কিছু হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন অথচ বাস্তবতার চাপে অন্য ধরনের কাজ করছেন। পদার্থবিদ্যায় পড়াশােনা করে হয়েছেন ব্যাংকের কেরানী (বর্তমানে কেরানী শব্দের প্রচলন নেই) কিংবা কোন Compani বিক্রয় প্রতিনিধি । Freelancing আপনাকে এই বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
৯. সবার সাথে সম্পর্ক রাখা।
আপনি আডড়া দিতে পছন্দ করেন, চাকরীর কারনে আডডা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফ্রিল্যান্সারের সে সমস্যা নেই। স্বল্পং আদ্যানেই এমনভাবে সাজিয়ে নিন যেন তার মাধ্যমে Freelancer হিসেবে নিজের পরিচিতি বাড়ানাে যায়, তার মাধ্যমে কাজ পাওয়া যায়।
১০.সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার
Dhaka শহরে যারা বাস করেন তাদের সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম যানজট। অনেককে কর্মস্থলে যেতে দুঘন্টা, ফিরতে দুঘন্টা সময় ব্যয় করতে হয়। অর্থ খরচ এবং অন্যান্য হয়রানির বিষয়তাে আছেই। এই সময় কারোই কোন উপকারে আসে না। অনলাইন Freelancing কাজের সময় আপনাকে কোথাও যেতে হচ্ছে না বলে সময়কে কাজে লাগানাে সম্ভব। বেশি সংখক মানুষ এতে যােগ দিলে পথের যানজটও কমার সম্ভাবনা।
১১. পছন্দমত যায়গায় বাস করা
বাংলাদেশে শতকরা প্রায় ১০ জন মানুষ বাস করেন ঢাকা শহরে । এর ফল কি উল্লেখ না করলেও চলে। Dhaka বসবাসের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে অনুপযােগি শহরে পরিনত হয়েছে। দুষিত পরিবেশ, যানজট, বিপুল খরচ, ভেজাল খাবার, ছিনতাই, কোলাহল, অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার এগুলি ঢাকার পরিচিতিতে পরিনত হয়েছে।
৫০০ বছরের ঐতিহ্যবাহি এই শহর নিয়ে মানুষ গর্ব করতে পারত, অথচ সেই শহর ধ্বংশের মুখে। অনেকে সরাসরি বলছেন আগামীতে মানুষ এই শহর ছেড়ে পালাবে। কেউ কেউ সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এরপরও কর্মসংস্থানের প্রধান যায়গা ঢাকা । অনেকে এমন পেশায় জড়িত যারপক্ষে ঢাকার বাইরে যাওয়া সম্ভব না। আসলেই কি! আরেকবার ভালকরে ভেবে দেখুন।
যে কোন Freelancing কাজ আপনাকে ঢাকা থেকে বাইরে থাকার সুযােগ করে দিতে পারে। ঢাকায় বেশি টাকা গােনা যায় একথা ঠিক, খরচের সাথে মেলানাের পর। হিসেব করে দেখেছেন কি? ১০ হাজার টাকা আয় করলে থাকার জন্য পছন্দমত একটা ঘর ভাড়া করতে পারেন না। অথচ অন্য শহরে এই পরিমান আয় করে বাড়িভাড়া দিয়ে, টাটকা খাবার, নির্মল আবহাওয়ায় থাকতে পারেন। সেইসাথে পরিবার, বন্ধুবান্ধব এর সাথে থাকার সুযােগ। আপনি এবং আপনার মত আরাে কয়েকজন সিদ্ধান্ত নিলে দেশের অন্য এলাকাও ক্রমে কর্মচঞ্চল হয়ে উঠতে পারে।
এই কারনগুলির বাইরে আরাে বহু কারনের কথা আপনি নিজেই খুজে পেতে পারেন। প্রত্যেকেরই কোন না কোন বিষয়ে অসন্তুষ্টি থাকে, সমস্যা থাকে । Freelancing কাজটি এমনই যেখানে প্রত্যেকেই নিজের পছন্দমত কাজ পেতে পারেন।
আরেকটা কথা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। প্রশ্ন করতে পারেন, Freelancing সম্পর্কে যত প্রশংসা করা হচ্ছে, যে কোন বিষয়ে পছন্দমত কাজ, বাস্তবে সবাই যদি Freelancer হতে চেষ্টা করে সেখানেও তাে ভিড় জমে যাবে। সেখানেও সমস্যা তৈরী হবে।
যারা ফ্রিল্যান্সিং পর্যালােচনা করেন তাদের বক্তব্য, এই ব্যবসা এখনাে পুরােপুরি বিকাশলাভ করেনি। ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। কাজের ধরন পাল্টে যাচ্ছে। বহু কোম্পানী ফ্রিল্যান্সারকে দিয়ে কাজ করাতে আগ্রহি হচ্ছেন। একসময় স্থায়ী চাকরীর সুযােগ কমবে, Freelancing কাজ বাড়বে।
আর বর্তমানে Freelance Website প্রতিদিন যে হাজার হাজার কাজ জমা হয় তারমধ্যে পছন্দমত কাজ পাওয়া অসম্ভব। আগে শুরু করা মানে এগিয়ে থাকা। যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, শুরু করতে পারেন এখনই, আগামীতে ফল পাবেন ততদিনে কাজের অভাব হবে না। ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
অনলাইন এবং লােকাল ফ্রিল্যান্সিং
এই পোষ্টের মুল বক্তব্য অনলাইন Freelancing বিষয়ে তথ্য তুলে ধরা । সেকারনেই সরাসরি বক্তব্য, যদি অনলাইন Freelancer হতে চান তাহলে শুরু করুন লােকাল Freelancer হিসেবে কাজ দিয়ে । কিছু উদাহরন দেখা যাক। আপনি গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে চান। এজন্য যেখানে কাজ পাওয়া যাবে সেখানে সদস্য হলেন, কাজের জন্য আবেদন (বিড) করলেন । যার কাজ তিনি কি আপনাকে কাজ দেবেন ? কাজ দেয়ার আগে ফ্রিল্যান্সারের যে বৈশিষ্টগুলি তিনি লক্ষ করেন তা আগে উল্লেখ করা হয়েছে। আরেকবার দেখে নিন ।
১. আপনি সেই কাজে (Skill) দক্ষ কি-না সেটা নিশ্চিত করতে হবে ।
২. আপনার অভিজ্ঞতা কতটুকু জানাতে হবে। আপনার আগের করা কাজগুলি দেখে তিনি আপনার দক্ষতা এবং Experience সম্পর্কে ধারনা পাবেন।
৩. আপনি কাজ সময়মত করে দিয়েছেন এমন কোন উদাহরন তিনি দেখতে চাইবেন।
৪. আপনি কাজের সাথে মানানসই টাকা চেয়েছেন কি-না সেটা পর্যালােচনা করবেন। তার বাজেটের চেয়ে বেশি চাইলে তিনি কাজ দেবেন না, একেবারে কম চাইলে ধরে নেবেন আপনি উচুমানের কজের যােগ্য নন।
বিষয়গুলি একসাথে করলে যা দাড়ায়, আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা দুইই থাকতে হবে। আপনি হয়ত নিজের দক্ষতা সম্পর্কে নিশ্চিত। সেই নিশ্চয়তা ক্লায়েন্টকেও দিতে হবে । কাজ না করে কি Experience দেখাতে পারেন ?
