জানাজার নামাজের দোয়া বাংলা অর্থ সহ pdf জানাজার নামাজের নিয়ম
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা। আজকের ব্লগ পোস্টের বিষয় হলো জানাজার নামাজের দোয়া বাংলা অর্থ সহ ও জানাযার নামাজের নিয়ত এবং জানাযার নামাজের নিয়ম। আপনারা পড়তেছেন জানাজার নামাজের দোয়া বাংলা অর্থ সহ ও জানাযার নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে জানাজার নামাজের দোয়া বাংলা অর্থ সহ জানাজার নামাজের নিয়ম।
জানাযার দোয়া জানাযার নামাজের নিয়ম নিয়ত |
যদি তোমরা কখনো জানাযা কারো করতে চাও সেক্ষেত্রে আজকের পোস্ট অনেক গুরুতব হবে আপনার জন্য।
জানাজার নামাজের দোয়া বাংলা অর্থ সহ pdf জানাজার নামাজের নিয়ম
জানাযা করার অনেক কিছু জানতে হবে জানাযার দোয়া অর্থ সহ, জানাযার নামাজের ফরজ কয়টি, নাবালক ছেলের জানাযার দোয়া, নাবালক শিশুর জানাযার দোয়া ও ছোট বাচ্চার জানাযার দোয়া এবং নাবালিকা মেয়ের জানাযার দোয়া।
তো বন্ধুরা চল আমরা বিস্তারিত সব কিছু জেনে নেই। আর হ্যা একবার না পড়িয়া, পড় শতবার। একবার পড়ে বুঝতে না পড়লে আরো পড়তেই থাকবেন। তাই যেকোনো জিনিস বোঝার জন্য বারবার পড়া প্রয়োজন।
জানাযার নামাযের বিবরণ
নবী করীম (সঃ) বলিয়াছেন।"কোন মুসলমান মুরদার উপর চল্লিশজন মুসলমান (যাহারা আল্লাহর সহিত কাহাকেও শরীক করে না) জানাযার নামাজ পড়িলে আল্লাহ তায়ালা তাহাদের দোয়া কবুল করিয়া মৃত লােকটিকে ক্ষমা করিয়া দেন।” কাজেই যত বেশী সংখ্যক লােক জানাযায় শরীক হইবে, ততই মৃতের লকে ভাল হইবে।
জানাজার নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি
জানাযার মধ্যে ফরজ দুইটি
১। চারবার 'আল্লাহু আকবর' বলা,
২। দাঁড়াইয়া জানাযার নামাজ পড়া। বিনা ওযরে না দাঁড়াইয়া নামাজ পড়িলে দুরুস্ত হইবে না। (দোঃ মােঃ)।
জানাযার নামাযের সুন্নাতসমূহ
জানাযার সুন্নাত তিনটি
১। আল্লাহ তায়া'লার প্রশংসা করা,
২। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নামে দুরূদ পাঠ করা,
৩। মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা।
জানাযার জন্য জামায়াত শর্ত নহে। কোনও এক ব্যক্তি জানাযার নামাজ পড়িয়া দিলে ফরজ আদায় হইয়া যাইবে। তবে অধিক সংখ্যক লােক একত্র হইয়া জানাযার নামাজ পড়িয়া আল্লাহ তায়ালার দরবারে মৃতের জন্য দোয়া করিলে উহা শীঘ্ৰ কবুল হইয়া থাকে ।
স্ত্রীলােক কিংবা নাবালেগ জানাযা পড়িয়া দিলেও দুরুস্ত হইবে এবং ফরজ আদায় হইবে। স্ত্রী, পুরুষ ও বালক, বালিকা একত্রে জানাযার নামাজ পড়িলেও দুরুস্ত হইবে।
এই অবস্থায় পুরুষ, বালক, স্ত্রীলােক ও বালিকা যথাক্রমে পশ্চাতে সারি বাধিয়া দাঁড়াইবে। জানাযার নামাজে মাত্র সাতজন মুছুল্লী হইলে ইমাম ব্যতীত তিন কাতার করিবে এবং প্রথম কাতারে তিনজন দ্বিতীয় কাতারে দুইজন এবং তীয় কাতারে একজন দাড়াইবে।
জানাজার নামাজের নিয়ত
