আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো একটি ঝড়ের রাত রচনা | তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি একটি ঝড়ের রাত রচনা | তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের একটি ঝড়ের রাত রচনা | তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা টি।
|
একটি ঝড়ের রাত রচনা তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা |
আর হ্যা আমরা তোমাদের সুবিধার জন্য আমরা খুব সহজ ভাবে আজকের একটি ঝড়ের রাত রচনা | তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা টি তুলে ধরেছি।
একটি ঝড়ের রাত রচনা
ভূমিকা: একজন মানুষ তার জীবনে বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতার সঙ্গে পরিচিত হয়। কিন্তু সমস্ত কথা সবসময় তার মনে থাকে না। কিন্তু এমন কিছু ঘটনা আছে যা মানুষের হৃদয়পটে স্থায়ীরূপে মুদ্রিত হয়ে যায়। ২০০৭ সালের ৯ই নভেম্বর কাল রাতের কথা আমার মনের মণিকোঠায় চিরদিনের জন্যে সঞ্চিত হয়ে রয়েছে। এখনও কোনাে নিঃসঙ্গ মুহূর্তে একাকী মনে তার ঘাের তমসাময়ী ভয়ংকর রূপ প্রত্যক্ষ করে শিউরে উঠি।
স্মরণীয় রজনী ২০০৭ সালের ৯ই নভেম্বর: ঝড়, জলােচ্ছ্বাস, সাইক্লোন, হারিকেন ও মহাপ্লাবনের রক্তক্ষয়ী ধ্বংসযজ্ঞে প্রতিবছর ক্ষত-বিক্ষত হয়, সুজলা-সুফলা ও শস্য-শ্যামলা বাংলা মায়ের বুক। এমনই একটা চিরস্মরণীয় চরম দুঃখের ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছিল ২০০৭ সালের ৯ই নভেম্বর রাতে। এটা আমার ক্ষুদ্র জীবনের একটা ভয়াবহ বেদনার ইতিহাস। এদিন উপকূলীয় অঞ্চলের সাতক্ষীরা, বাগের হাট, পটুয়াখালী, বরিশাল, শরীয়তপুরসহ প্রায় সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২২টি জেলা। সিডর নামক প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় আর জলােচ্ছ্বাসে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। এটা ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ।
ঝড়ের পূর্বাভাস: কিছুদিন ধরে আবহাওয়ার বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। হঠাৎ সেদিন আকাশজুড়ে মেঘের অবাধ বিচরণ। টুকরাে টুকরাে মেঘগুলাে একসঙ্গে জড়াে হতে আরম্ভ করে দিল। রেডিও ও টিভি থেকে ঘােষণা করা হলাে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে, ক্রমে তা ঝড়ের রূপ ধারণ করছে এবং আস্তে আস্তে এটা উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বিপদ সংকেত ১ নম্বর থেকে বেড়ে ১০ নম্বরে উঠল। সবাই সাবধান। আতকে সবার বুক দুরু দুরু । যে কোনাে মুহূর্তে ভয়াবহ একটা কিছুর জন্যে প্রহর গুনছে সবাই।
