হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবনী রচনা | মহানবী সাঃ এর জীবনী রচনা ৫০০ শব্দ
হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবনী রচনা মহানবী সাঃ এর জীবনী রচনা ৫০০ শব্দ |
আর হ্যা আমরা তোমাদের সুবিধার জন্য আমরা খুব সহজ ভাবে আজকের হযরত মুহাম্মদ সাঃ জীবনী রচনা | মহানবী সাঃ এর জীবনী রচনা ৫০০ শব্দ টি তুলে ধরেছি।
মহানবী সাঃ এর জীবনী রচনা
ভুমিকা: সমাজজীবনে বিচ্ছিন্নতা, কুসংস্কার, অবিশ্বাস, বিষাক্ততা, কলুষতা এবং অবক্ষয়, বিপর্যয়, রাহাজানি, হানাহানি ইত্যাদির কারণে ম প9ে তখন এসব আদর্শভ্রষ্ট, সত্য থেকে বিচ্যত মানুষকে সত্য, আদর্শ ও ন্যায়ের পথে ফিরিয়ে আনতে প্রয়ােজন হয় একজন মানবজাতির বিপর্যয়ের এমনই একটা চরম সময়ে আবির্ভাব ঘটেছিল, সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক সেই আদর্শ মহাপুরুষ আমাদের না হ্যরত মুহম্মদ (স)-এর। তার সত্যের জ্যোতিতে বিশ্বলােক হয়েছিল উদ্ভাসিত। তারই আদর্শ ও সত্যদৃষ্টি বিভ্রান্ত, পথভ্রষ্ট মানুষকে মুক্তিমন্ত্রে উজ্জীবিত করে তুলােছল। এ মহাপুরুষের আবির্ভাবে ও তার আদর্শে অন্ধকারাচ্ছন্ন মানষ খুঁজে পেয়েছিল আলাের দিশা। মধ্যযুগে আরব জাতি যখন। মহান ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, তখন তাদের পথপ্রদর্শক হিসেবে আবির্ভূত হন হযরত মুহম্মদ (স)। তিনি। যেমন আরবজাতিকে মুক্তি দিয়েছেন, তেমনই আমাদেরকে সঠিক পথে চলার নির্দেশ দিয়ে আমাদের জীবনে আদর্শ মহাপুরুষ হিসেবে বেঁচে রয়েছেন।
জন্ম ও বাল্যজীবন: হযরত মুহম্মদ (স) আল্লাহ প্রেরিত সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব । ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক। আমাদের এ প্রিয় নবী আরবের সম্রান্ত। কুরাইশ বংশে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবদুল্লাহ এবং মাতার নাম বিবি আমেনা। নবীজীর জন্মের আগেই তার পিতা মারা যান এবং তার বয়স যখন ছয় বছর তখন তার মাতাও ইন্তেকাল করেন। এরপর এতিম শিশু মুহম্মদকে তাঁর পিতামহ আবদুল মােত্তালিব স্নেহ-আদরে লালন-পালন করেন। কিন্তু আট বছর বয়সে তাঁর পিতামহও ইন্তেকাল করেন। এরপর চাচা আবু তালিবের কাছে তিনি লালিত-পালিত হন। শৈশব থেকেই মহানবী ছিলেন কোমল স্বভাবের। সততা, অপরিসীম কর্তব্যবােধ, অকৃত্রিম সাধুতা, ন্যায়নিষ্ঠা, ধর্মপরায়ণতা, । স্নেহপরায়ণতা ইত্যাদি চারিত্রিক গুণাবলি মণ্ডিত ছিল তার জীবনে। সত্যবাদিতার জন্যে শিশুকালেই তিনি আল-আমিন’ বা ‘বিশ্বাসী’ উপাধিতে ভূষিত হন।
বিবাহ ও নবুয়ত প্রাপ্তি: হযরত মুহম্মদ (স) প্রথম বিবাহ করেন ২৫ বছর বয়সে। মহানবীর চারিত্রিক গুণে মুগ্ধ হয়ে মক্কার ধনবতী মহিলা বিবি খাদিজা (রা) তার সমস্ত ব্যবসায়ের দায়-দায়িত্ব নবীজীর ওপর অর্পণ করেন। এরপর ক্রমেই তিনি মহানবীর সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততার প্রতি অনুরুক্ত হয়ে পড়েন। চল্লিশ বছর বয়স্ক বিবি খাদিজা মহানবীকে বিবাহের প্রস্তাব দেন এবং তাকে বিয়ে করেন। নবীজী হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহর ধ্যান করতেন। একদিন ওই গুহায় তিনি