মতের লাশকে উত্তর দিকে মাথা করিয়া সম্মুখে রাখিয়া তাহার বুক বরাবর ইমাম দাঁড়াইবে এবং মুছল্লিগণ যথারীতি ইমামের পিছনে সারি বাধিয়া দাড়াইবে।
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন্ উয়াদ্দিয়া আরবাআ তাকবীরাতি সালাতিল জানাযাতি ফারদুল কিফায়াতি, আসসানা ও লিল্লা-হি তাআলা ওয়াসসালাতু আলান নাবিয়্যি ওয়াদদোআ-উ লিহা-যাল মাইয়্যিতি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়তঃ জানাযা স্ত্রীলােকের হইলে লিহাযাল মাইয়্যিতি না বলে ‘লিহাযিহিল মাইয়্যিতি' বলতে হবে।
বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর ওয়াস্তে জানাযার ফরযে কেফায়ার নামায চার। তাকবীরের সহিত এই ইমামের পিছনে আদায় করছি এবং এই মৃতের জন্য দোয়া। করছি। আল্লাহু আকবার।
তাকবীরে তাহরীমার পর সানা
উচ্চারণঃ সােবহানাকা আল্লা-হুমা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাসুকা ওয়া জাল্লা সানা কা ওয়ালা ইলা-হা গাইরুক।
২য় তাকবীরের পর পড়ার দরুদ
সানার পর তাহরীমা না ছেড়ে ইমাম সশব্দে দ্বিতীয় তাকবীর বলবেন এবং মােক্তাদী সকলে চুপে চুপে তাকবীর বলে নিম্নের দুরূদ শরীফ পড়বেন। উচ্চারণ ঃ আল্লা-হুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ওয়া সাল্লাম তা ওয়া বারাকতা ওয়া তারাহহামত আলা ইবরাহীমা ওয়া আলা আলি ইবরাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।
পূর্ণ বয়স্ক লােকের জানাযা হইলে ইমাম সাহেব সশব্দে আর মােক্তানী হলে চুপে তৃতীয় তাকবীর বলে নিম্নলিখিত দােআ পড়বে।
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা গফির লি-হাইয়্যিনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিসিনা ওয়া গা য়িবিনা ওয়া সাগীরিনা ওয়া কাবরিনা ওয়া যাকারিনা ওয়া উনসানা, আল্লাহুমা মান আহইয়াইতাহ মিন্না ফাআহয়িহী আলাল ইসলামি ওয়া মান তাওয়াফাইতাহ মিন্না ফাতাওয়াফফাহু আলাল ঈমানি বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
এই দোআর পর হাত না উঠায়ে ইমাম সাহেব সশব্দে আর মােক্তানী চুপে চুপে চতুথ তাকবীর বলৰে এবং ডানে বামে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করবে।
জানাযা নাবালেগ ছেলের হইলে তৃতীয় তাকবীর এর পর নিম্নের দোআ পড়বে।
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাজআলহু লানা ফারাওঁ ওয়াজআলহু লানা আজরাওঁ ওয়া যুখরাওঁ ওয়াজআলহু লানা শাফিআও ওয়া মুশাফফাআ ।
নাবালেগা মেয়ে হইলে তৃতীয় তাকবীর এর পর নিম্নোক্ত দোয়া পড়বে
উচ্চারণ: আল্লাহু মাজআলাহা লানা ফারুত্বাওঁ ওয়াজ আলহা লানা আজরাওঁ ওয়া যুখরাওঁ ওয়াজ আলহা লানা শাফিআতাওঁ ওয়া মুশাফাআহ।
জানাযায় বিলম্বে শরীক হলে করণীয় কোন ব্যক্তি জানাযার নামাজে দুই একটি তকবীর শেষ হওয়ার পর আসিলে, এমতাবস্থায় সে অন্যান্য নামাজের মাসবুকের ন্যায় তখনই জানাযায় শামিল হইবে না, বরং ইমামের সর্বশেষ তাকবীরের সময়ে শরীক হইয়া ইমামের সহিত তাকবীর বলিবে!