দক্ষতার বিষয়েও খুব সহজে নিশ্চিত হবেন না। আপনি যখন Graphic Design শিখেছেন তখন আপনাকে যা করতে বলা হয়েছে ঠিকভাবে করেছেন। আপনার মনে হয়েছে আপনি দক্ষতা লাভ করেছেন। আপনার দক্ষতা কি একবার যাচাই করে দেখবেন কাজটি খুব সহজ।
আপনার Design টি বিভিন্ন জনকে দেখিয়ে মন্তব্য করতে বলুন। অনায়াসে বলা যায় অনেকের মন্তব্য আপনার পছন্দ হবে না। প্রত্যেকেই কিছু একটা ভুল তুলে ধরবেন, অন্য কি করলে ভাল হত সেকথা বলবেন (একেবারে পরিচিত কেউ আপনাকে খুশি রাখার জন্য মুখে প্রশংসা করতে পারে।
এধরনের মতামত আপনার ক্ষতি ছাড়া উপকার বয়ে আনে না। একটা কথা স্পষ্টভাবে মনে রাখুন, নিজের উন্নতির পথে সমালােচক যতটা উপকার করতে পারেন প্রশংসাকারী সেটা পারেন না)। কাজেই আপনি যাকে নিখুত কাজ মনে করছেন সেটা নিখুত কাজ না ।
Freelancer হিসেবে যেহেতু আপনাকে বিভিন্ন ধরনের ক্লায়েন্টের কাজ করতে হবে সেকারনে আরেকটি বিষয় এখানে শিখে নিন; প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি, বিচারের ধরন আলাদা। একজন সরল Design পছন্দ করেন আরেকজন পছন্দ করেন।
জটিল, একজন হাল্কা রং পছন্দ করেন আরেকজন পছন্দ করেন উজ্জলতা, একজন সংক্ষেপে বক্তব্য তুলে ধরতে চান আরেকজন চান বিস্তারিত বর্ননা (এই বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশ পাবেন পরের দিকে)। কাজেই শুধুমাত্র গ্রাফিক ডিজাইনে দক্ষ হলেই আপনি দক্ষ Freelance গ্রাফিক ডিজাইনার নন। যতক্ষন পর্যন্ত না আপনি ক্লায়েন্টের চাহিদা বােঝেন।
এই কাজে অভিজ্ঞতার বিকল্প নেই। একজন ক্লায়েন্ট যখন আপনার ডিজাইনের ত্রুটি সংশােধন করবেন তখন তাকে শুধুমাত্র সেই ডিজাইনের বিষয় হিসেবে না দেখে সেখান থেকে সার্বিকভাবে শিক্ষালাভ করা, তাকে অন্য কাজে ব্যবহার করা, এটাই পেশাদারিত্বে লক্ষন। যেকারনে অভিজ্ঞতার সময়কে এতটা গুরুত্ব দেয়া হয় ।
ধরে নেয়া হয় যিনি যত বেশিদিন ধরে কাজ করেছেন তত বেশি ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে, তিনি সহজে কাজ বুঝবেন, ক্লায়েন্টের চাহিদা বুঝবেন। স্থানীয়ভাবে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন না করে সরাসরি অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কাজের চেষ্টা করলে আপনি সহজে কাজ পাবেন না। এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে লােকাল ফ্রিল্যান্সিং ।
নিজের যা শিখেছেন সেটা প্রয়ােগ করার জন্য স্থানীয়ভাবে কাজ খােজ করুন। সেগুলি করার সময় ক্লায়েন্টের দেয়া নির্দেশগুলি মানার চেষ্টা করুন। আরেকবার মনে করিয়ে | দিতে হচ্ছে, যিনি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করাচ্ছেন তিনি নিজে গ্রাফিক ডিজাইনার নন। তিনি এমন ভুল করতে পারেন যা নিয়মের পরিপন্থি। তারপরও টাকা দেবেন তিনি, কাজ হবে তার পছন্দমত ।
একজন দর্জির দোকানের কথা একবার উদাহরন হিসেবে দেখে নিন (বাস্তব ঘটনা)। যিনি প্যান্ট বানাবেন তিনি বললেন তিনি পেছনে দুটি পকেট নেবেন, দর্জি মনে করলেন সেটা সেকেলে, বর্তমানে একটা পকেট মানানসই। তিনি এক পকেট রেখে। প্যান্ট বানালেন। ফলাফল অনুমান করতে পারেন।
এখানে গ্রাফিক Design কে উদাহরন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে নিজের অভিজ্ঞতা সহজে প্রকাশ করা যায় বলে । অন্য কাজের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম একইভাবে কার্যকর। সবসময়ই যার কাজ তার নিজস্ব কিছু বক্তব্য থাকে ।
যিনি কাজ করবেন তার দায়িত্ব সেগুলি সহজে বােঝা, কাজ করে দিয়ে তাকে সন্তুষ্ট রাখা। আরেকটি সত্য এখানে জেনে নিন, Freelancing কাজে আপনি সবসময় ক্লায়েন্টকে সন্তুষ্ট করতে পারেন না। এমন। ক্লায়েন্ট রয়েছেন যিনি কখনােই সন্তুষ্ট হবেন না বলে পন করেছেন, কেউ কেউ সংশােধনের কিংবা পরিবর্তনের সুযােগ দিলে ক্রমাগত সেটা করতেই থাকবেন।
এদের সবকিছুই ফ্রিল্যান্সারের শিক্ষনীয় বিষয়। কাজ শেখার সাথে সাথে ক্লায়েন্ট ব্যবস্থাপনাও শেখা জরুরী। মুল বক্তব্য হচ্ছে, আপনি অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার আগে লােকাল Freelancing শুরু করবেন। এরফলে যে সুবিধেগুলি পাওয়া যাবে সেগুলি সংক্ষেপে এমন;
১. বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা লাভ
