মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য জেনে নিবো। তোমরা যদি মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য টি।।
মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য |
আর হ্যা আমরা তোমাদের সুবিধার জন্য আমরা খুব সহজ ভাবে আজকের এই মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য টি তুলে ধরেছি।
মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা
ভূমিকা: স্রষ্টার সৃষ্টিশীল জগতে স্রষ্টার পরে পিতামাতাই আমাদের সৃষ্টির উৎস । বাস্তব জীবনে পিতামাতাই আমাদের অস্তিত্ব দান করেন। তারা আমাদের লালন পালন করেন। তাদের আদর-স্নেহে আমরা বড় হয়ে উঠি। পিতামাতা যেমন আমাদের প্রতি অনেক দায়িত্ব পালন করেন তেমনই পিতামাতার প্রতি আমাদেরও অনেক দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে।
পিতামাতার প্রতি ব্যবহার: আমাদের প্রধান দায়িত্ব হলাে পিতামাতার সঙ্গে ভালাে ব্যবহার করা। তাদের সঙ্গে কোনাে অবস্থাতেই দুর্ব্যবহার করা উচিত নয়। তাদের সঙ্গে সবসময় নম্র আচরণ করতে হবে। এমন কোনাে ব্যবহার পিতামাতার সাথে করা যাবে না, যাতে তারা মনক্ষুন্ন হন। তাদের। সাথে এমন ব্যবহার করতে হবে- যে ব্যবহার পেলে আমাদের প্রতি তাদের ভালােবাসা উত্তরােত্তর বৃদ্ধি পাবে। তারা সন্তানকে শাসন করার জন্যে কোনাে কোনাে সময় কটুকথা ও কঠোর আচরণ করলেও তা সন্তানের মঙ্গলের জন্যেই করে থাকেন। পিতামাতার শাসনের আড়ালে থাকে ভালােবাসা। তাদের মতাে এমন অকৃত্রিম শুভাকাক্ষী দ্বিতীয় আর নেই। সন্তানের উচিত পিতামাতার সাথে ভালাে ব্যবহার করে তাদেরকে সম্মানিত করা, তাদের আবেগ-অনুভূতিকে মূল্যায়ন করা। পিতামাতা সন্তানের মুখ দেখলেই মনের অবস্থা বুঝতে পারেন। চোখের আড়ালে থাকলেও সন্তানের কোনাে অমঙ্গল হলে তারা ঠিকই বুঝতে পারেন। সন্তানের প্রতি পিতামাতার এই যে মায়া-মমতা-অনুভূতি-দায়িত্ব এসবই সন্তানকে যাবতীয়। বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করে থাকে। সন্তানের কাছে তারা বটবৃক্ষের মতাে। বটবৃক্ষের মতাে ছায়া দ্বারা সন্তানকে শান্তিপূর্ণ জীবন কাটাতে সহযােগিতা করেন তাঁরা। সন্তানের উচিত পিতামাতার ভালােবাসাকে, মায়া-মমতাকে মর্যাদাপূর্ণ ও অর্থবহ করতে তাদের প্রতি ভালাে ব্যবহার করা, নম্র আচরণ করা। নম্র আচরণের মাধ্যমে সন্তান তার পিতামাতার মনে যেমন শান্তি দিতে পারে তেমনই সে নিজেও তাদের নিবিড় সম্পর্কের বন্ধনে জীবনকে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে কানায় কানায় ভরিয়ে তুলতে পারে ।
ভরণপােষণের ব্যবস্থা করা; পিতামাতা যেমন আমাদের সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে লালন-পালন করে বড় করে তােলেন তেমনই আমাদেরও উচিত পিতামাতার ভরণপােষণের ব্যবস্থা করা। তারা যখন অসহায় হয়ে পড়েন অর্থাৎ যখন তাদের কাজ করার কোনাে ক্ষমতা থাকে না, তখন তাদের ভরণপােষণের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। নিজেরা যা খাবে তাদেরও তাই খেতে দিতে হবে। এমনকী তাদের জন্যে মাঝে মাঝে আলাদা খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। রােগেশােকে সেবা-যত্ন করতে হবে, ওষুধ-পত্রের ব্যবস্থা করতে হবে। তারা যেন কোনাে দিক দিয়ে মনে কষ্ট না পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।