গভীর ধ্যানে মগ্ন থাকা অবস্থায় আল্লাহর আদেশক্রমে ফেরেশতা জিব্রাইল (আ) তাকে নবুয়তের বার্তা প্রেরণ করেন। চল্লিশ বছর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ করেন। তার ওপর নাজিল হয় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন'। এরপর তিনি নবী বা রাসল হিসেবে আতবপ্রকাশ করেন। তিনি আল কোরআনের বাণী পথভ্রষ্ট মানুষের মাঝে প্রচার করতে থাকেন। কোরআনের এ জীবন বিধানে আকৃষ্ট হয়ে আরবের । মানুষ দলে দলে গ্রহণ করে ইসলাম ধর্ম ।
ইসলাম প্রচার ও মদিনায় হিযরত: হযরত মুহম্মদ (স) এর প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে আজ আমরা মুসলমান। তিনি মানুষকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে অনেক সংগ্রাম করেছেন। সহ্য করেছেন অনেক কষ্ট ও অত্যাচার। আল্লাহর আদেশক্রমে নবুয়ত প্রাপ্তির পর হতে তিনি বিধর্মীদের মাঝে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। তাঁর কাছে প্রথম ইসলাম গ্রহণ করে তার স্ত্রী বিবি খাদিজা। এরপর হযরত আলী (রা) ও যায়েদ বিন হারেস ইসলাম গ্রহণ করেন। তারপর থেকে নবীজীর প্রচারিত ইসলামের আদর্শবাণীতে আকৃষ্ট হয়ে অনেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম প্রচারে বাধা হয়ে দাড়ায় বিধর্মী কোরাইশগণ। তারা নবীজীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নবীজী ও তার অনুসারীদের ওপর অত্যাচার করতে থাকে। ইসলামের আদর্শে একনিষ্ঠ নবীজী সকল অত্যাচার সহ্য করেছেন, কিন্তু ইসলাম থেকে এক বিন্দুও সরে দাড়ান নি। তার এ কঠোর মনােবলে ভীত হয়ে শত্রুরা তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। কোরাইশদের সকল অত্যাচারে অতিষ্ঠ নবীজী আল্লাহর আদেশক্রমে মক্কা ত্যাগ করে মদিনায় আসেন। তার এ মদীনা গমনকেই ইসলামে হিয়রত'। বলা হয়। তার মদিনায় আগমনের সম্মানার্থে মদিনার নাম রাখা হয় মদিনাতুন্নবী’ বা ‘নবীর শহর'। নবীজীর আদর্শে ও ইসলামের অনুপ্রেরণায় যে। সমস্ত বিশ্বাসী মুসলমান জন্মভূমি ত্যাগ করে নবীজীর মতাে মদিনায় গিয়েছিলেন তাদেরকে বলা হয় 'মােহাজেরীন’ আর যেসব মদিনাবাসী এসব মসলমানকে আশ্রয় ও সাহায্য করেছিল তাদেরকে বলা হয় 'আনসার’ । ইসলাম প্রচারে বাধা অতিক্রম করতে নবীজীকে বিধর্মীদের সঙ্গে কয়েকটি। যুদ্ধও পরিচালনা করতে হয়।
মদিনা সনদঃ মুসলমান ও বিধর্মী ইহুদি ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেন। সকলের মধ্যে মদিন ঐক্য ও সম্প্রীতি গড়ে তােলার জন্যে এবং মদিনাকে রক্ষার জন্যে একটি সনদ প্রস্তুত করেন। তার এ সনদটিই ‘মদিনা সনদ' নামে খ্যাত যা। মুসলমানের প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র। এতে হযরত মুহম্মদ (স)-এর দূরদর্শিতা প্রমাণিত হয়। এতে আরও প্রমাণিত হয় যে নিন নন, একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদও বটে।