সেই মহাঝড়: ৯ই নভেম্বর। সকাল থেকে কালাে কালাে পুঞ্জীভূত মেঘ স্তবকে স্তবকে পরিগ্রহ করছিল ঘন ঘােররূপ। সারাদিন আকাশ তােলপাড় করে ঝড়ােহাওয়া বইছিল। আর চলছিল একটানা বর্ষণ। এক অজ্ঞাত দুর্যোগের আশঙ্কায় পথ ছিল জনবিরল। উন্মত্ত বাতাস ও বৃষ্টির প্রতিযােগিতায় সমস্ত শহর জলসিক্ত হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে কেউ জানে না কখন সূর্যদেব মেঘের আড়ালে অন্তর্হিত হয়েছিল। সারাদিন কেউ সূর্যের মুখ দেখেনি। মেঘাচ্ছন্ন সারাটা দিন রাতের মতাে প্রতিভাত হয়েছিল। রাতের প্রথম প্রহরে শুরু হলাে উন্মত্ত, নিষ্ঠুর প্রচণ্ড ঝড়। রাত দশটায় শুরু হলাে মহাপ্রলয়ের মহানৃত্য। খােলা জানালা দিয়ে বন্যার জলের মতাে হুড়মুড় করে মাতাল হাওয়া ঢুকছে। হাওয়ার সাথে সাথে ধুলাে। জানালার কবাট একবার ধপাস করে বন্ধ হচ্ছে, একবার হা হা শব্দে খুলে যাচ্ছে। সব লণ্ডভণ্ড, তছনছ করে দিচ্ছে। মনে হলাে, এ যেন মত্ত-মাতঙ্গের সরােষ দাপট। বাইরে নিকষ কালাে অন্ধকারের সীমাহীন সাম্রাজ্য। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। গাছপালায় হাওয়ার মাতামাতি। টেবিলের ওপর ঝনাৎ ঝংকারে দেয়ালের টাঙানাে ছবিটা পড়ে গেল। ফরফর শব্দে ক্যালেন্ডারের পাতা উড়ছে। খাতাপত্তরও ছিটকে এদিক-সেদিক পড়ে যাচ্ছে। প্রাণপণে জানালাটা বন্ধ করার চেষ্টা করি। এক কবাট টানি তাে আর একটা ছুটে যায়। দরজায় দুম দাম শব্দ। যেন ডাকাত পড়েছে। এক্ষুণি বুঝি দরজাটা ভেঙে যাবে। এরই মধ্যে ওপাশ থেকে বাবার গলা ভেসে এল, আমিও সাড়া দিলাম। আমাকে বড় ঘরে চলে যেতে বলছেন। সেই মুহূর্তে বিদ্যুৎ চমকাল, আর আলােয় দিগদিগন্ত উদ্ভাসিত হলাে । চোখে পড়ল কেশরফোলা সিংহের মতাে ক্রুদ্ধ আকাশটার ভয়ংকর, ভয়াল ক্ষিপ্ত চেহারা। কাছেই কোথাও বাজ পড়ল। এক ঝলক আগুন। বুকটা ধড়াস করে উঠল। কানে তালা লাগার দশা। অনেক কষ্টে জানালা বন্ধ করলাম । ঘরের ভেতরটা আরও বেশি গমগম করছে। হ্যারিকেন জ্বালালাম। ঘরের একি বিশ্রী অবস্থা। এখানে ওখানে ছড়ানাে সব বইখাতাপত্তর। ক্যালেন্ডারটা উল্টে গেছে। পানির গ্লাসটা এক কোণায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। একটা পাগলা হাওয়া হঠাৎ ঢুকে পড়ে ঘরটা ওলট-পালট করে দিয়েছে, লণ্ডভণ্ড বিধ্বস্ত চেহারা। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া, প্রচণ্ড বিক্রমে আছড়ে পড়ছে দরজাজানালায় । আমার ভেতরেও তখন দারুণ উকণ্ঠা। রাত্রির বুকে ঝড়ের অভিসার। দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম বারান্দায়। সঙ্গে সঙ্গে দুরন্ত ঝড়ােহাওয়া এসে আমার চোখে-মুখে ঝাপিয়ে পড়ল। মনে হলাে ওরা আমাকে টেনে নিয়ে যাবে ওই উন্মত্ত অন্ধকারের বুকে । অন্ধকারের সমুদ্র যেন সহসা উত্তাল, ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। মাঝ রাতে ঘণ্টায় ২৩৫ কিলােমিটার বেগে ৬ ঘণ্টাব্যাপী চলল মহাপ্রলয়ের তাণ্ডবলীলা। চারদিকে