শুধুমাত্র কোর্স করে, Training নিয়ে কিংবা নিজে ট্রায়াল দিয়ে বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতালাভ হয় না। বাস্তব অভিজ্ঞতার জন্য প্রয়ােজন কারাে কাজ করা, তার চাহিদা পুরন করা, কোন সমস্যা হলে সেটা ঠিক করা । স্থানীয়ভাবে কাজ করে সেই অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা তুলনামুলক সহজ। অন্যভাবে বললে, প্রয়ােজন অনুযায়ী শেখা যায়। একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের কাজ সুন্দর Design করা। যার কাজ তার উদ্দেশ্য ডিজাইনকে বিশেষ প্রয়ােজন মেটানাে। এই দুটি বিষয় সমন্বয় করার সুযােগ পাওয়া যায় স্থানীয়ভাবে কাজ করে।
২. কাজ করা সহজ
স্থানীয়ভাবে কাজ করা সহজ বিভিন্ন অর্থে । প্রথমত ধরে নেয়া হচ্ছে যার কাজ তিনি আপনার পরিচিত । কাজে ভুল করলে তিনি আপনাকে ভুল ধরিয়ে দেবেন (অনলাইন কাজে অনেকসময়ই ক্লায়েন্ট সেটা। করেন না বিভিন্ন কারনে । নিজের কাজে ব্যস্ত থাকতে পারেন, ফ্রিল্যান্সারকে অনভিজ্ঞ মনে করতে পারেন। ইত্যাদি। তিনি নিজে মাথা ঘামাবেন না বলেই তাে Freelancer ঠিক করেছেন)।
স্থানীয়ভাবে কাজের সময় এই সমস্যা তত প্রকট হয় না। সরাসরি আলােচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযােগ থাকে, সময় বাড়ানাে যায়, কোন কাজ জটিল মনে হলে সেটা অন্য কাউকে দিয়ে নিজে তুলনামুলক সহজ কাজে হাত দেয়া যায় ।
৩. নমুনা জমা করা যায়।
আবারাে গ্রাফিক ডিজাইনকে উদাহরন হিসেবে ধরা যাক। আপনি স্থানীয়ভাবে যে কাজগুলি করেছেন সেগুলি অনলাইন Freelancing কাজের সময় আপনার কাজের নমুনা হিসেবে দেখাতে পারেন। এরফলে আপনার কাজের মান সম্পর্কে তিনি ধারনা পাবেন।
উল্লেখ করা প্রয়ােজন, গ্রাফিক ডিজাইন কিংবা Animation ইত্যাদি কাজে যত সহজে নমুনা দেখানাে যায় অনেক কাজে সেভাবে নমুনা দেখানাের সুযােগ থাকে না। সেক্ষেত্রে যার কাজ করেছেন তারকাছে প্রশংসাপত্র চেয়ে নিতে পারেন। প্রশংসাপত্র সবসময়ই কাজ পেতে সহায়তা করে।
৪. যােগাযােগের দক্ষতা লাভ
ফ্রিল্যান্সিং কাজে যােগাযােগের দক্ষতা খুবই গুরুত্বপুর্ন। অনেকেই মনে করেন কাজ করার চেয়ে কাজ পাওয়া কঠিন। কারন কাজ পাওয়ার জন্য প্রয়ােজন হয় ক্লায়েন্টের সাথে সঠিক যােগাযােগ রক্ষা করা । হঠাত করেই আপনি একাজ শুরু করতে পারেন না। ক্লায়েন্টের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়, তিনি সমালােচনা করলে কিভাবে সেটা গ্রহন করতে হয়, এমনকি কোন কাজ না করতে চাইলে কিভাবে না । বলতে হয় সবকিছুই করতে হয় দক্ষতার সাথে ।
আপনি কোন কারনে কোন ক্লায়েন্টের ওপর বিরক্ত হয়ে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিলে, এমনকি প্রতারিত হয়েছেন মনে করলেও এমনভাবে প্রকাশ করতে হয় যেন আপনি অভদ্র আচরন করেছেন বলার সুযােগ তৈরী হয়। এধরনের পরিচিতি ফ্রিল্যান্সারের পেশার ক্ষতি Local Freelancing আপনাকে এধরনের অভিজ্ঞতালাভের সুযােগ দিতে পারে।
৫. অর্থ উপার্জন
আপনি চেষ্টা করলেই অনলাইন কাজ পেতে শুরু করবেন এটা ধরে নেয়ার কোন কারন নেই। এ বিষয়ে বাস্তবতা হচ্ছে প্রথম কাজ পাওয়ার জন্যই কয়েক মাস চেষ্টা করে যেতে হতে পারে। কারাে ক্ষেত্রে কম কারাে বেশি ।
নিজের আয়ের ব্যবস্থা না থাকলে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। অনেকের সেই সুযােগ নেই, অনেকের কাছে বিষয়টি অসন্মানের। স্থানীভাবে কাজ করার সময় আপনি টাকার বিনিময়ে কাজ করবেন । আয় কম হলেও একে শেখার সময় হিসেবে বিবেচনা করে সেই আয়ে চলতে পারেন।
৬. বিকল্প আয়ের পথ খােলা রাখা
শুরুতেই বলা হয়েছে যিনি চাকরী করেন তিনি অফিসের বাইরে কাজ করে আয় করতে পারেন, অনেকেই সেটা করেন। অনলাইনে কাজ করার সময়ও বিকল্প বা অতিরিক্ত আয়ের পথ খােলা রাখা প্রয়ােজন। Freelancing এর ক্ষেত্রে একটি প্রচলিত শব্দ, ফিষ্ট এবং ফেমিন, বাংলায় বলতে পারেন ভােজ এবং দুর্ভিক্ষ ।
কখনাে এত বেশি কাজ পাওয়া যায় যা করে শেষ করা যায় না, কখনাে আদৌ কাজ পাওয়া যায় না। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রকৃতিক, বছরের বিশেষ সময় ইত্যাদি বিভিন্ন কারনে এটা হয় । লােকাল ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ পাওয়ার সুযােগ খােলা রাখলে দুর্ভিক্ষের সময় নিজের খরচ চালানাে যায় ।
৭. পেশাগত দক্ষতা লাভ