ইহাই সে ব্যক্তির তাকবীরে তাহরীমা। ইমাম সালাম ফিরানাের পর সে | তাহার বাকী তাবারগুলি কিছু না পড়িয়া নিজে নিজে আদায় করিবে।
আর যদি সে চতুর্থ তাকবীরের পর এবং ছালাম ফিরাইবার পৰে উপস্থিত হন, তাহা হইলে ইমন সালাম ফিরাইবার পূবেই তাড়াতাড়ি জামায়াতে শামিল হইবে এবং ইমামের সালামের পর সে শুধু তাকবারগুলি উচ্চারণ করিৰে। ইহা ইমাম আবু ইউসুফের (রহ)-এর মত। (দোঃ মােঃ)
একাধিকবার জানাযার নামায আদায় করা
মৃত ব্যক্তির অভিভাবক কর্তৃক আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তি জানাযার নামাজ পড়াইবে। | অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কেহ (যাহার হক নাই) জানাযা পড়াইয়া থাকিলে অভিভাবক ইচ্ছা করিলে দ্বিতীয়বার জানাযা পড়াইতে পারিবে ; এমন কি দাফন করিয়া থাকিলেও কবরের উপর জানাযা পড়িতে পারিবে । কিন্তু বাদশাহ বা তাহার কোন প্রতিনিধি মতব্যক্তির অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত জানাযা পড়াইয়া থাকিলে অভিভাবক দ্বিতীয়বার জানাযা পড়াইতে পারিবে না । (শামী)।
গায়েবানা জানাযা আদায় করা
ইমাম আযম আবু হানীফা (রহঃ) এর মতে, গায়েবানা জানাযা জায়েয নাই । ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)-এর মতে জায়েয।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে দেখা যায় নাজ্জাসীর মৃত্যুর পর রাসূল (সঃ) মদীনায় গায়েবানা জানাযা পড়েছেন। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, রাসূল (সঃ) এবং নাজ্জাসীর মধ্যকার দূরত্বের পর্দা আল্লাহ পাকের ইচ্ছায় তুলে দেয়া হয়েছিল এবং এটা ছিল রাসূল (সঃ)-এর একটা মােজেযা । অন্যদের জন্য গায়েবানা জানাযা জায়েয নাই।
দাফনের পর দোয়া করা
দাফন করা শেষ হইলে কিছুক্ষণ কবরের পার্শ্বে দাড়াইয়া কোরআন শরীফ পড়িয়া মৃতের জন্য দোয়া করা মুস্তাহাব। (আলমগীরী, শামী)
কবর যিয়ারত করা
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করিয়াছেনঃ “তােমরা কোরআন পাঠ দ্বারা। তােমাদের মৃত ব্যক্তিগণের কবরকে আলােকিত রাখ।" | এ হাদীসের মর্মানুযায়ী বুঝা যায় যে, মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে কোরআন পাঠ করা তাহার অন্ধকার কবরের বাতিস্বরূপ ।
অপর হাদীসে আছে।মৃত ব্যক্তিকে দাফন করিয়া লােকগণ কিছু দূরে আসিলেই তাহাকে কবরে জীবিত করিয়া দেওয়া হয়। সে কবরে থাকিয়া বাহিরের মানুষের পায়ের শব্দ শুনিতে পায়। এইজন্যই রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নিজে বহু কবরস্থানে দাঁড়াইয়া মৃতদের জন্য দোয়া করিয়াছেন। (মুসলিম)। | পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাঁহাদের কবর জেয়ারত করা সন্তানগণের উপর একটি দাৰী। জেয়ারতের ফলে মৃত ব্যক্তি আত্মার বিশেষ উপকার হয় এবং
জেয়ারতকারীর আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়। তদুপরি প্রায়ই কবর জেয়ারত করিলে। | নিজের মউতের কথাটি ও বেশি বেশি স্মরণ হয়।