হযরত মুহম্মদ (স)-এর জীবনাদর্শ: হযরত মুহম্মদ (স)-এর জীবন ছিল আদর্শমণ্ডিত এবং সমস্ত সৎ গুণাবলির দ্বারা পরিপূর্ণ। মহৎ গুণাবলির কারণে তিনি শত্রুদের কাছেও বিশ্বাসী ছিলেন।। তিনি ছিলেন সৎচরিত্রের অধিকারী ও সদর্শন মহাপরষ। তাঁর বাক্য এতই কোমল ও মধুর ছিল যে, এতে শত্রুরাও তার আকর্ষণীয় শাক্ত অনুভব করে। বলত, 'মুহম্মদের বাক্যে ইন্দ্রজাল আছে। তাঁর প্রতিভা ও দৃঢ়সংকল্পে সবাই মুগ্ধ হতাে। তিনি কাউকে দেখলে নিজেই প্রথমে অগ্রসর হয়ে তাকে। সালাম দিতেন। আধ্যাত্মিক শক্তি এবং বাহ্যিক বেশ বিন্যাস— সবকিছুতেই তিনি ছিলেন আদর্শ। নবীজীর আত্মসম্মানবােধ ছিল প্রবল। তিনি ভিক্ষায় নয়, কর্মে বিশ্বাসী ছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তিকে অতিশয় ঘৃণা করতেন বলে ভিক্ষুকের হাতে কুঠার তুলে দিয়ে কর্মের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের নির্দেশ দেন। তিনি কারও দান গ্রহণ করতেন না, তবে কেউ খুশি হয়ে পুরস্কার দিলে ফিরিয়ে দিয়ে তাকে হতাশ করতেন না। তিনি ছিলেন অতিশয় স্নেহপরায়ণ। ছােট ছেলেমেয়েদেরকে তিনি খুবই স্নেহ করতেন এবং তাদের সঙ্গে মিষ্টিস্বরে কথা বলতেন। তিনি বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করতেন। একবার নামাজের সেজদা দেবার সময় তাঁর দৌহিত্র শিশু হুসাইন তাঁর ঘাড়ে চড়ে বসে এবং ঘাড় থেকে সে না নামা পর্যন্ত। তিনি মাথা তােলেন নি। নিজে উট সেজে তিনি হাসান-হােসেনের সঙ্গে খেলা করতেন। তার কন্যা ফাতেমাকে তিনি অতিশয় ভালােবাসতেন। তিনি সকল মুসলমানকে ভাই ভাই মনে করতেন। তিনি নীচু শ্রেণির লােকদের কখনও ঘৃণা করতেন না। এজন্যে দেখা যায়, তিনি দাস-দাসীর কাছ থেকে যেমন সেবা গ্রহণ করতেন, তেমনই তাদেরকেও সেবা দিতেন। নবীজীর মাঝে কোনাে লােভ কিংবা ক্ষমতার দম্ভ ছিল না। তিনি তার কর্মে, বিশ্বাসে, আদর্শে ছিলেন অটল ও অবিচল। সত্যকে তিনি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন এবং সত্যের পথে মানুষকে চলার জন্যে তার মূল্যবান বাণীতে বলেছেন, 'যাহা কিছু সত্য তাহা গ্রহণ করাে এবং মিথ্যাকে। বর্জন করাে।' অসীম ধৈর্য ও সাহসের সঙ্গে তিনি সমস্ত বিপদ-আপদ মােকাবেলা করতেন। তার সততা ও বিশ্বাসে মুগ্ধ হয়ে মানুষ তার কাছে। সম্পদ আমানত রাখত। তিনি কখনও আমানতের খেয়ানত করতেন না। নবীজীর একটি অন্যতম গুণ ছিল ক্ষমা-পরায়ণতা। প্রাণঘাতী শত্রদের কাছ থেকে শত আঘাত পেয়েও তিনি আল্লাহর কাছে তাদেরকে ভালাে করার জন্যে মােনাজাত করেছেন। হাসিমুখে তিনি আঘাতকারী শত্রকে ক্ষমা। করেছেন। নবীজী ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে সার্থক ও বড় সংস্কারক। সমাজের কুসংস্কার, জীর্ণতা ভেঙে তিনি নতুনভাবে গড়ে তােলেন। সমাজের মানুষকে দেখান আলাের পথ । লুপ্ত হয়ে যাওয়া নারীর মর্যাদাকে রক্ষা করে তিনি নারীকে পুরুষের সমান মর্যাদা দেন। নারীর মাতৃত্বের গৌরব ও পবিত্রতা উপলব্ধি করে তিনি ঘােষণা করেন যে, 'জননীর পদতলে সন্তানের বেহেস্ত'।
উপসংহার: মহানবী (স) ছিলেন আমাদের জীবনের পথপ্রদর্শক। মানবজাতির এ আদর্শ মহাপুরুষ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই রবিউল আউয়াল মাত্র ৬৩ বছর বয়সে নামাজরত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মহানবীর অনুসৃত পথেই হােক আমাদের পথচলা।
Thanks
Thank
আসসালামু আলাইকুম। ধন্যবাদ ।
Thanks brother
😊😊
Thanks 👍👎
I appreciate