১৫ টি গুরুত্বপূর্ণ বাংলা অনুচ্ছেদ রচনা
বন্ধুরা আজকে আমরা জানব অনুচ্ছেদ রচনা সম্পর্কে। আজকের টপিকে যেসব গুরুত্ব পূর্ণ অনুচ্ছেদ রচনা থাকবে তা হলো অনুচ্ছেদ রচনা ইন্টারনেট, অনুচ্ছেদ রচনা বিজয় দিবস, অনুচ্ছেদ রচনা শীতের সকাল, অনুচ্ছেদ রচনা কম্পিউটার এবং অনুচ্ছেদ রচনা বাংলা নববর্ষ।
গুরুত্বপূর্ণ বাংলা অনুচ্ছেদ রচনা |
আজকে আমরা যে অনুচ্ছেদ রচনা সম্পর্কে জানব তা হলো
- অনুচ্ছেদ রচনা ইন্টারনেট
- অনুচ্ছেদ রচনা বিজয় দিবস
- অনুচ্ছেদ রচনা শীতের সকাল
- অনুচ্ছেদ রচনা কম্পিউটার
- অনুচ্ছেদ রচনা বাংলা নববর্ষ
- অনুচ্ছেদ রচনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
- অনুচ্ছেদ রচনা বৈশাখী মেলা
- অনুচ্ছেদ রচনা করোনা ভাইরাস
- অনুচ্ছেদ রচনা স্কুল লাইব্রেরি
- অনুচ্ছেদ রচনা বই পড়া
- অনুচ্ছেদ পরিবেশ দূষণ
- অনুচ্ছেদ করোনা ভাইরাস
- অনুচ্ছেদ বইমেলা
- অনুচ্ছেদ কোভিড 19
- অনুচ্ছেদ স্বাধীনতা দিবস
অনুচ্ছেদ রচনা ইন্টারনেট
তথ্যপ্রযুক্তির এই উৎকর্ষের যুগে ইন্টারনেটই অন্যতম ভূমিকা রাখছে। ইন্টারনেট আধুনিক বিজ্ঞানের একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার। এটি মূলত একটি ইন্টারন্যাশনাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভিস। এর দ্বারা সারাবিশ্বের তথ্যভান্ডার একই সূত্রে গ্রথিত রয়েছে।
বর্তমানে সারাবিশ্ব যে একটিমাত্র গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে, তার মূলেই রয়েছে ইন্টারনেট। এর মাধ্যমে বিশ্বের একপ্রান্তের কম্পিউটার থেকে অন্যপ্রান্তের আরেকটি কম্পিউটারে ছবিসহ যাবতীয় তথ্য নিমিষে প্রেরণ কিংবা সংগ্রহ করা যায়।
সারা বিশ্বের লাখ লাখ বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি লােকের ব্যক্তিগত কম্পিউটারের সঙ্গে যােগাযােগ রক্ষা করে চলেছে এ ইন্টারনেট। ইন্টারনেট ব্যাবহারের জন্যে ইন্টারনেট সার্ভিস দেয় এমন কোনাে প্রতিষ্ঠান থেকে নির্দিষ্ট মাসিক ফি-এর বিনিময়ে অনলাইন বা অফলাইন (ই-মেইল) যেকোনােটির সংযােগ নিতে হয়।
ইন্টারনেটের নিউজগ্রুপ ব্যবহার করে বিশ্বের খবরাখবর জানা যায়। কোনাে বিষয়ে লেখতে কিংবা গবেষণা করতে প্রচুর বইয়ের প্রয়ােজন হয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসে আমেরিকার ইউনাইটেড স্টেটস অভ কংগ্রেস লাইব্রেরি কিংবা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দুষ্প্রাপ্য বই বা তথ্যাবলি জানা যায়। তাছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক প্রতিষ্ঠানের সাথে আরেক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা-চিকিৎসা, ভ্রমণ, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডসহ সকল প্রকার লেনদেন সম্পাদন করা যায়।
ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে বসেই উন্নত চিকিৎসা লাভ করা যায়। ইন্টারনেটের বদৌলতে বর্তমানে অনলাইন ব্যাংকিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। অনলাইন ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে গ্যাস, বিদ্যুৎ পানিসহ সকল প্রকার বিল পরিশােধ করা যায়।
এখানেই শেষ নয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের খেলা, গান শােনা, সিনেমা দেখা, রান্না শেখা, ফ্যাশন সম্পর্কে জানা এমনকি বিয়ের পাত্র-পাত্রীও ঠিক করা যায়। এভাবে ইন্টারনেট বিভিন্ন কাজের এক সহজ মাধ্যম হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশেও দিনদিন এর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। এমতাবস্থায় আমাদের সকলের উচিত ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে আমাদের জীবনযাত্রার মানকে উন্নততর করে তােলা
অনুচ্ছেদ রচনা বিজয় দিবস
