সততা ও সত্যবাদিতা রচনা | সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সততা ও সত্যবাদিতা রচনা বা সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি সততা ও সত্যবাদিতা রচনা | সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সততা ও সত্যবাদিতা রচনা | সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা টি।।
সততা ও সত্যবাদিতা রচনা সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা |
আর হ্যা আমরা তোমাদের সুবিধার জন্য আমরা খুব সহজ ভাবে আজকের এই সততা ও সত্যবাদিতা রচনা বা সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা টি তুলে ্ধরেছি।
সততা ও সত্যবাদিতা রচনা
সততা ভূমিকা: মানুষের রয়েছে কিছু মহৎ, নৈতিক ও মৌলিক মানবিক গুণাবলি । যেসব গুণ মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে তার মধ্যে সততা অন্যতম। একজন মানুষের জীবনে সততা সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হিসেবে কাজ করে। জীবনকে সার্থক করে তােলার ক্ষেত্রে সততার বিকল্প নেই। সততা মানুষকে উদার ও মহৎ করে তােলে এবং পৌছে দেয় সফলতার দ্বারপ্রান্তে। সততা মানষের জীবনে এনে দেয় শান্তি, স্বস্তি এবং জীবনকে করে তােলে সৎ ও মহিমান্বিত। তাই পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ মানবিক মর্যাদায় অভিষিক্ত হতে হলে সততার আশ্রয়গ্রহণ ব্যতীত অন্য কোনাে উত্তম পন্থা নেই।
সততার স্বরূপ: সততা বলতে বােঝানাে হয় সত্যবাদিতা, আন্তরিকতা, ন্যায়পরায়ণতা, স্পষ্টবাদিতা, প্রতিশ্রুতি রক্ষার স্বভাব, সারল্য, সাধুতা, স্বাধীনচেতা, মানবিকতা, সত্য পালন প্রভৃতি ব্যক্তি চরিত্রের মহৎ গুণাবলির সমন্বয়কে। অর্থাৎ সাধারণত মানুষের মহৎ মানবিক গুণাবলিকেই আমরা সততা বলে থাকি । সততা শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মানুষকে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা দান করে। উন্নত জীবন গঠনে সর্বোত্ত্বষ্ট পন্থা হিসেবে সততা বিবেচিত। অন্যায়, অসত্য, পাপবােধ ও অপরাধের প্রতি বিতৃষ্ণ মানবাত্মাই সততার বাহক। সর্বোপরি সততা মানব চরিত্রের এক উজ্জ্বল অলংকার।
সততাই শ্রেষ্ঠ পন্থা: ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, 'Honesty is the best policy'সততাই সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা। প্রবাদটি মানবজীবনে চিরন্তন সত্য হিসেবে বিবেচিত। অর্থাৎ এ পৃথিবীতে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন মানুষকে বেঁচে থাকার জন্যে নানা বিরুদ্ধ পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে লড়াই করতে হয় । লড়াইয়ে একজন মহৎ ব্যক্তির শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে তার ব্যক্তি চরিত্রের মহৎ গুণাবলি বা সততা। মহামানবদের জীবনী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সততার বলে বলীয়ান হয়ে তারা বাস্তব জীবনের কঠিন সব পরিস্থিতি মােকাবেলা করে তবেই খ্যাতিমান, স্মরণীয় ও বরণীয় হয়েছেন। তাই কর্মমুখর ও দ্বন্দ্বমুখর এ পৃথিবীতে বেঁচে থাকার জন্যে সততার আশ্রয় গ্রহণ একান্তই জরুরি।