বুদ্ধকালীন পরিচর্যা: সন্তানের উচিত বৃদ্ধকালে পিতামাতার উপযুক্ত পরিচর্যার ব্যবস্থা করা। কারণ বৃদ্ধকালে তারা অত্যন্ত অসহায় হয়ে পড়েন। এ সময় তাদের কাজের ক্ষমতা থাকে না, এমনকী চলার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন। তাই প্রতিটি সন্তানের উচিত এ সময় তাদের পাশে থাকা এবং তাঁদের প্রতিটি কাজে সর্বাত্মক সহযােগিতা করা। সন্তানের মনে রাখা উচিত একদিন সে নিজেও পিতা হবে, বয়সে বৃদ্ধ হবে। সে তার পিতামাতার জন্যে যতটুকু করবে তার সন্তানও তার জন্যে ততটুকুই করবে। কারণ তার সন্তান তার কাছ থেকে দেখে এসব শিখবে। পিতামাতা বয়সে বৃদ্ধ হলেও সন্তানকে মনে রাখতে হবে যে, পিতামাতার কারণে সে তার জীবন লাভ করেছে জীবন পরিচালনার উপায় ও পথ পেয়েছে।
অবাধ্য না হওয়া: কোনােভাবেই পিতামাতার অবাধ্য হওয়া উচিত নয় । পিতামাতা যা বলে তা শুনতে করাই ভালাে। কারণ পিতামাতা ভালাে জানেন সন্তানের জন্যে কোনটি মঙ্গলজনক। এমন কোনাে পিতামাতা নেই যারা সন্তানের অমঙ্গল চান । রেখে গেছেন মাতৃসেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বােস্তামীর মাতা ঘুম থেকে জেগে পানি চেয়েছিলেন। কলসিতে পানি নেই দেখে তিনি রাত দুপুরে চলে যান ঝরণা থেকে পানি আনতে। এসে দেখলেন মা আবারও ঘুমিয়ে পড়েছেন। ঘুম থেকে জাগালে তিনি কষ্ট পাবেন ভেবে বােস্তামী মাকে ডাকলেন না। মা জাগার পর দেখলেন বােস্তামী পানি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। এ অবস্থা দেখে বােস্তামীর মা বােস্তামীর জন্যে প্রাণ। খুলে দোয়া করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে বােস্তামী মাতার প্রতি কর্তব্যের এক উজ্জ্বল নজির রেখে গেছেন।
বিভিন্ন ধর্মের আলােকে: পবিত্র হাদিসে উল্লেখ আছে যে, পিতামাতার পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। তাই পিতামাতাই আমাদের ইহজগৎ ও পরকালের একমাত্র মুক্তির উপায় । সবার আগে পিতামাতার দোয়া কাজে লাগে। শুধু ইসলাম ধর্মেই নয়, পৃথিবীর সকল ধর্মেই পিতামাতার স্থান সর্বোচ্চ দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা এমন কিছু করব না যে কাজে পিতামাতা অসন্তুষ্ট হন। পিতামাতার সন্তুষ্টির মাধ্যমেই আমাদের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মুক্তি সম্ভব।
মত্যর পরের কর্তব্য: পিতামাতার মৃত্যুর পরও তাদের প্রতি সন্তানের অনেক দায়িত্ব কর্তব্য থেকে যায়। তাদের মৃত্যর পর প্রত্যেক সন্তানের উচিত। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা। সন্তান যদি পিতামাতার কবরস্থানে গিয়ে দোয়া করে তাহলে আলাহ মে ঋণগ্রস্ত থাকলে সন্তানেরই তা পরিশােধ করা উচিত।
উপসংহার: পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য লিখে শেষ করা যাবে না। পিতামাতা ছাড়া যেমন আমাদের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না তেমনই তাদের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য পালন ছাড়া আমাদের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মুক্তি ভাবা যায় না। আমাদেরকে বায়েজীদ বােস্তামীর মতাে পিতামাতাকে সেবা করার নজির সৃষ্টি করতে হবে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য টি। যদি তোমাদের আজকের এই মাতা পিতার প্রতি সন্তানের কর্তব্য রচনা | মাতা পিতার প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।