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রাম শেষে এদিন আমাদের দেশ শত্রুমুক্ত হয়। পৃথিবীর মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তাই ১৬ই ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭০-এর সাধারণ নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর আমরা এই ১৬ই ডিসেম্বরে বিজয় লাভ করি। তাই বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মহাসমারোহে এদিনটি উদ্যাপন করে। এদিন বিভিন্ন অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ পতাকা উত্তোলন করেন এবং কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন।
সরকারি-বেসরকারি ভবন ও দেশের প্রধান প্রধান সড়ককে জাতীয় পতাকায় সুশোভিত হয়। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষা আর রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আমাদের স্বাধীনতা। স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছে কত ছাত্র, জনতা, কৃষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী মানুষ। বিজয়ের আনন্দের মাঝে তাই জেগে ওঠে তাদের হারানোর বেদনা। মহান বিজয় দিবস শুধু জাতীয় মর্যাদায় অভিষিক্ত একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন নয়, এটি বাঙালির হৃদয় এবং সত্তার গভীরে প্রোথিত একটি অনন্য দিন।
বিজয় দিবস স্বাধীনতাকামী বাঙালির পবিত্র চেতনার ধারক। বাঙালির হাজার বছরের সভ্যতা এবং সংস্কৃতির ইতিহাসে দ্যুতিময় এ মহান বিজয় দিবস চিরদিন সমুজ্জ্বলভাবে টিকে থাকবে। প্রতিবছর এ দিবসে আমরা আত্মসচেতন হই, প্রত্যয়ে দৃপ্ত হই, অন্তরে বিশ্বাস স্থাপন করি-রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এ স্বাধীনতাকে আমরা যেকোনো মূল্যে সমুন্নত রাখব।
অনুচ্ছেদ রচনা শীতের সকাল
আমাদের দেশে ছয়টি ঋতু বিরাজমান। তন্মধ্যে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল শীতকাল। ঋতুচক্রের আবর্তে বাংলাদেশে শীত আসে। হেমন্তের ফসল ভরা মাঠ যখন শূন্য ও রিক্ত হয়ে পড়ে, তখনই বােঝা যায়, ঘন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে শীত আসছে।উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভর করে হাড়ে কাপন লাগিয়ে সে আসে তার নিজস্ব রূপ নিয়ে। প্রকৃতি তখন তার সমস্ত আবরণ খুলে ধারণ করে দীনহীন বেশ। প্রকৃতিতে সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন সৌন্দর্য। এ সৌন্দর্য পূর্ণতা পায় শীত সকালে। শীতের সকালে সর্বত্র ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে।
সর্বত্র বিরাজ করে কনকনে ঠাণ্ডা। মাঝে মাঝে ফুয়াশা এতই ঘন থাকে যে, সূর্যরশ্মিও একে ভেদ করতে পারে না। সবকিছু ঝাপসা দেখায়। দূরের জিনিস কদাচিৎ দেখা যায়। সূর্ণ বিলম্বে উঠে বলে মনে হয়। শিশু এবং বৃদ্ধরা সকালে হাড় কাঁপানাে শীতকে ভয় পায়। খুব সকালের ঠাণ্ডা এড়াতে তারা কিছুটা দেরিতে ঘুম থেকে উঠে। সকালে সূর্য যখন উকি দেয় গাছ ও ঘাসের উপর তখন রাতের ঝরা শিশির সােনার মতাে জ্বলল করতে থাকে।
শীতের সকালের এক অসাধারণ আকর্ষণ সরষে ফুলের হলুদ মাঠ। সকালের সূর্যালােক যেন তার নিপুণ হাতে প্রতিটি সরষে গাছকে নবরূপে ঢেলে সাজায়। পশু-পাখি সূর্যের আলাে দেখে আনন্দিত হয়। কৃষকরা গরু ও লাঙল নিয়ে মাঠে যায়। তাদের হাতে শােভা পায় তুঙ্কা। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সূর্যের মুখ দেখার জন্য বারবার জানালার ফাঁকে উঁকি মারে। কোথাও বা ছেলেমেয়েরা খড় সংগ্রহ করে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করে, আর হাসি-তামাশায় মেতে উঠে। বৃদ্ধ লােকেরা রোদ পােহায়।
কিছু লােক খেজুরের রস বিক্রি করতে বের হয়। অনেকেই ঘরে তৈরি পিঠা ও খেজুরের রস খেতে পছন্দ করে। বেলা বেশি হওয়ার সাথে সাথে শীতের সকালের দৃশ্য ধীরে ধীরে মিলিয়ে যায়। বেলা বেড়ে চলে, কুয়াশা দূরীভূত হয় এবং লােকেরা তাদের নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
অনুচ্ছেদ রচনা কম্পিউটার
কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি সাম্প্রতিক আবিষ্কার। কম্পিউটার অর্থ গণনাকারী যন্ত্র ।কম্পিউটার এমন একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্রকে বুঝায় যেটা খুব দ্রুত গাণিতিক গণনা করতে পারে এবং প্রচুর তথ্য বিন্যাস করতে পারে। কম্পিউটার আমাদেরকে নানাভাবে উপকার করছে। কম্পিউটার আমাদের জীবনে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
বর্তমান বিশ্ব তথ্য প্রযুক্তির বিশ্ব, বর্তমান বিশ্ব কমিপউটারের বিশ্ব। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। কম্পিউটার অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এবং নিখুঁতভাবে গণনার কাজ করতে পারে। পৃথিবীর সকল দেশের অফিস আদালত ও কলকারখানায় কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমান বিশ্বের অতি পরিচিত শব্দ হচ্ছে ই-গভর্নেন্স বা ডিজিটাল প্রশাসন।
ই-গভর্নেন্স সমপূর্ণরূপে কম্পিউটার এর উপর নির্ভরশীল। সরকারি বেসরকারি অফিসে চিরাচরিত ফাইল সংরক্ষণের পরিবর্তে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। আধুনিক তথ্য যােগাযােগ প্রযুক্তি তথা ইন্টারনেট, ফ্যাক্স, ই-মেইল সবই কম্পিউটার ভিত্তিক। কম্পিউটার ব্যাংকিংও অর্থনৈতিক কার্যাবলিতে পরিবর্তন এনেছে। এখন বিশ্বব্যাপী অর্থ বিনিময় ও ব্যবসায়িক কার্যাবলি কম্পিউটারের মাউসের একটি ক্লিক করার ব্যাপার মাত্র।
এখন ক্রেতা বিক্রেতারা কম্পিউটারের ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্রব্যসামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। সুতরাং, কম্পিউটার আজকের বিশ্বে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। রােগ নির্ণয় করতে, আবহাওয়ার সংবাদ প্রেরণ করতে এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশেও কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। কম্পিউটারের ব্যবহার মানব সভ্যতাকে এগিয়ে এনেছে, আমাদের কাজকর্মকে আরাে গতিশীল ও নিখুঁত করেছে।
অনুচ্ছেদ রচনা বাংলা নববর্ষ
পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উৎসব পালিত হয় কারণ পহেলা বৈশাখ বাংলা বৎসরের প্রথম দিন। দিনটি চিরাচরিত ঐতিহ্যের সাথে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হয়। বাংলা নববর্ষ পৃথিবীর সকল বাঙ্গালি তথা আমাদের ঐতিহা ও সংস্কৃতির অংশ। তাই আমাদের দেশে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়। সকলেই আশা করে যে বাংলা নববর্ষ প্রতিটি মানুষের জীবনে সুখ ও শান্তি বয়ে আনবে।
রমনা পার্কের বটমূলে ভােরে দিবসটির শুভ সূচনা হয়। রমনা বটমূলের অনুষ্ঠানসমূহ নববর্ষের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। রমনা বটমূলে হাজার হাজার নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী চিরাচরিত বাঙ্গালির পােষাক পায়জামা-পাঞ্জাবী ও মেয়েরা লাল পাড়ের সাদা শাড়ি। ও ব্লাউজ পড়ে এ অনুষ্ঠানে যােগ দেয়। ১লা বৈশাখ নববর্ষে গ্রামবাংলার বিভিন্ন জায়গায় বৈশাখী মেলার আয়ােজন করা হয়। ব্যবসায়ী ও দোকানদারগণ দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘হালখাতা খুলে এবং তাদের বন্ধু-বান্ধব ও মকেলদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করান।
শহরের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটিকে বরণ করার জন্য নানা ধরনের অনুষ্ঠানমালার আয়ােজন করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার (ইফা) ছাত্র ও শিক্ষকগণ সকাল ৯.০০ প্রতিষ্ঠান চত্বর থেকে এক মনােজ্ঞ শােভাযাত্রা বের করে । দেশের সংবাদপত্র বিশেষ কোড়পত্র বের করে এবং বাংলাদেশ বেতার ও বিভিন্ন টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। এ দিবসে মানুষ। পরস্পরকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানায় ও নতুন বৎসরে তাদের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে।