সততার সামাজিক মূল্য: সততার সামাজিক মূল্য অপরিসীম। পরিবর্তি বিশ্ব পরিস্থিতিতে মানুষ আজ সত্যকে বর্জন করে মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরেছে। সমাজে আজ সততা, সত্যনিষ্ঠা, আন্তরিকতা, সরলতা, সদাচার প্রভৃতি মহৎ মানবিক গুণাবলির বড় অভাব। দারিদ্র্য, স্বার্থবাদী চিন্তা-চেতনা মানুষকে। মিথ্যাচারী ও অসৎপ্রবণ করে তলছে। এহেন পরিস্থিতি ক্রমাগত চলতে থাকলে অচিরেই পৃথিবী পাপাচারে পূর্ণ হয়ে উঠবে ও ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। আশার বিষয় যে চলমান পরিস্থিতিতেও পৃথিবীতে কিছু সৎ ও মহৎ মানুষ আছেন যাদের মহত্ত্বের কারণে এ পৃথিবী আজও টিকে আছে। তাই সমাজ থেকে সর্বপ্রকারের অনাচার দূরীভূত করার ক্ষেত্রে সততার প্রয়ােজনীয়তা অনস্বীকার্য।
সততাহীনতার পরিণাম: সততাহীনতার পরিণাম অত্যন্ত মারাত্মক ও ভয়াবহ। নৈতিক অবক্ষয়ের ফলে সমাজজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে ও মানুষ তার মনমতে হারিয়ে পশধর্মে পতিত হয়। এর ফলে মানুষ ও পশুর মধ্যে কোনাে প্রভেদ থাকে না এবং সর্ব প্রকারের সহিংস কর্মকাণ্ড পরিচালিত করতে বিবেক বাধা দেয় না। ফলে ব্যাপক অন্যায়-অনাচারের প্রসার ঘটে ও জাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। মানুষ যখন সততাকে বিসর্জন দেয় তখন তার নিকট ন্যায়-অন্যায় সত্য-অসত্যের কোনাে মূল্যই থাকে না।
মহৎ ব্যক্তিদের জীবনে সততা: মানব ইতিহাসে যারা স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন তারা সততার মূর্ত প্রতীক। মানবসভ্যতার ইতিহাস বিশ্লেষণ। করলে দেখা যায় যুগে যুগে যেসব মহামনীষী আবির্ভূত হয়েছেন তারা প্রায় সকলেই অন্যায়, অসত্য ও অসুন্দরের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে লড়াই। করেছেন এবং প্রয়ােজনে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, কিন্তু মাথা নত করেননি। সত্য প্রচার করতে গিয়ে হজরত মুহম্মদ (স)-কে স্বদেশ ত্যাগ করতে। হয়েছে। যীশকে ক্রশবিদ্ধ হতে হয়েছে। সক্রেটিসকে হ্যামলক বিষ পানে জীবন দিতে হয়েছে, জোয়ান অব আর্ককে আগুনে দগ্ধ হতে হয়েছে, গৌতম বুদ্ধকে রাজ্যসুখ ত্যাগ করে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করতে হয়েছে। সুতরাং দেখা যায়, সভ্যতার ইতিহাসে কীর্তিমান সব মহামানবই সততার জন্যে। অসীম ত্যাগ-তিতিক্ষার দৃষ্টান্ত রেখে গিয়েছেন।
উপসংহার মানষের মৌলিক মানবিক গুণাবলিই হলাে সততা। প্রত্যেক মানুষের উচিত মহৎ মানবিক গুণাবলি দ্বারা নিজ জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তােলা। আর এ সততার শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে ছােটবেলা থেকেই । শিশুদেরকে সততা অনুশীলনে অভিভাবক ও শিক্ষকদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। কেননা মানুষের মধ্যে সততা না থাকলে স্নেহ প্রেম-প্রীতি, দয়া-মায়া, আবেগ-অনুকম্পা সবই লােপ পায়। তাই বলা যায়, মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রে সততা এক অত্যাবশ্যকীয় গুণ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সততা ও সত্যবাদিতা রচনা সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সততা ও সত্যবাদিতা রচনা বা সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা টি। যদি তোমাদের আজকের এই সততা ও সত্যবাদিতা রচনা সততা ও সত্যনিষ্ঠা রচনা টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।