পেশাগত দক্ষতা কাকে বলে সে নিয়ে অনেক বড় আলােচনা হতে পারে। এখানে এটুকু উল্লেখ করা যায়, একজন পেশাদার বিনা টাকায় কাজ করেন না, কাজ করলে নিজের প্রাপ্যে ছাড় দেন না। তিনি কোন কাজের জন্য কি পরিমান টাকা নেবেন সেটা ঠিক হয় কাজের দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে । অনলাইনে কাজের সময় অনেক চুক্তি হয় সময়ভিত্তিক ।
যেমন ঘন্টাপ্রতি ১০ কিংবা ১০০ Dollar । এই নিয়মে যতঘন্টা কাজ করবেন ততঘন্টার টাকা পাবেন। সাধারনত দীর্ঘকালিন কাজে এধরনের চুক্তি করা হয় । আপনার কাজের ঘন্টাপ্রতি রেট কত হতে পারে সেটা নির্ভর করে আপনি ঘন্টাপ্রতি কতটা কাজ করতে পারেন, সেই কাজের মান ইত্যাদির ওপর। অভিজ্ঞতা ছাড়া আপনি এই রেট ঠিক করতে পারেন না। Local Freelancing আপনাকে সুযােগ দিতে পারে নিজের রেট করার বিষয়ে।
লােকাল ফ্রিল্যান্সিং এর আরাে অনেক সুবিধে হয়ত আপনার মনে কাজ করছে। মুল বিষয় Freelancing বােঝার জন্য আপাতত এটুকুই যথেষ্ট হতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে পাবেন এবং কোথায় পাবেন
প্রশ্ন থাকতে পারে কাজ কিভাবে পাবেন। কোথায় পাবেন। একেবারে নবীনদের কাছে এটা স্বাভাবিক প্রশ্ন। বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি যথেষ্ট জটিলও বটে। বাংলাদেশে পার্টটাইম কাজ বলে কোনকিছুর প্রচলন নেই।
সেকারনে এধরনের কাজ দেয়া-নেয়ার সাধারন পদ্ধতি গড়ে ওঠেনি। যার কাজ করানাে প্রয়ােজন এবং যিনি কাজ করতে পারেন দুপক্ষের মধ্যে রয়েছে অবিশ্বাস, আস্থার অভাব । কেউ কেউ এবিষয়ে আগ্রহি হয়ে কিছু করার চেষ্টা করছেন।
এ ধরনের জটিল নতুন কোন পদ্ধতি চালু করার কাজটি সহজ না। ক্রমে তারা সফল হবেন, একসময় Freelancing শব্দটি ব্যাপকভাবে সমাজে ব্যবহার হবে এমন প্রত্যাসা করতে পারেন ।
আপাতত কাজ পাওয়ার সম্ভাব্য কিছু যায়গা বা পদ্ধতির উল্লেখ করা হচ্ছে এখানে। কাজের বিষয় হিসেবে এখানেও গ্রাফিক Design উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে ।
১. পরিচিত সবাইকে জানিয়ে দিন আপনি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করেন টাকার বিনিময়ে । তদের কারাে । নিজের বা পরিচিত কারাে কোন কাজের প্রয়ােজন থাকলে তারা জানাবেন। সেটা এটাও জানিয়ে দিন। আপনি কাজ করেন টাকার বিনিময়ে।
২. বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলি ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট দুধরনের বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করেন। সব যায়গাতেই গ্রাফিক ডিজাইন প্রয়ােজন হয়। এদের সাথে যােগাযােগ করুন। কাজ করেন এমন কারাে সাথে থেকে শিক্ষানবিস হয়ে কাজের সুযােগ পাওয়া অনেক বড় সুযােগ । কেউ কেউ টাকা আয়ের কথা না ভেবে, প্রয়ােজনে নিজের টাকা খরচ করে হলেও এধরনের সুযােগ কাজে লাগান।
৩. যারা Software এর কাজ করেন তাদের Graphic Design প্রয়ােজন । অনেক ক্ষেত্রেই তারা বেতনভােগি ডিজাইনার রাখেন না। তাদের সাথে যােগাযােগ করে নিজের যােগাযােগের ঠিকানা দিয়ে রাখতে পারেন।
৪. অন্য ফ্রিল্যান্সারের সাথে কাজ করা আরেকটি ভাল পদ্ধতি হতে পারে । অনলাইন অথবা লােকাল যে কাজই হােক, তিনি সহজ কাজগুলি নবিন কাউকে দিয়ে করাতে পারেন ।
৫. ছাপাখানার সাথে গ্রাফিক ডিজাইনের নিবিড় সম্পর্ক। তাদের সাথে যােগাযােগ রেখে কাজ পেতে পারেন।
৬. কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যােগাযােগ করতে পারেন। খবরের কাগজ থেকে শুরু করে চারিদিকে যে পােষ্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবাের্ড, সাইনবাের্ড ইত্যাদি দেখা যায় তাদের সমস্তই বর্তমানে করা হয় Digital পদ্ধতিতে। তাদের সাথে যােগাযােগ করে কাজের খােজ করতে পারেন। বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, NGO সকলের কাছেই এধরনের কাজ পাওয়া যায় ।
৭. নিজে প্রতিষ্ঠান দেয়া যদি সম্ভব হয় তাহলে সেটা সবচেয়ে সেরা পদ্ধতি। পথ চলতে গ্রাফিক ডিজাইন, Print ইত্যাদির দোকান নিশ্চয়ই দেখেছেন। বরং বলতে পারেন শতশত দেখেছেন । না দেখে থাকলে। একবার নীলক্ষেত ঘুরে আসুন। এধরনের ব্যবসা শুরু করলে Client নিজেই কাজ নিয়ে আসবেন।
সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশে যায়গার খরচ অত্যন্ত বেশি। সেইসাথে অন্যান্য যন্ত্রপাতি-আসবাবপত্র ইত্যাদির খরচ। যে কারনে ইচ্ছে থাকলেও অনেকের পক্ষে একাজ করা সম্ভব হয় না। একা সম্ভব না হলে কয়েকজন মিলে চেষ্টা করা যেতে পারে।
শুরু করে সাথেসাথেই পছন্দমত কাজ পেতে থাকবেন, সন্তোষজনক আয় আসতে শুরু করবে এটাও ধরে নেবেন না। বরং Freelancing এর প্রথম ধাপ হিসেবে ভাল সেবা দিয়ে পরিচিতি বাড়াতে সচেষ্ঠ হবেন এই দৃষ্টিভঙ্গি থাকাই ভাল।
পথের ধারে দোকান দেয়া সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি, একথা শুনে কি নিজেকে বলছেন, ওই ছােট কাজে আমি হাত দেব! আমি অনলাইনে কাজ করে মাসে কয়েক হাজার ডলার আয় করব। পড়াশােনা করেছি কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে, বিদেশি ডিগ্রী হাতে আছে। দুঃখিত। এই মানষিকতা ত্যাগ না করলে ফ্রিল্যান্সিং আপনার জন্য না।
আপনি হয়ত American হােটেলে থালাবাসন ধােয়ার জন্য বেশি উপযােগি। রাগ করবেন না । আমার এক বন্ধু ডাক্তার, গ্রীনকার্ডধারী, বাংলাদেশ থেকে এমবিবিএস পাশ করে আমেরিকায় এই কাজ করছে। সে কেমন আছে জিজ্ঞেস করায় বাংলাদেশে Hotel এ কাজ করা কোন বালককে দেখে তারকথা মনে করতে বলেছে। ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
পার্টটাইম এবং ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সিং
ফ্রিল্যান্সারের সুবিধে হচ্ছে কাজ পছন্দ হলে তিনি সেটা করবেন, পছন্দ না হলে করবেন না। অন্য কোন কারনে কাজ করতে ইচ্ছে না হলেও সেকাজ করবেন না। হয়ত পুরাে সপ্তাহ ঘুমাবেন বা কোথাও বেড়াতে যাবেন বাধা দেয়ার কেউ নেই।
তার অর্থ ফ্রিল্যান্সিং বিষয়টিই Part Time । এমনকি Part Time কাজে যে বাধ্যবাধকতা থাকে সেটাও নেই। তাহলে Full Time Freelancing শব্দ ব্যবহারের প্রয়ােজন কি! ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে প্রচারের ভুলের কারনে এই ধারনা তৈরী হয়েছে অনেকের মধ্যে। বিষয়টি স্পষ্ট করা ভাল, Full Time Freelancing মানে ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সার।
Freelancing তার চাকরী, ব্যবসা যা বলতে চান বলতে পারেন । মুল কথা হচ্ছে, Job বা ব্যবসার জন্য যেভবে নিয়ম মেনে, সময় হিসেব করে, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে কাজ করতে হয় ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সারকে ভাল ফলের জন্য তার সবগুলিই করতে হয়।
প্রথাগত অফিসের মত না হলেও তাকে একধরনের office চালাতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে চাকরী বা ব্যবসার চেয়েও বেশি সময় এবং শ্রম ব্যয় করতে হয়। ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে প্রচলিত তথ্য, একজন শুরু করেন পার্টটাইম Freelancer হিসেবে, একসময় ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সারে পরিনত হন ।
পরিসংখ্যান বলে যারা Full Time Freelancer তাদের অধিকাংশই পার্টটাইমার হিসেবে শুরু করেছেন। কিংবা অন্যভাবে, যারা পার্টটাইম ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন তাদের অর্ধেকের বেশি ফুলটাইম ফ্রিল্যান্সারে পরিনত হন। পার্টটাইম এবং ফুলটাইম দুধরনের ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল এবং মন্দ দিক বিদ্যমান। এগুলি দেখে নেয়া যাক। ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
পার্টটাইপ ফ্রিল্যান্সিং এর ভাল দিক
১. বর্তমান কাজ ঠিক রেখে করা যায়। ফলে বর্তমান আয়ের সাথে অতিরিক্ত আয় যােগ হয় । জীবনযাত্রার খরচ যখন বাড়তে থাকে এবং তারসাথে মিল রেখে বর্তমান আয় না বাড়ে তখন বিকল্প আয় হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
২. অন্য পেশা ঠিক রেখে শুরু করা যায় বলে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করার সুযােগ থাকে। যেহেতু সেখান থেকে আয়ের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না সেহেতু কাজ পেতে অতিরিক্ত সময় লাগলেও সমস্যায় পরতে হয় না।
৩, বর্তমান অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানাে যায়। স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয়া হয় আপনি যে বিষয়ে বর্তমানে কাজ করছেন তারসাথে সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে কাজ করবেন। সেক্ষেত্রে সেই দক্ষতার ওপর ভর করে আপনার পক্ষে Freelancing এর দিকে যাওয়া তুলনামুলক সহজ।
