আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা | গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা | গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা, গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা, গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা টি।
আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা |
আর হ্যা আমরা তোমাদের সুবিধার জন্য আমরা খুব সহজ ভাবে আজকের আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা | গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা টি তুলে ধরেছি।
গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা
ভূমিকা : গ্রন্থ বা বই মানবসমাজের একটি উল্লেখযােগ্য অর্জন। মানবসভ্যতার ইতিহাসে গ্রন্থ একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। দেহের পুষ্টি জোগায় খাদ্য আর বই মনের। তাই বই' সভ্যসমাজের মানুষের নিত্যসঙ্গী। এর ভাষায়, “Where ever there is civilization there must be books, and where ever there are books, there must be libraries.' লেখক লেখেন, প্রকাশক ছাপেন, বিক্রেতা বই বিক্রি করেন আর গ্রন্থাগারিক তা সংগ্রহ করে যথাযথ বিন্যস্ত করেন এবং পাঠকসমাজ গ্রন্থাগার থেকে বই পড়ে মনের খােরাক এবং জ্ঞানলাভে সমর্থ হন। জ্ঞানের বহিঃপ্রকাশই হচ্ছে গ্রন্থ। তাই সৃষ্টির প্রথম লগ্ন থেকে অদ্যাবধি মানবজাতির অর্জিত সকল জ্ঞান বিকাশ লাভ করেছে গ্রন্থ রচনা ও প্রণয়নের মাধ্যমে। গ্রন্থাগারসমূহ তাই সংরক্ষণ করে এবং তা যাতে পাঠকরা প্রয়ােজনের সময় হাতের কাছে পায়, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। একথাটি কিছুতেই অস্বীকার করা যাবে না যে, মানুষের জ্ঞান আহরণের প্রধান উৎস হচ্ছে গ্রন্থ।
গ্রন্থাগারের উৎপত্তি ও বিকাশ : মানুষের বই পড়ার আগ্রহ থেকেই গ্রন্থাগারের উৎপত্তি। যখন থেকে বই প্রকাশ হয়েছে, তখন বই সংগ্রহের তাগিদ থেকে গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়ে আসছে। মানুষের অনুসন্ধানস্পৃহা নব নব প্রাপ্তির আনন্দেউৎফুল্ল হয়ে ওঠে। ক্রমে মানুষের জ্ঞানভাণ্ডার ভরে উঠতে থাকে। গাছের বাকল, পাহাড়ের গা, প্যাপিরাস, চামড়া, পাথর, বাশ ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের জ্ঞান লিপিবদ্ধ হয়। এভাবে মানুষের জ্ঞানভাণ্ডার বিস্তৃত। থেকে বিস্তততর হয়েছে। ক্রমবিস্তত জ্ঞানভাণ্ডার নিজেদের এবং ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্যে সংরক্ষণের প্রয়ােজনীয়তা মানুষ একসময় অনভব করে। গ্রন্থাগারের ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায়, রােমে প্রথম গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়। সর্বসাধারণের মধ্যে জ্ঞানবিস্তারের জন্যে খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়। রােম ছাড়াও প্রাচীনকালে ব্যাবিলন, মিশর, চীন, ভারত ও তিব্বতে গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়েছিল । ইসলামের আবির্ভাবের ফলে মুসলমানদের শাসন আমলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়েছিল ।
গ্রন্থাগার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনই মানুষের জন্যে যথেষ্ট নয়। স্বাধীনভাবে জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে গ্রন্থাগার বন্ধুর মতাে সামনে এসে দাঁড়ায়। গ্রন্থাগার ব্যাপক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্থাপিত হয়। গ্রন্থাগারের সাহায্যে সবশ্রেণির মানুষই উপকৃত হয়। গ্রন্থাগারে থাকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিচিত্র বিষয়ের গ্রন্থ । তাই গ্রন্থাগারে এসে জ্ঞানসমুদ্রে অবগাহন করার সুযােগ পাওয়া যায়।