হাদীস শরীফে আছেযে ব্যক্তি কোন কবরস্থানে গিয়া ১১বার সূরা এখলাছ। পড়িয়া উহার সাওয়াব সেই কবরস্থানের মুরদাগণের জন্য বখশাইয়া দেয়, এ কবরস্থানে যতগুলি মুরদা আছে, পাঠকারী ততটি সাওয়াব লাভ করিবে।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে৷যে ব্যক্তি কোন কবরস্থানে একবার করিয়া ‘সূরা ফাতেহা', 'কুলহু আল্লা ও ‘আল হা-কুমুত তাকাসুর' পড়িয়া তারপর এই কথা বলে৷“হে খােদা! আমি তােমার পবিত্র কালাম হইতে যাহা কিছু পাঠ করিলাম, উহার সাওয়াব এই কবরস্থানের সকল মুসলমান স্ত্রী-পুরুষ মুরদার উপর বখশিয়া দিলাম", কেয়ামতের দিন সেই সকল মুরদা আল্লাহ তায়ালার দরবারে সেই ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করিবে। (দায়লামী)
হযরত আনাস (রাঃ) হইতে বর্ণিত আছে৷যদি কেহ কোন কবরস্থানে গিয়া সূরা ইয়াসীন' পাঠ করে তাহা হইলে সেই কবরস্থানে কোন কবরবাসীর উপর শাস্তি হইতে থাকিলে ‘সূরা ইয়াসীনের' বরকতে তাহার শাস্তি রহিত করিয়া দেওয়া হইবে এবং যে ব্যক্তি পাঠ করিবে, তাহার আমলনামায় সেই কবরস্থানের মুরদার সমান সংখ্যক নেকী লিপিবদ্ধ করা হইবে। (কানযঃ)
বায়হাকী শরীফে আছে৷যে ব্যক্তি বিশেষ করিয়া শুক্রবার দিনে তাহার পিতা-মাতার কবর জেয়ারত করিয়া তাহাদের মাগফেরাতের জন্য দোয়া করিবে,। আল্লাহ্ তায়া'লা সেই দোয়া কবুল করিবেন এবং সে ব্যক্তি ই পিতা-মাতার বাধ্য সন্তানরূপে পরিগণিত হইবে।
স্ত্রীলােকগণ কবর জেয়ারত করিতে যাওয়া, দুরুস্ত নাই। হাদীসে আছে। জেয়ারতকারিনী স্ত্রীলােকগণের উপর আল্লাহ তায়া'লা লা'নত করিয়াছেন।”
কবর যিয়ারত করার সুন্নত নিয়ম
কবরস্থানে গিয়া প্রথমে নিম্নের দোয়াটি পড়িয়া মৃতদের উদ্দেশ্যে সালাম করিবেঃ
السلام عليكم يا اهل القبور من المسلمين والمؤمنين
كگم تبع وانا ان شاء الله بكم لاحقون . انتم لا تكون
উচ্চারণ।আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুরি মিনাল মুসলিমীনা ওয়াল মু'মিনীনা আনতুম লানা সালাফু ও ওয়া নাহনু লাকুম তাবাওন ওয়া ইন্না ইনশা-আল্লাহু বিকুম, লা-হিকুন।।
অর্থাৎ৷হে কবরস্থিত মুমিন-মুসলমান ব্যক্তিগণ! তােমাদের উপর শান্তি বর্ষিত । হউক । তােমরা আমাদের পূর্বপুরুষ, আমরাও খােদার হুকুমে তােমাদের সহিত মিলিত হইব।
তারপর আদবের সহিত দাড়াইয়া কোরআনের আয়াত ও দুরূদ ইস্তেগফার ইত্যাদি পাঠ করিয়া মুনাজাত করিয়া সকল মৃতের রূহের উপর সওয়াব বখশাইয়া দিবে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ জানাজার নামাজের দোয়া বাংলা অর্থ সহ জানাজার নামাজের নিয়ম
বন্ধুরা আজকে জানলাম জানাযার দোয়া | জানাযার নামাজের নিয়ম নিয়ত। যদি তোমাদের আজকের এই জানাযার দোয়া | জানাযার নামাজের নিয়ম নিয়ত ব্লগ পোস্ট টি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার ও কমেন্ট করতে ভুল্বে না। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইট এর সাথেই থাকুন