অনুচ্ছেদ রচনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জাতীয় জীবনের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। বাঙালি অর্থাৎ বাংলাদেশ জাতীয় জীবনের সকল চেতনা উৎস হচ্ছে একুশে ফেব্রুয়ারি। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠান জন্য এই দিনটি বাঙালিদের কাছে অত্যন্ত ঐতিহাসিক একটি দিন। বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলা মায়ের সন্তানদের বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। তারপর থেকেই এই দিনটিকে বাঙালিরা শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এই দিনটি এখন আর শুধু শহীদ দিবস নয়; শুধু বাঙ্গালীদের জাতীয় দিবস নয়, এটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি সারা বিশ্বে পালিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। এই দিবসটির একটি ঐতিহাসিক পটভূমি রয়েছে। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দু ভাষাকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেন। ফলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে শুরু হয় তীব্র গণআন্দোলন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা নিয়ে ছাত্রসমাজ ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে সরকারের নির্দেশে পুলিশ মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়। নিহত হয় সালাম বরকত রফিক জব্বার সহ নাম না জানা আরো অনেকেই। ফলে আন্দোলন আরো তীব্রতর হয় । অতঃপর ক্রমাগত আন্দোলনের ফলে পাকিস্তান সরকার বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৫৬ পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। মাতৃভাষার জন্য বাংলা মায়ের সন্তান আত্মত্যাগ পৃথিবীর মানুষের কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আর তাইতো ১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বর জাতিসংঘ এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিবসে প্রত্যেক ভাষার মানুষ নিজের মাতৃভাষাকে যেমন ভালবাসবে তেমনি অন্য জাতির মাতৃভাষাকে ও মর্যাদা দেবে। এভাবে ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদেরকে মাতৃভাষাকে ভালোবাসার প্রেরণা জোগায়।
অনুচ্ছেদ রচনা বৈশাখী মেলা
বৈশাখী মেলা নববর্ষের সর্বজনীন অনুষ্ঠানগুলাের অন্যতম। নববর্ষের প্রথম দিন অর্থাৎ, পহেলা বৈশাখ থেকে বাংলাদেশে ছােট-বড় অনেক মেলা শুরু হয়। স্থানীয় লােকেরাই এসব মেলার আয়ােজন করে থাকে। মেলার স্থায়িত্বকাল সাধারণত এক থেকে সাত দিন। তবে কোথাও কোথাও এ মেলা সারা বৈশাখ মাস ধরে চলে। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর জেলার নেকমর্দানে পহেলা বৈশাখে যে মেলা বসে, তা হচ্ছে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় এবং জাঁকজমকপূর্ণ মেলা।
সাধারণত এ মেলা এক সপ্তাহ স্থায়ী হয়। উত্তরবঙ্গের এমন বস্তু নেই যা এ মেলায় পাওয়া যায় না। এ মেলাকে সর্বসাধারণের উপযােগী করে গড়ে তােলা হয়। নাচ, গান, নাগরদোলা প্রভৃতি মেলার হাজার বছরের ঐতিহ্য বলে বিবেচিত। মেলার দিনগুলােতে ছেলে-বুড়াে সবার মাঝেই বিরাজ করে সাজ সাজ রব। বাংলাদেশের মেলাগুলােতে খুঁজে পাওয়া যায় এদেশের হারিয়ে যাওয়া বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রী, যা বাঙালির ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক বলে বিবেচিত। বৈশাখী মেলা বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যের মিলনমেলা। এ মেলা সকলের প্রাণে এনে দেয় খুশির বন্যা, ধুয়ে মুছে দেয় সারা বছরের কর্মক্লান্তি ও মানসিক অশান্তি। আরা নতুন করে বাঙালি ঐতিহ্য লালন করে বাঁচার অনুপ্রেরণা লাভ করি।
অনুচ্ছেদ রচনা করোনা ভাইরাস বা কোভিড 19