গ্রন্থাগারের উপযােগিতা : গ্রন্থাগারের উপযােগিতা নিয়ে সন্দেহ কিংবা সংশয়ের কোনাে সুযােগ নেই। আমাদের মতাে গরিব দেশে গ্রন্থাগারের উপযােগিতা উন্নত দেশগুলাের চেয়ে অনেক বেশি। কারণ মৌলিক চাহিদা মেটাতেই আমরা হিমশিম খাই। তাই আমাদের পক্ষে বই কিনে পড়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। এদেশে গ্রন্থাগার ব্যাপক শিক্ষার বাহন হতে পারে। একটি পক্ষপাতমুক্ত সমাজ গড়ার সহায়কশক্তি লেখক, প্রকাশক ও গ্রন্থাগারিক। লেখক ও প্রকাশকরা তাদের প্রকাশিত বইপত্র নিকটস্থ গ্রন্থাগারে উপহার দিয়ে প্রকৃত নাগরিক গড়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। C Harrison তার 'The library and the Community' গ্রন্থে বলেছেন, 'Library is essentially an agency that promotes an understanding of social and economic forces and conditions without which there can be no true realization of the democratic way of life. গণতন্ত্রের সাফল্যে গ্রন্থাগারের ভূমিকা টেলিভিশন, রেডিও, প্রচারমাধ্যম। ইত্যাদির চেয়ে অনেক বেশি।
গ্রন্থাগার ও আধুনিক বিশ্ব : আধুনিক বিশ্বে গ্রন্থাগারের প্রয়ােজনীয়তা দিনে দিনে বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাই বড় বড় গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়ে আসছে। লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম, প্যারিসের Bibliothegne National, মস্কোর লেনিন গ্রন্থাগার, ওয়াশিংটনের সাধারণ পাঠাগার প্রভৃতি বিশ্বের উল্লেখযােগ্য গ্রন্থাগারগুলাের অন্যতম। এসবের আদর্শ অনুসরণ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশসহ আমাদের দেশেও গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছে। ঢাকায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, এশিয়াটিক সােসাইটি গ্রন্থাগার, বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগার, রাজশাহীর বরেন্দ্র মিউজিয়াম প্রভৃতি আমাদের দেশের উল্লেখযােগ্য গ্রন্থাগার ।
গ্রন্থাগারের শ্রেণিবিভাগ : গ্রন্থাগারকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : ক. ব্যক্তিগত, খ. পারিবারিক ও গ, সাধারণ । স্বাভাবিকভাবেই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক গ্রন্থাগারের পরিসর সীমিত। সাধারণ গ্রন্থাগার যেহেতু সর্বসাধারণের জন্যে, সেহেতু এর পরিসরও ব্যাপক। এবং বিস্তৃত। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র-শিক্ষকের প্রয়ােজনে গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়ে থাকে।
গ্রন্থ নির্বাচন ও ব্যবহার : মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী। জীবন ও জীবিকার প্রয়ােজনে মানুষকে প্রতিনিয়ত ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয় । এজন্যে জীবনে খুব। বেশি বই পড়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। গ্রন্থাগারের অনেক বই থেকে পাঠককে তার রুচি, প্রয়ােজন ও যােগ্যতা অনুসারে বই নির্বাচন করে পড়তে। হয়। গ্রন্থাগারের নিজস্ব নিয়ম মেনেই পাঠককে বই পড়তে হয়।।
উপসংহার : শিক্ষার সঙ্গে আনন্দের সংযােগ না থাকলে সে শিক্ষা মানুষের আত্মাকে বিকশিত করতে পারে না। কিন্তু আমাদের শিক্ষা। প্রতিষ্ঠানগুলােতে পাঠ্যবইয়ের বাইরে যাওয়ার স্বাধীনতা শিক্ষার্থীদের নেই। এ পদ্ধতি তাকে স্বশিক্ষিত তাে করেই না; বরং স্বশিক্ষিত হওয়ার। শক্তিটক নষ্ট করে দেয় । কিন্তু গ্রন্থাগার সবার জন্যেই মুক্ত ও অবাধ। সুতরাং কেবল ছাত্রই নয়; সকল পেশার মানুষের জ্ঞান অর্জনের সুযােগের। মাধ্যমে জাতির প্রাণশক্তি বৃদ্ধির জন্যে স্কুল-কলেজের মতাে গ্রামে-গ্রামে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করাও আজ অত্যন্ত জরুরি। । ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা | গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা | গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা টি। যদি তোমাদের আজকের এই আমার স্বপ্নের গ্রন্থাগার রচনা | গ্রন্থাগারের প্রয়োজনীয়তা রচনা টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।