৪. মানষিকভাবে মুক্ত থাকা যায়। যেহেতু আপনার খরচ চালানাের ব্যবস্থা আছে সেহেতু নতুন কিছু শেখায় সময় ব্যয় করা যায়।
৫. অলস সময়কে কাজে লাগানাে যায়। অনেকেরই স্বাভাবিক কাজ করার পর অন্য কাজ থাকে না। সেই সময়কে টাকা উপার্জন করার কাজে ব্যবহার করা যায় । সেইসাথে কাজ নিয়ে ব্যস্তু থাকা যায়।
৬. নতুন আয়ের পথ তৈরী হয় । Part time Freelancing শুর করে একসময় লাভজনক মনে করলে সেদিকেই পুরাে সময় দেয়ার মত পরিস্থিতি তৈরী হতে পারে । ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
পার্টটাইপ ফ্রিল্যান্সিং এর মন্দ দিক
১. Part time Freelancing কাজে বর্তমান কাজের অতিরিক্ত কাজ করতে হয় বলে কাজের চাপ বেড়ে যায়। অনেকের কাছে শারীরিক, মানষিক, পারিবারিক ইত্যাদি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে ।
২. যােগাযােগের সমস্যা তৈরী হয়। একজন ফ্রিল্যান্সারকে সবময়ই ক্লায়েন্টের সাথে যােগাযােগ রক্ষা করা প্রয়ােজন হতে পারে । সেখানে বিঘ্ন ঘটে বলে কাজের সমস্যা তৈরী হয়।
৩, Freelancing কাজে পুরাে সময় ব্যয় করার সুযােগ না থাকায় বড় কাজে হাত দেয়া যায় না।
৪. পার্টটাইম ফ্রিল্যান্সারদের তুলনামুলক কম টাকায় কাজ করতে হয় । কারনটাও বােঝা সহজ। আপনি অন্য কাজের বিষয় হিসেবের মধ্যে রেখে কাজ নিচ্ছেন, কাজেই সহজ, সংক্ষিপ্ত কাজের খােজ করতে হচ্ছে। কাজ পাওয়ার জন্য কম টাকায় বিড় করতে হচ্ছে ।
৫. সবদিকে সমতা রক্ষা করা কঠিন হয়। পার্টটাইম ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয় বলে একদিকে বর্তমান পেশা, অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সিং দুদিকই সামল তে হয়। অনেকের জন্যই বিষয়টি কষ্টকর। একজন ছাত্র পার্টটাইম ফ্রিল্যান্সার হলে তার পড়াশােনার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে । ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
পার্টটাইম ফ্রিল্যান্সিং কি পছন্দ করবেন
বিষয়গুলি একসাথে করে প্রশ্ন করা যাক, Part time Freelancing কি পছন্দ করবেন ? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উত্তর হতে পারে, হ্যা। এর ভাল দিকগুলি বিবেচনা করুন। এটা ফ্রিল্যান্সিং শুরুর প্রথম ধাপ। এমনকি সরাসরি Full time Freelancing হওয়ার চেষ্টার চেয়েও সুবিধেজনক।
যে Problem গুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলি যদি কারাে ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা তৈরী করে তাহলে ভিন্ন কথা। সেক্ষেত্রেও বলা যেতে পারে, একজন Freelancer কোন কাজ করতে বাধ্য নন। চেষ্টা করে বিষয়গুলি মানিয়ে নিতে না পারলে যে কোন সময় বাদ দিতে পারেন। অন্তত চেষ্টা করে দেখতে নিশ্চয়ই সমস্যা নেই ।
ফ্রিল্যান্সার না হওয়ার নানা কারন
কেউ হয়ত মন্তব্য করতে পারেন, সবাই যদি Freelancer হন তাহলে একসময় কলকারখানা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবকিছু বন্ধ করে দিতে হয়। আপনি এতদুর যেতে পারেন না। সবাই ফ্রিল্যান্সার হতে পারেন না। অন্য প্রতিষ্ঠান, অন্যান্য কাজগুলি সচল থাকবে, আরাে প্রসারলাভ করবে এটাই স্বাভাবিক।
Freelancer হওয়ার পেছনে বহু ভাল যুক্তি থাকলেও Freelancing সকলের জন্য না । যিনি অন্য কাজে বেশি ভাল করতে পারেন তিনি নিশ্চয়ই সেকাজ থেকে সরে যেতে পারেন না। ভালাের সাথে Freelancing এর কিছু সমস্যার দিকও রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
Freelancer না হওয়ার জন্য যে কারনগুলি কাজ করতে পারে সেগুলি একবার দেখে নেয়া যাক;
১. অন্য কাজে ভাল করার সুযােগ
প্রায় সব ধরনের Freelancing কাজ আছে উল্লেখ করার সময়ও একথা মনে রাখা প্রয়ােজন, সবধরনের। বলতে কম্পিউটার ভিত্তিক কাজ বুঝানাে হচ্ছে। অন্তত Online Freelancing বলতে এমন কাজ বুঝানাে হয় যা অনলাইনে পাঠানাে যায়। যেমন ফটোগ্রাফি হয়ত সরাসরি কম্পিউটারেরর কাজ না। তারপরও, যােগাযােগ যেহেতু ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেহেতু একসময় কম্পিউটারে আনতে হয় (ফিল্ম Camera ব্যবহার করলেও)।