করােনাভাইরাস বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলােচিত বিষয়। প্রকৃতপক্ষে করােনাভাইরাস হচ্ছে ভাইরাসের একটি বড় পরিবার। এসব ভাইরাসের দ্বারা বিভিন্ন রােগের সৃষ্টি হয়। এগুলাের মধ্যে কোভিড-১৯ সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। এই রােগটি খুবই সংক্রামক। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে এটি প্রথম শনাক্ত হয়। ধীরে ধীরে এটি বিশ্বের প্রায় সকল দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ লােক সংক্রমিত হচ্ছে এবং অনেকেই মৃত্যুবরণ করছে। বাংলাদেশও এ রােগে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। এ রােগের কিছু সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে জ্বর, কাশি, মাংসপেশির ব্যথা, ক্লান্তি এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা। করােনা ভাইরাস চোখ, মুখ ও নাক দিয়ে সহজেই মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। আক্রান্ত কোনাে ব্যক্তি যখন হাঁচি-কাশি দেয় বা নিঃশ্বাস ফেলে, তখন ভাইরাসটি ছড়ায়। কোনো সুস্থ মানুষ যদি ভাইরাসটির সংস্পর্শে আসে, তাহলে সে সংক্রমিত হয়। প্রতিরােধই এক্ষেত্রে সর্বোত্তম পন্থা। কোনাে মানুষ সংক্রমিত হলে তাকে অবশ্যই আলাদা রাখতে হবে। তাকে সকল ধরনের স্বাস্থ্যগত ও মানসিক সমর্থন দিতে হবে।
তাকে নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। আমরা যদি এই রােগ থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে চাই, তাহলে আমাদেরকে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। আমাদেরকে সাবান দিয়ে বার বার হাত ধৌত করতে হবে। আমাদেরকে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও (হাতের জীবানুনাশক) ব্যবহার করতে হবে। আমরা যদি কোনাে জনাকীর্ণ স্থানে যাই তবে আমাদেরকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আমাদেরকে অব্যশই অন্যদের সাথে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আমাদেরকে আমাদের টি সেলগুলাে সক্রিয় করা এবং ভিটামিন ডি এর জন্য কিছু সময় সূর্যের আলােতে থাকতে হবে। আমাদেরকে অবশ্যই এসব প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কেবল তাহলেই আমরা এই ভয়ঙ্কর ভাইরাস থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে সক্ষম হবাে।
অনুচ্ছেদ রচনা স্কুল লাইব্রেরি
স্কুল লাইব্রেরি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্কুল লাইব্রেরি হলো জ্ঞানের ভাণ্ডার। আমাদের স্কুলেও একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি আছে। এটি উপর তলার দক্ষিণ কোণে অবস্থিত। আমাদের স্কুল লাইব্রেরিটি সুসজ্জিত। আমাদের স্কুল লাইব্রেরিটির দুইটি অংশ আছে। একটি অংশে ছাত্রছাত্রীদের পড়ার জন্য একটি পাঠ কক্ষ আছে এবং ছাত্রদের মাঝে বই ইস্যু করার জন্য কাউন্টার আছে। অন্য অংশে আলমারী এবং বইয়ের তাকে বই সাজিয়ে রাখা হয়। পাঠ কক্ষে চেয়ার এবং টেবিল আছে। আমাদের স্কুল লাইব্রেরিতে বিভিন্ন ধরনের বই আছে।
মােট বইয়ের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার এগুলাের মধ্যে পাঠ্য পুস্তক, উপন্যাস, গল্প, নাটক, কবিতা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। তাছাড়া আমাদের স্কুল লাইব্রেরিতে দৈনিক পত্রিকা ও ম্যাগাজিন রাখা হয়। ছাত্রদের মাঝে বই ইস্যু করার জন্য একজন লাইব্রেরিয়ান আছে। বই ধার নেওয়া ও জমা দেয়ার জন্য প্রত্যেক ছাত্রের একটি লাইব্রেরি কার্ড আছে। আমাদের স্কুল লাইব্রেরিটি আমাদের নিকট খুবই প্রয়ােজনীয়। আমরা গ্রন্থাগারের বিভিন্ন বইয়ের সাহায্য নিয়ে নােট তৈরি করতে পারি। তাছাড়া স্কুলের টিফিল পিরিয়ডে বা অবসর সময়ে আমরা স্কুল লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ে সময়ের সদ্বব্যবহার করতে পারি। এ কারণে আমাদের স্কুল লাইব্রেরি আমাদের নিকট একটি আকর্ষণীয় স্থান।