বজ্রধ্বনি, আগুনের বৃষ্টি, শোশো শব্দ— সব মিলিয়ে যেন মহাপ্রলয়ের শিঙ্গাধ্বনি। তার সঙ্গে ২০ থেকে ৪০ ফুট উঁচু জলােচ্ছ্বাস। ঝড়ের প্রচণ্ড বেগে যেন পৃথিবী দুলে উঠছে। কাঁচা ঘর-বাড়ি এবং গাছপালা বিকট শব্দ করে ভেঙে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে আকাশব্যাপী বিদ্যুতের চমক এবং মেঘের গর্তনে ধরণী খণ্ড-বিখণ্ড হওয়ার উপক্রম। মনে হলাে পৃথিবীর বুঝি অন্তিমদশা উপস্থিত, আর কয়েক মুহূর্তের মধ্যে হয়তাে সে এক ধ্বংসের অতলে তলিয়ে যাবে।।
ঝড়ের একপর্যায়ে আমরা: হঠাৎ এক পর্যায়ে চারদিকে মানুষের আর্তনাদ- বাঁচাও বাঁচাও শব্দে হৃদয় বিদীর্ণ হলাে পৃথিবীর। আমরা স্থির থাকতে পারলাম না। দোতলায় জানালা খুলে বাইরে তাকাতেই দেখি গােটা শহর আট/দশ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। মানুষ সাঁতার কেটে বাঁচার জন্যে এগিয়ে আসছিল, আমরা তাদের সহযােগিতা করার জন্যে ব্যস্ত হয়ে গেলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের ঘর ভর্তি মানুষ। আমরা সারারাত ঘুমাতে পারলাম না। অস্থিরতা আর ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই কেটে গেল রাত।
ঝড়ের পর: সকালে বাইরে এসে যা দেখলাম, তাতে মনে হলাে যেন কাল রাতে প্রকৃতি ধ্বংসের তাণ্ডবে মেতে উঠে সমগ্র এলাকা জুড়ে এক মহাশ্মশান সষ্টি করে গেছে। কত গাছপালা ভেঙে গেছে, কত ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে; যত্রতত্র মানুষ আর গবাদিপশুর লাশ পড়ে রয়েছে। তাদের সরানাে বা দাফন করার মতাে লােক নেই। লােকজন আপনজনের খোঁজে ছােটাছুটি করছে। গাছের ওপরেও মৃতদেহ আটকে থাকতে দেখলাম।
উপসংহার: বাস্তবিকই ঝড়ের এমন দুর্লভ অভিজ্ঞতা আমার আর কখনও হয়নি। ঝড়ের রাত্রির সেই নিদারুণ অভিজ্ঞতায় আমি বুঝতে শিখেছি যে। প্রকতির মধ্যে যেমন শান্তির প্রলেপ আছে, তেমনি আছে ধ্বংসের তাণ্ডবতা। শুভ্র জ্যোৎস্না-পুলকিত যামিনী দেখে কখনও ভাবতে পারি না যে, তার অন্তরালে অন্ধ তমসাময়ী ঝটিকা সংক্ষুব্ধ রাত্রি লুকানাে রয়েছে। এক প্রকৃতিরই দুই রূপ। সেই ঝড়ের রাত্রির নিদারুণ অভিজ্ঞতা আমি জীবনে ভুলব না।
একটি ঝড়ের রাত রচনা
বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে মানুষ বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখােমুখি হয়। এসব অভিজ্ঞতার কোনােটি আনন্দদায়ক, কোনােটি রােমাঞ্চকর আবার কোনােটি প্রচণ্ড ভয়ের। যে ঘটনাগুলাে মনকে বিশেষভাবে নাড়া দেয়, আহত করে বা ভীতিবিহ্বল করে, মানুষ তা সহজে ভােলে না। একটি ঝড়ের রাত তেমনই আমার জীবনের সমস্ত অভিজ্ঞতাকে ছাপিয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে।