অথচ সবাই Computer সংশ্লিষ্ট কাজ করেন না। যিনি ব্যবস্থাপনায় ভাল তিনি হয়ত সরাসরি কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে নিজের এবং প্রতিষ্ঠানের/দেশের ভাল করতে পারেন। তেমনি একজন শিক্ষক বা ডাক্তার তার নিজের পেশায় থেকে ভাল করতে পারেন। যিনি শিল্পকারখানায় আগ্রহি তিনি সেকাজ করে ভাল করতে পারেন ।
২. অনিশ্চিত আয়
JOB করলে মাসশেষে বেতন পাওয়া যায় এটা নিশ্চিত। এর ওপর হিসেব করে আপনি পরিকল্পনা। করতে পারেন । Freelancer হিসেবে আপনার কত আয় হবে সেবিষয়ে আগে নিশ্চিত হতে পারেন না। সেকারনে আগে থেকে পরিকল্পনা করে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হতে পারে।
৩. অনিয়মিত আয়
Freelancer নিয়মিত আয় করেন না। কখনাে বেশি আয় করেন, কখনাে কম, কখনাে দীর্ঘ সময়ের জন্য আদৌ কোন আয় থাকে না। কয়েকমাস কোন আয় না থাকা অনেকের জন্যই বড় ধরনের সমস্যা তৈরী করতে পারে।
৪. ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সফলতা না পাওয়া
আপনি যে Freelancing কাজ করতে চান সে বিষয়ে অত্যন্ত দক্ষ, তারপরও সফল হবেন এমন কথা নেই। কাজের দক্ষতা ছাড়াও যােগাযােগের দক্ষতা, Freelancing এর নিয়মকানুন বােঝা এবং মেনে চলা, পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়া ইত্যাদি বহু কারন সফলতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে । এবিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত আলােচনা পাবেন।
আপাতত এটুকু বলা যেতে পারে, যার সফল হওয়ার কথা এমন অনেকে সফল হন না আবার তুলনামুলক কম যােগ্যতার ব্যক্তি সফল হন এমন উদাহরন। অনেক রয়েছে। কারাে কাছে বিষয়টি হতাসার মনে হতে পারে।
৫. ফ্রিল্যান্সিং পদ্ধতিকে মানিয়ে নিতে না পারা
একজন ফ্রিল্যান্সারকে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে হয়। বাস্তবতা হচ্ছে, অনেকেই নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। বরং কেউ নির্দেশ দিলে ভালভাবে মেনে চলতে পারেন। তাদের জন্য অন্য পেশা। সুবিধেজনক।
৬. একা কাজ করতে না পারা
অনেকে কাজ করার সময় সমস্যায় পরলে কারাে পরামর্শ আশা করেন। অনেক সময় এতে এতটাই নির্ভরশীল হয়ে পড়েন যে একা কাজ করতে সমস্যাবােধ করেন। ফ্রিল্যান্সারকে নিজের সমস্যার সমাধান | নিজেকেই করতে হয়। এটাও কারাে কারাে জন্য Freelancing কাজে সমস্যা হয়ে দাড়াতে পারে ।
৭, ব্যক্তিগত মানষিকতা, পারিবারিক ইত্যাদি সমস্যা
ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যা একেকজনের একেক রকম। চারিদিকে অসংখ্য উদাহরন পাবেন যেখানে শারীরিক থেকে শুরু করে করে নানাবিধ কারনে কেউ বিশেষ কাজ পছন্দ করেন, বিশেষ কাজ পছন্দ করেন না বা ইচ্ছে থাকলেও করতে পারেন না। অনেক সময় পরিবার থেকে নির্দিষ্ট কাজ করতে বলা। হয় ।
খুব সহজ একটি Example দেখতে পারেন, কোন পরিবার মনে করে ব্যবসা অসন্মানের বিষয়। সেখানে সবসময় লাভ-লােকসানের হিসেব কশতে হয়, টাকা একমাত্র বিবেচনার বিষয়, Job তারচেয়ে সন্মানজনক। কেউ মনে করেন JOB করলে স্বাধীনতা থাকে না, অন্যের কথা শুনে চলতে হয় । অনেককেই বাধ্য হয়ে পারিবারিক ব্যবসা বা অন্য কোন দায়িত্ব নিতে হয়। Freelancing এর ক্ষেত্রেও এধরনের সমস্যা থাকতে পারে।
৮. পরিবেশ মানিয়ে নিতে না পারা
কেউ একা থাকতে পছন্দ করেন, কেউ হট্টগােল পছন্দ করেন। কাজের সময়ও অন্যদের পাশে দেখতে আশা করেন, তাদের সাথে কথা বলতে চান । ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে, অফিসে সহকর্মীদের সাথে একধরনের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সাধারনত ফ্রিল্যান্সারের সেই সুযােগ থাকে না। তাকে একা কাজ করতে হয়। একাকিত্ব কারাে কারাে জন্য Freelancing কাজে বাধা হয়ে দাড়াতে পারে ।
৯, অর্থনৈতিক ঝুকি
অর্থনীতিবিদরা বলেন অর্থনীতি এমন এক বিজ্ঞান যেখানে ভবিষ্যতবানী কাজ করে না। সমস্ত হিসেব যা নির্দেশ করছে বাস্তবে সেটা ঘটে না। ফ্রিল্যান্সিং এর মত পারস্পরিক যােগাযােগের ওপর বেশি নির্ভরতা পুরাে অর্থনীতির ওপরই ঝুকি তৈরী করতে পারে। বাংলাদেশের তৈরী পােষাক শিল্পের ওপর নির্ভরতার। সাথে একে তুলনা করতে পারেন। কোন কারনে যদি পােষাক রপ্তানী সমস্যার সম্মুখিন হয় তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষ মুহুর্তে সমস্যায় পরবেন।