অনুচ্ছেদ রচনা বই পড়া
বই হলো জ্ঞানের আধার। জ্ঞান অর্জনের জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বই পড়া সর্বাপেক্ষা উত্তম কাজ। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের জ্ঞান বই পড়ার মাধ্যমেই আমরা পেয়ে থাকি। মানুষের মেধা ও মননের বিকাশ সাধনের অন্যতম মাধ্যম হলো বই। সকল কালের এবং সকল দেশের ঘটনা লিপিবদ্ধ রয়েছে বইয়ের প্রতিটি পাতায়। মানুষের জীবন নিরবচ্ছিন্ন সুখের আধার নয়। প্রতি মুহূর্তে জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ায় নানা চিন্তায় মগ্ন থাকতে হয় মানুষকে। নির্মল আনন্দের উৎস খুঁজে পাওয়া বিরল। বই পড়ার মাধ্যমে আমরা সে নির্মল আনন্দের উৎসকে সহজেই খুঁজে পেতে পারি। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের বই পড়েই পাওয়া যায়।
বই মানুষের সবচেয়ে উত্তম সঙ্গী। তবে বইয়ের পাতায় বিবৃত ইতিবাচক জ্ঞান তখনই মানুষ অর্জন করতে পারবে যখন সে একটি ভালো বই বেছে নেবে। বইয়ের নানা ধরন রয়েছে। বিশুদ্ধ জ্ঞান তখনই অর্জন করা যায় যখন সঠিক ও ভালো বইকে আমরা সঙ্গী হিসেবে বেছে নিই। বই আমাদেরকে নিঃস্বার্থভাবে উপকার করে। একটি বই কাল থেকে কালান্তরে জ্ঞান বিলিয়ে থাকে। মানুষকে স্বশিক্ষিত ও সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলে। বই পড়ার মাধ্যমে নির্মল জ্ঞানের সন্ধান করাই জ্ঞানী ব্যক্তির কাজ। তাই সঠিক জ্ঞান ও জীবনপথের সন্ধান পেতে হলে উত্তম বই পড়া আবশ্যক।
অনুচ্ছেদ স্বাধীনতা দিবস
২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ সালে এই দিনের সূচনায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার অব্যবহিত পূর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘােষণা করেন। বঙ্গবন্ধু তার এই ঘােষণায় হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে দেশকে মুক্ত করার আহ্বান জানান। শুরু হয় সর্বাত্মক মুক্তিযুদ্ধ। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করলেও ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে সামরিক সরকার ষড়যন্ত্র শুরু করে। ওই সামরিক সরকার নিয়ন্ত্রিত হতাে পশ্চিম পাকিস্তানিদের দ্বারা এবং পশ্চিম পাকিস্তানিদের স্বার্থে। পূর্ব বাংলার বাঙালিদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন এবং আলােচনার মধ্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের সব প্রকার চেষ্টা করেছেন।
কিন্তু পঁচিশে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের উপর গণহত্যা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘােষণা করেন। বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হলেও তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী বীর মুক্তিযােদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশকে শত্রুমুক্ত করেছিলেন। ১৯৪৭ সাল থেকে চব্বিশ বছর ধরে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক শ্রেণি পূর্ব বাংলার উপরে যে নিপীড়ন ও শােষণ চালিয়েছে, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে তার অবসান ঘটে। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়, তাই এই দিন হলাে বাংলাদেশের বিজয় দিবস। অন্যদিকে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকেই এ দেশের মানুষ স্বাধীন, কেননা ঐ তারিখেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘােষণা করেছিলেন।
অনুচ্ছেদ রচনা || অনুচ্ছেদ রচনা ইন্টারনেট || অনুচ্ছেদ রচনা বিজয় দিবস || অনুচ্ছেদ রচনা শীতের সকাল || অনুচ্ছেদ রচনা কম্পিউটার || অনুচ্ছেদ রচনা বাংলা নববর্ষ || অনুচ্ছেদ রচনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস || অনুচ্ছেদ রচনা বৈশাখী মেলা