আমি যখনই সে-রাতের কথা ভাবি, ভয়ে শিউরে উঠি। অন্ধকার রাত, ঝােড়াে বাতাসের গর্জন, সঙ্গে মুষলধারায় বৃষ্টি, হুড়মুড় করে চালা ঘরগুলাের ভেঙে পড়ার শব্দ, ভয়ার্ত মানুষের আর্তনাদ - সবকিছু আমার মনে ছবির মতাে ভেসে ওঠে। সকাল থেকেই ঈশান কোণে মেঘ জমছিল। কালাে কালাে পুঞ্জীভূত মেঘে দুপুরের পরই দিনের আলাে হারিয়ে গেল।
বাতাসও যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল। বেতার ও টেলিভিশনে বারবার বিপদ সংকেত জানানাে হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা সবাইকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে। তা শুনে মানুষও দলে দলে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছে। আমাদের পাকা দেয়ালে টিনের চালার বাড়ি। তাই বাবা বললেন, এখানে আমরা নিরাপদে থাকবাে। সন্ধ্যা হতে হতে প্রকতি এক অপরিচিত রূপ নিয়ে আবির্ভূত হলাে। রাখালেরা গরুর পাল নিয়ে আগেভাগেই বাড়ি ফেরে।
মাঝিরা নিরাপদ স্থানে নৌকা বাঁধে। নদীর ধারে দেখা গেল বেশ কয়েকজন নারী চরম উল্কণ্ঠা নিয়ে তাকিয়ে আছে অস্পষ্টপ্রায় জেলে-নৌকাগুলাের দিকে। প্রিয়জনের জন্য কাতর অপেক্ষা, পাখিদের ব্যস্ত হয়ে নীড়ে ফেরা, হাটুরেদের আতঙ্কিত পদক্ষেপ, থেকে থেকে গবাদি পশুর আর্তনাদ যেন আসন্ন বিপদের আভাস দিচ্ছিল। অল্পক্ষণেই অন্ধকারের চাদরে চারপাশটা ঢেকে গেল। বিদ্যুৎ চমকে আঙিনা থেকে দিগন্ত পর্যন্ত যেটুকু চোখে পড়ে, তার সবটাই আমার কাছে ভূতুড়ে লাগছিল।
সন্ধ্যার পর থেকে বাতাসের বেগ বাড়তে লাগলাে। তা ঝড়াে বৃষ্টিতে রূপ নিতে সময় নিল না। দানবীয় শক্তি নিয়ে ঝড় আছড়ে পড়ল আমাদের লােকালয়ে। আমি ভয়ে জড়ােসড়াে হয়ে বাবা-মার গা-ঘেঁষে বসে আছি। হারিকেনের আবছা আলােয় পরিবেশটা আরাে থমথমে। এর মধ্যে ঝড়ােবৃষ্টির একটানা শব্দে কানে তালা লাগার মতাে অবস্থা। বাবা বললেন, শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। টিনের চাল জায়গায় জায়গায় ছিদ্র হয়ে বৃষ্টির পানি পড়তে আরম্ভ হলাে।
মনে হলাে যে-কোনাে সময়ে পুরাে চালাটি আমাদের মাথার উপরে খসে পড়বে। বাবা আমাদের নিয়ে একটি মজবুত খাটের নিচে অবস্থান নিলেন। কিছুক্ষণ পরেই পায়ের নিচে পানির প্রবাহ টের পেলাম। বুঝলাম দরজার নিচ দিয়ে ঘরে একটু একটু করে পানি ঢুকছে। তখনও পর্যন্ত বাবা খাটের নিচে থাকা নিরাপদ মনে করলেন। পাশের বাড়ি থেকে নারী-পুরুষের আর্তচিৎকার শােনা যাচ্ছিল। বাবা চিৎকার করে তাদেরকে আমাদের ঘরে আসতে বললেন। কিছুক্ষণ পরেই বিকট শব্দে কিছু একটা আছড়ে পড়লাে বাড়ির একপাশে। বাতাসের প্রবল তােড়ে উড়ে গেল পিছনের বারান্দার চাল।
অল্পক্ষণ পরে প্রতিবেশীদের কয়েকজন কাকভেজা হয়ে হুড়মুড় করে আমাদের ঘরে ঢুকল। তাদের একজনের মাথায় আঘাত লেগেছে। বাবা দেরি না করে কী একটা ওষুধ মেখে লােকটির মাথা গামছা দিয়ে বেঁধে দিলেন। তাকে ধরে একটি নিরাপদ জায়গায় বসালেন। শুনলাম একটা প্রকাণ্ড শিমুল গাছ উপড়ে গিয়ে তাদের ঘরের উপর পড়েছে। তারাই বললাে, আমাদের গােয়ালঘরের চাল নাকি উড়ে গিয়েছে। গরুগুলাের কথা ভেবে আমাদের সবার মন খারাপ হয়ে গেল।