অনলাইন Freelancing এর ক্ষেত্রে এমনটা ঘটতে পারে। ডট-কম বাবল নামের ২০০০ সালের উদাহরন মনে করতে পারেন। তখন বহু প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী রাতারাতি বন্ধ হয়ে গেছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢাকমী হারিয়েছে।
১০. জনজীবনের ওপর প্রভাব
যিনি Freelancer হতে চান তিনি হয়ত এবিষয়ে মাথা ঘামাতে চান না। বাস্তবতা হচ্ছে, যদি কোন বিশেষ পেশার মানুষের হাতে অতিরিক্ত টাকা আসতে থাকে তখন সাময়িকভাবে হলেও অন্যরা সমস্যার সম্মুখিন হন। তারা বেশি করে কিনতে শুরু করেন বলে জিনিষপত্রের দাম বৃদ্ধি পায়। যাদের আয় সেই তুলনায়।
বাড়েনি তারা সমস্যায় পড়েন। চীনের দ্রুত উন্নতিকে এধরনের উদাহরন হিসেবে তুলনা করতে পারেন। কিছু মানুষ এত দ্রুত ধনী হয়েছে যে গ্রামাঞ্চলের মানুষ সমস্যায় পড়েছে। প্রায় সমস্ত দেশ যখন প্রবৃদ্ধি বাড়ানাের চেষ্টা করে তখন। তাদেরকে সেটা সীমিত রাখার জন্য চেষ্টা করতে হয়েছে । তথ্যপ্রযুক্তির কারনে এধরনের ঘটনা ভারতে ঘটেছে। কেউ দ্রুত ধনীতে পরিনত হয়েছেন, দরীদ্র আরাে খারাপ অবস্থার দিকে গেছেন।
বলা হয় সব সমস্যার সমাধান আছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলে প্রত্যেক রােগের ঔষধ আছে। Freelancing এর সমস্যা দুর করার পদ্ধতি দুভাবে বিবেচনা করতে পারেন, এক হচ্ছে সমস্যার মােকাবেলা করে তাকে জয় করা। আরেকটি, ফ্রিল্যান্সিং বিষয়কেই মাথা থেকে বিদায় করে নিজের জন্য সুবিধেজনক পেশায় যুক্ত থাকা। যাই হােক না কেন, সচেতনভাবে করা ভাল। যেদিকেই যাননা কেন, একদিকে যান। ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
আপনি ফ্রিল্যান্সার হতে পারেন কি-না
Freelancing সম্পর্কে অনেক কথাই বলা হয়েছে। এবারে বাস্তব জগতে আসা যাক । আপনি নিজে কি ফ্রিল্যান্সার। হতে পারেন ? এর উত্তর একমাত্র আপনি নিজেই দিতে পারেন। যাচাই করার কাজটিও সহজ।
উদাহরন দিয়ে দেখা যাক। আপনার হয়ত কোন জিনিষ প্রয়ােজন। সেটা কত ধরনের হয়, কোন কোম্পানীর কোন মডেলের জিনিষের সুবিধে কি, অসুবিধে কি, কোথায় পাওয়া যায় সবই খােজ নিলেন। জিনিষটি হাতে পাওয়ার জন্য আপনাকে দুটি বিষয় যাচাই করতে হয় ।
১. দোকানে দিয়ে জিজ্ঞেস করা, তার জন কত টাকা দিতে হবে।
২. সেই টাকা আপনার আছে কিনা নিশ্চিত করা।
Freelancing এর ক্ষেত্রে আপনি কাজটি করতে পারেন একই নিয়মে।
১. ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কি কি কাজ পাওয়া যায়।
২. এর কোনটি আপনার পক্ষে করা সম্ভব।
অন্যকথায় আপনি খােজ নিতে পারেন Freelancer সাধারনত কোন কাজগুলি করেন। এদের কোনটির জন্য কি কতটুকু দক্ষতা থাকতে হয়, সেটা কিভাবে অর্জন করতে হয়, কি কি যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য বিষয় প্রয়ােজন হয়, কতটা সময় ব্যয় করতে হয়, কিভাবে যােগাযােগ করতে হয়, কি কি সমস্যা হতে পারে, সেগুলির সমাধান কিভাবে করতে হয়। এরসাথে নিজেকে মেলাতে পারেন এভাবে, এর কোন কাজটি পছন্দ করেন, কোনটি আপনি এখনই জানেন, কোনটি আপনি শিখে নিতে পারেন, শেখার সুযােগ কতটকু আছে, যে সমস্যাগুলি হতে পারে সেগুলি আপনি সমাধান করতে পারেন কিনা বা মানিয়ে নিতে পারেন কি-না ইত্যাদি। এই তথ্যগুলি তুলে ধরার জন্যই এই বই। Freelancing বিষয়ক বই যখন পড়ছেন তখন ধরে নেয়া যায় এ বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে বাকিটা বাস্তবতার । ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় ও ফ্রিল্যান্সিং কেন করব জানুন ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় | ফ্রিল্যান্সিং কেন করব
বন্ধুরা আমরা খুব সহজ ভাবে জেনে নিলাম ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় এবং ফ্রিল্যান্সিং কেন করব। আশা করি আপনার ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় এবং ফ্রিল্যান্সিং কেন করব তা ভালো করে বুঝে গেছেন। যদি আমাদের এই লেখাটি আপনাদের ফ্রিল্যান্সিং হতে উৎসাহ যোগায় তাহলে এই লেখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আর যদি কোথাও বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে নিচে কমেন্ট করে জানাবেন। আর আমাদের উৎসাহ বাড়াতে আপনার কাজ হলো একটি কমেন্ট করা। ধন্যবাদ ফ্রিল্যান্সিং কি ও ফ্রিল্যান্সিং বলতে কি বুঝায় এবং ফ্রিল্যান্সিং কেন করব আর্টিকেল টি পড়ার জন্য।