এক সময়ে বাতাসের বেগ খানিকটা কমে আসে। তখনও থেকে থেকে ভয়ানক শব্দে বাজ পড়ছে। বাবা-মা আমাকে শুকনাে কাপড় বের করে দিলেন। প্রতিবেশীদের জন্যও কাপড়, কিছু শুকনাে খাবার ও পানির ব্যবস্থা করে তাদেরকে মােটামুটি স্বাভাবিক করলেন। বাবা আহত লােকটিকে বারবার পর্যবেক্ষণ করছিলেন। সে আগের চেয়ে ভালাে বােধ করছে। আরাে কিছুক্ষণ পর ঝড় পুরােপুরি থেমে গেল। তবে সমস্ত রাতই আমরা বসে কাটালাম। দিনের আলাে ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বাবা দরজা-জানালা খুলে দিলেন। আমি বাইরে বেরিয়ে যা দেখলাম, এক কথায় তা অবিশ্বাস্য।
বেশ কয়েকটি বড়াে গাছ উপড়ে পড়েছে। এখানে-সেখানে মৃত ও আহত পাখি পড়ে আছে। আমাদের ঘরের দুটি বারান্দার চাল উড়ে গেছে। অন্য একটি বাড়ির ঘরের চাল উড়ে এসে পড়েছে আমাদের উঠানে। গােয়ালঘরে ছুটে গিয়ে দেখি, এর চালা নেই - একটি প্রকাণ্ড বৃক্ষ আছড়ে পড়েছে সেখানে। আমাদের চারটি গরুর একটি বড়াে রকমের আঘাত পেয়েছে।
কয়েক বাড়ি পরে কান্নার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। গিয়ে দেখি, বেশ কয়েকজন মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। একজনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। রাস্তাঘাটের যে অবস্থা, তাতে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছানােই কঠিন ব্যাপার। বাবা এবং আরাে কয়েকজন যুবক মিলে একটি মাচা বানিয়ে লােকটিকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে ছুটলেন। আমি মাকে সাহায্য করতে গেলাম। মনে মনে বন্ধুদের কথা ভাবছি আর অজানা আশঙ্কায় শিউরে উঠছি। সেদিনের রাতে ঝড়ের যে দানবীয় তাণ্ডব দেখলাম, তা মনে পড়লে আজও শিউরে উঠি। ঝড় যেন তার প্রকাণ্ড গ্রাসে সবকিছু নিঃশেষ করতেই এসেছিল।
ঘর, আঙিনা, বনবাদাড়, নদীর বাঁধ, মেঠো ও পাকা পথ – সর্বত্রই ধ্বংসলীলার ক্ষত। ওই রাতের পরে গ্রামবাসীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দীর্ঘ সময় লেগেছিল। আর মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠতে সময় লেগেছিল আরাে বেশি।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ একটি ঝড়ের রাত রচনা | তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম একটি ঝড়ের রাত রচনা | তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা টি। যদি তোমাদের আজকের এই একটি ঝড়ের রাত রচনা | তোমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা রচনা টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।